করোনাভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম মৃত্যু

ওয়াশিংটনের কির্কল্যান্ডের একটি হাসপাতাল থেকে একজন রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়ার জন্য স্ট্রেচার প্রস্তুত করছেন এক স্বাস্থ্যকর্মী। ছবি: এএফপি
ওয়াশিংটনের কির্কল্যান্ডের একটি হাসপাতাল থেকে একজন রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়ার জন্য স্ট্রেচার প্রস্তুত করছেন এক স্বাস্থ্যকর্মী। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তাদের প্রথম রোগীর মৃত্যু নিশ্চিত করেছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আক্রান্ত ব্যক্তি ৫০ বছর বয়সী এবং ওয়াশিংটনের বাসিন্দা ছিলেন। আর অস্ট্রেলিয়ায় মারা যাওয়া ব্যক্তি জাপানে কোয়ারেন্টাইন করে রাখা ডায়মন্ড প্রিন্সেস জাহাজের যাত্রী ছিলেন। তাঁর বয়স ছিল ৭৮ বছর। একজন যাত্রীর মাধ্যমে ওই জাহাজের যাত্রীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস।

আজ রোববার বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও এএফপির খবরে এ তথ্য জানানো হয়।

করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত মার্কিন ব্যক্তি সিয়াটলের কাছাকাছি কির্কল্যান্ডের এভারগ্রিনহেলথ হাসপাতালে মারা যান। ওয়াশিংটনের স্বাস্থ্য বিভাগের রোগ সংক্রামক ইউনিটের প্রধান জেফরে ডাচিন বলেছেন, ওই ব্যক্তি কীভাবে ভাইরাসটির সংস্পর্শে এসেছিলেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

কির্কল্যান্ডে আরও দুজন এই ভাইরাসে আক্রান্ত অনুমান করে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যসেবায় রাখায় হয়েছে। সেখানে আরও ৫০ জনের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ দেখা দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

যে দুজনকে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যসেবায় রাখা হয়েছে, তাঁদের একজন ৪০ বছর বয়সী স্বাস্থ্যকর্মী। তাঁর অবস্থা ভালোর দিকে। অন্যজন হলেন ৭০ বছর বয়সী এক নারী। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত প্রথম রোগীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের গভর্নর জে ইনস্লি। তিনি জানান, ওয়াশিংটনের বাসিন্দাদের সুস্থ ও নিরাপদ রাখতে তাঁদের প্রস্তুতি আরও জোরদার করা হচ্ছে।

প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্র্যাট স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি আগামী সপ্তাহে করোনাভাইরাসে ব্যয়সংক্রান্ত বিল উপস্থাপনের জন্য আইনপ্রণেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে ৬০ জনেরও বেশি ব্যক্তি কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত। এর মধ্যে বেশির ভাগ চীনফেরত। তবে ক্যালিফোর্নিয়া, ওয়াশিংটন ও ওরিগনে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চীনের সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে।

অস্ট্রেলিয়ায় মারা যাওয়া ব্যক্তিকে ডায়মন্ড প্রিন্সেস জাহাজ থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। তিনি আজ পার্থ হাসপাতালে মারা যান। তাঁর ৭৯ বছর বয়সী স্ত্রীও জাহাজে থাকার সময় আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁকে পার্থ হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ডায়মন্ড প্রিন্সেস জাহাজ থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা ১৬০ জন অস্ট্রেলীয় যাত্রীর মধ্যে ওই দম্পতি ছিলেন। দেশে ফেরার পথে ফ্লাইটে তাঁদের করোনাভাইরাস পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের আলাদা করে ফেলা হয় এবং ২১ ফেব্রুয়ারি পার্থ হাসপাতালে আলাদা ইউনিটে রাখা হয়। বাকি যাত্রীদের উত্তরাঞ্চলের শহর ডারউইনের খনিশ্রমিকদের সাবেক শিবিরে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অ্যান্ড্রু রবার্টসন বলেন, শুরুতে ওই দম্পতির অসুস্থতা খুব বেশি বলে মনে হয়নি। কিন্তু পরে স্বামীর অবস্থা খারাপ হতে থাকে।

আজ সকালে নিউ সাউথ ওয়েলস সেখানে ২৬ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে। ৪০ বছর বয়সী ইরানফেরত একজনের মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়ায় বলে জানানো হয়েছে। ওই ব্যক্তি দ্বিতীয় অস্ট্রেলীয়, যিনি ইরানে আক্রান্ত হয়েছেন। এ ছাড়া ওই বয়স্ক দম্পতিসহ অন্যরা চীনের হুবেই প্রদেশ থেকে আসা ব্যক্তির মাধ্যমে সংক্রমিত হন।