ইতালি থেকে ইউরোপের অন্য দেশে ছড়াচ্ছে করোনাভাইরাস

ইতালিতে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর তা দেখা দিয়েছে ইউরোপের আরেক দেশ অস্ট্রিয়ায়। ছবি: এএফপি
ইতালিতে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর তা দেখা দিয়েছে ইউরোপের আরেক দেশ অস্ট্রিয়ায়। ছবি: এএফপি

ইতালি থেকে ইউরোপের অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস। ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত ব্যক্তিদের শনাক্ত করেছে। ওই ব্যক্তিদের ইতালির সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিল। তবে করোনাভাইরাসের কারণে চীনের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলোর সীমান্ত বন্ধ করাসহ অন্য দেশগুলোর ভ্রমণনিষেধাজ্ঞা জারির মতো ঘটনা ইতালির ক্ষেত্রে ঘটছে না। প্রতিবেশী দেশগুলো ইতালির সঙ্গে স্বাভাবিক অবস্থা বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আজ বুধবার বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, ইউরোপের দেশ অস্ট্রিয়া, ক্রোয়েশিয়া ও সুইজারল্যান্ডে প্রথম কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া আফ্রিকার দেশ আলজেরিয়া এবং লাতিন আমেরিকায় একজন ব্রাজিলিয়ানের করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। তাঁদের সবার ইতালির সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিল। ব্রাজিলের ওই বাসিন্দা ইতালি থেকে ফেরার পরপরই আক্রান্ত হন।

ইতালি এখন করোনাভাইরাসে ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে দুরবস্থায় রয়েছে। সেখানে ৩০০–এর বেশি মানুষ কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছেন ১১ জন।

প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো ইতালির সঙ্গে সীমান্ত বন্ধের সিদ্ধান্তকে ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ’ বলে মনে করছে।

ইউরোপজুড়ে এবং ইতালির কেন্দ্রীয় ও দক্ষিণাঞ্চলে ভাইরাসটি দেখা দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ফ্রান্স, জার্মানি ও ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) কমিশন গতকাল মঙ্গলবার এক বৈঠকে সীমান্ত খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্তো স্পেরানজা বলেছেন, ‘আমরা ভাইরাসটি নিয়ে কথা বলছি, যেটির সঙ্গে সীমান্তের কোনো সম্পর্ক নেই।’

জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেন্স স্প্যান বলেছেন, প্রতিবেশী দেশগুলো এই পরিস্থিতিকে খুবই গুরুতর বলছে। কিন্তু এটাও মানছে যে পরিস্থিতি ভালো হওয়ার আগে তা আরও খারাপ হতে পারে।

ইতালির উত্তরাঞ্চল থেকে ছুটি কাটিয়ে ফেরা যুক্তরাজ্যের স্কুলশিক্ষার্থীদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকার ভ্রমণকারীদের জন্য নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক বলেছেন, ইতালিতে ফ্লাইট বন্ধের কোনো পরিকল্পনা নেই তাঁদের। তিনি বলেন, ‘ইতালির দিকে তাকিয়ে দেখেন, তারা চীনের সঙ্গে সব ফ্লাইট বন্ধ করেছিল। তারা এখন ইউরোপের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত (কোভিড-১৯ আক্রান্ত) দেশ।’

আকাশপথে প্রতিবছর ৩০ লাখের মতো ব্রিটিশ ইতালি ঘুরতে যায়।

অস্ট্রিয়ার টিরোলের ইন্সব্রুক শহরে বসবাসকারী এক তরুণ ইতালীয় দম্পতির কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে।

সুইজারল্যান্ড জানিয়েছে, টিসিনোতে বসবাসকারী ৭০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি ১৫ ফেব্রুয়ারি ইতালির মিলান শহরে সংক্রমণের শিকার হন। তাঁকে এখন আলাদা করে রাখা হয়েছে।

ইতালি থেকে সদ্য ক্রোয়েশিয়া ফেরা এক ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছেন।

স্পেনের টেনেরিফেতে একটি হোটেলে একজন ইতালীয় চিকিৎসক ও তাঁর স্ত্রীর করোনাভাইরাস পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসার পর হোটেলের এক হাজারের বেশি অতিথিকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।

স্পেনের বার্সেলোনায় প্রথম কোভিড-১৯ রোগী একজন নারী। তিনি ইতালির উত্তরাঞ্চলে ছিলেন।

ফ্রান্স ও জার্মানিতে নতুন আক্রান্ত ব্যক্তিরা সম্প্রতি ইতালির উত্তরাঞ্চল থেকে ফেরেন।