ওবামার সঙ্গে পার্থক্য কোথায় দেখালেন ট্রাম্প

প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথমবার ভারত সফরে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিপুল সংবর্ধনাও দেওয়া হয়েছে তাঁকে। এর আগে ট্রাম্প ও মেলানিয়াকে নিয়ে মহাত্মা গান্ধীর আশ্রমে গিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে ট্রাম্পের একটি কাজ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বেশ। গান্ধীর আশ্রমে গিয়ে পরিদর্শক বইয়ে গান্ধীকে নিয়ে একটি অক্ষরও লেখেননি ট্রাম্প!

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সফরের প্রথম দিনেই ফার্স্ট লেডি মেলানিয়াকে নিয়ে আহমেদাবাদের শবরমতী আশ্রমে যান ট্রাম্প। এটি মহাত্মা গান্ধীর আশ্রম। আশ্রমে আসা গুরুত্বপূর্ণ অতিথিরা সংরক্ষিত পরিদর্শক বইয়ে নিজেদের বার্তা লিখে যান। রীতি মেনে সেই বার্তা লিখেছেন ট্রাম্পও। কিন্তু সেই বার্তায় গান্ধীকে নিয়ে একটি কথাও লিখেননি তিনি! এমনকি গান্ধীর নামটিও একবারের জন্য লেখেননি।

গান্ধীর আশ্রমে গিয়ে বরং মোদিকে নিয়ে প্রশংসাবার্তা লিখে এসেছেন ট্রাম্প। মোদিকে ‘দারুণ বন্ধু’ উল্লেখ করে নোটবুকে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘দারুণ এই সফরের জন্য আমার দারুণ বন্ধু প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ধন্যবাদ।’ বার্তার নিচে রয়েছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্বাক্ষর।

ট্রাম্পের এই বার্তা বেশি আলোচিত হচ্ছে, কারণ তাঁর পূর্বসূরি বারাক ওবামার সঙ্গে তাঁর লেখা বার্তার আকাশ-পাতাল পার্থক্য। ২০১০ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট থাকার সময় ভারত সফরে এসেছিলেন ওবামা। তিনিও শবরমতী আশ্রমে এসেছিলেন। তখন ওবামা পরিদর্শক বইয়ে যে বার্তা লিখে গিয়েছিলেন, সেটি দারুণ প্রশংসিত হয়েছিল। গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে ওবামা লিখেছিলেন, ‘গান্ধীর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ এই অংশ দেখতে পেয়ে আমি গর্বিত বোধ করছি। তিনি শুধু ভারতের নায়কই নন, বরং পুরো বিশ্বেরই নায়ক।’

দুই প্রেসিডেন্টের বার্তার এমন তারতম্য দেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব হয়েছেন অনেকে। কংগ্রেস নেতা, বর্তমান সাংসদ ও সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী মনিষ শর্মা ওবামার বার্তার ছবি পোস্ট করে টুইটারে লিখেছেন, ‘শবরমতীতে এসে শ্রদ্ধেয় মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে বারাক ওবামা কী লিখেছিলেন দেখুন। দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে পার্থক্যটা এর চেয়ে স্পষ্টভাবে বোঝা সম্ভব না।’

আশ্রমের যে ঘরটিতে গান্ধী ১৩ বছর ছিলেন, সেই ‘হৃদয় কুঞ্জে’ প্রায় ১৫ মিনিটের মতো সময় কাটিয়েছেন ট্রাম্প দম্পতি এবং তাঁর মেয়ে ইভাংকা ও জামাতা কুশনার। এ সময় তাঁদের গুজরাটের বিখ্যাত খাবার খামান (ডাল দিয়ে তৈরি এক ধরনের পদ), ব্রকলি, ভুট্টার সমুচা, আপেলের কেক এবং কাজু কাটলি দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।