শিবসেনা হিন্দুত্বের লাইনেই

সংগৃহীত
সংগৃহীত

মার্চে ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও শিবসেনাপ্রধান উদ্ধব ঠাকরে সরকারের ১০০ দিন পূর্ণ হবে। এটি সামনে রেখে উদ্ধব ঠাকরে আগামী ৭ মার্চ অযোধ্যা যাচ্ছেন। সঙ্গে শিব সৈনিকদের বিরাট বাহিনী যাবে।

শিবসেনার মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত বলেন, ৭ মার্চ দুপুরে অযোধ্যায় রামলালা দর্শন করবেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। এরপর তিনি অযোধ্যার সরযূ নদীর তীরে এক প্রার্থনায় অংশ নেবেন। সেখানে বিপুল শিব সৈনিক থাকবে।

গত বছরের নভেম্বরে মহারাষ্ট্রে জোট সরকার গঠিত হয়। এরপর এই প্রথম উদ্ধব ঠাকরে অযোধ্যায় যাচ্ছেন। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, শিবসেনার লক্ষ্য অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণ। সেই লক্ষ্য নিয়ে এবার শিবসেনা মাঠে নেমেছে।

মহারাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন শিবসেনা বরাবর হিন্দুত্বের আদর্শ ধরে রেখেছে। ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মতো তারাও অযোধ্যায় রামমন্দির হোক, সেটি চেয়েছিল। এ নিয়ে বিজেপির সঙ্গে শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা বাল ঠাকরে একাত্ম ছিলেন। বাল ঠাকরের ছেলে উদ্ধব ঠাকরে সেই ধারাই বজায় রেখেছেন।

গত বছরের অক্টোবর মাসে মহারাষ্ট্র বিধানসভার ২৮৮ আসনের নির্বাচনে ফলাফল উল্টে যায়। শাসক দল বিজেপি মহারাষ্ট্রে ক্ষমতা হারায়। সরকার গড়ার মতো রাজ্যের চারটি বড় দল এককভাবে আসন পেতে ব্যর্থ হয়। বিজেপির ঝুলিতে যায় ১০৫টি, কংগ্রেসের ঝুলিতে ৪৪, শিবসেনার ৫৬টি এবং জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি বা এনসিপির ঝুলিতে যায় ৫৪টি আসন। তবে এই নির্বাচনে বাম দল সিপিএম ও আরএসপি একটি করে আসনে জয়ী হয়।

কোনো দল সরকার গড়ার মতো আসন না পাওয়ায় শিবসেনা নিজেদের বন্ধু বিজেপিকে ছেড়ে এগিয়ে আসে সরকার গড়ার জন্য। শিবসেনা হাত বাড়ায় কংগ্রেস ও এনসিপির দিকে। কংগ্রেস ও এনসিপি কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে এবং বিজেপিকে শিক্ষা দিতে শিবসেনাকে সামনে রেখে সরকার গড়ে।

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হন শিবসেনাপ্রধান উদ্ধব ঠাকরে। গত বছরের ১২ নভেম্বর তিনি সরকার গড়েন। ৩৩ জন পূর্ণমন্ত্রী শপথ নেন। তিন দলের বিধায়কদের মধ্য থেকে ১০ জন প্রতিমন্ত্রী শপথ নেন।

শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেসের জোট সরকারের মধ্যে গোলমাল শুরু হয়। শিবসেনার সঙ্গে কংগ্রেস ও এনসিপি নেতৃত্বের মতদ্বৈধতা দেখা দেয়। বিষয়টি বুঝে বিজেপিও হাত বাড়ায় শিবসেনার দিকে। কোনো রকমে সরকার ভেঙে গেলে শিবসেনা বিজেপিকে নিয়েই ফের সরকার গড়তে সক্ষম হবে।

কংগ্রেস আর এনসিপি ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শে বিশ্বাসী। আর শিবসেনা হিন্দুত্বের আদর্শে। এসব কারণেই এখন শিবসেনা বিজেপির দিকেই এগোচ্ছে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। যদিও কংগ্রেস ও এনসিপির লক্ষ্য ছিল বিজেপির হাত থেকে শিবসেনাকে মুক্ত করে তাদের অন্তত ধর্মনিরপেক্ষতার পাঠ দেওয়া; কিন্তু কাজ হয়নি। শিবসেনা শিবসেনায়ই রয়ে গেছে।

অযোধ্যার জমি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের মামলার রায়ের পর এখন সেখানে মন্দির তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রামমন্দির ট্রাস্টের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন নির্মোহী আখড়ার মোহন্ত নিত্যগোপাল দাস। ট্রাস্টের মন্দির নির্মাণ কমিটির প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন আইএএস অফিসার নৃপেন্দ্র মিশ্র। জানা গেছে, আগামী এপ্রিল মাসে রামনবমী বা অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে এই রামমন্দিরের শিলান্যাস হতে পারে।