দিল্লিতে মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই, অমিত শাহর পদত্যাগ দাবি সোনিয়ার

কংগ্রেসপ্রধান সোনিয়া গান্ধী। এএফপি ফাইল ছবি
কংগ্রেসপ্রধান সোনিয়া গান্ধী। এএফপি ফাইল ছবি

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে সংঘর্ষে উত্তাল ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। ইতিমধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় মৃত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে ২৩–এ পৌঁছেছে। দিল্লিতে চলমান এমন সহিংসতার জন্য দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেই দায়ী করেছেন কংগ্রেসপ্রধান সোনিয়া গান্ধী। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারায় অমিত শাহর পদত্যাগ দাবি করেছেন সোনিয়া।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিল্লিতে কংগ্রেসের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আজ বুধবার অমিত শাহর পদত্যাগ দাবি করেন সোনিয়া গান্ধী। কংগ্রেসপ্রধান বলেন, গত সপ্তাহ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কী করছেন? এই সপ্তাহেই বা কী করেছেন? পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে দেখেও কেন আগেই প্যারামিলিটারি মোতায়েন করেনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়? এমন পরিস্থিতির জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ গোটা কেন্দ্রীয় সরকার দায়ী। কংগ্রেস স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছে।

কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি অরবিন্দ কেজরিওয়ালের প্রশাসনকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন সোনিয়া গান্ধী। কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সভাপতি হিসেবে বক্তব্য দেওয়ার পর তিনি বলেন, দুই প্রশাসনই সময়মতো যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। সোনিয়া বলেন, রাজধানীতে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকার ও অরবিন্দ কেজরিওয়াল সমানভাবে দায়ী। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষদের পাশে দাঁড়াতে এবং মানুষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতেও কেজরিওয়ালের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কংগ্রেসপ্রধান।

সোনিয়া গান্ধীর এমন মন্তব্যের সমালোচনা করেছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি ব্যক্তিগত ক্ষোভের সঙ্গে তিনি দিল্লির সহিংসতার ঘটনাকে মিলিয়ে ফেলছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিজেপির জ্যেষ্ঠ নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভাদেকার। তিনি বলেছেন, কংগ্রেসের হাতে তো শিখদের রক্ত লেগে আছে। তাঁরা সহিংসতার বিষয়ে অভিযোগ করার কে? মূলত ১৯৮৪ সালে কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকার সময় শিখ-বিরোধী দাঙ্গার প্রসঙ্গ টেনে এ কথা বলেছেন প্রকাশ জাভাদেকার।

এদিকে রোববার শুরু হওয়া এই সহিংসতার পর প্রথমবারের মতো প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে মোদি বলেছেন, ‘শান্তি এবং সম্প্রীতিই আমাদের মূল বৈশিষ্ট্য। আমি দিল্লির সব ভাইবোনকে আহ্বান জানাচ্ছি, সবাই শান্তি ও ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখুন।’

গতকাল মঙ্গলবার থেকেই সিএএ নিয়ে সহিংস হয়ে ওঠে দিল্লির পরিস্থিতি। আহত হয়েছেন অন্তত ২০০ মানুষ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দিল্লিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছয় হাজারের বেশি সদস্য মোতায়েন আছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য মোতায়েন থাকায় সেনা নামানোর প্রয়োজন হবে না।