তালেবান বন্দীদের মুক্তির অঙ্গীকার করিনি: আফগান প্রেসিডেন্ট

আশরাফ ঘানি। ছবি: রয়টার্স
আশরাফ ঘানি। ছবি: রয়টার্স

আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি বলেছেন, তাঁর সরকার তালেবান বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে, এমন কোনো অঙ্গীকার করেনি। আফগানিস্তানে দীর্ঘ দেড় যুগের সহিংসতা বন্ধ করে দেশটিতে শান্তি ফিরিয়ে আনতে এক ঐতিহাসিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করে যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবান। এই চুক্তির বরাত দিয়ে বিবিসির খবরে বলা হয়, ১০ মার্চের মধ্যে এক হাজারের বেশি সরকারি বন্দীর বিনিময়ে পাঁচ হাজার তালেবান বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে আশরাফ ঘানি বলেন, ‘বন্দী মুক্তির বিষয়টি আলোচনার পূর্বশর্ত হতে পারে না। বরং আলোচনা শুরুর অংশ হতে পারে।’

প্রায় দুই বছর ধরে আলোচনার পর গতকাল শনিবার কাতারের রাজধানী দোহায় এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্যে আফগানিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তানসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন সদস্যদেশের প্রতিনিধিরা গতকাল সকালে দোহার পাঁচ তারকা হোটেল শেরাটনে জড়ো হতে শুরু করেন। তালেবানের ৩১ প্রতিনিধি ওই হোটেলে যান। সেখানেই চুক্তি স্বাক্ষর করেন যুক্তরাষ্ট্রের আফগানিস্তান পুনর্মিলনবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি জালমে খলিলজাদ ও তালেবানের সহপ্রতিষ্ঠাতা মোল্লা আবদুল গনি বারাদার। এদিকে চুক্তি স্বাক্ষরের আগেই আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে পৌঁছান মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার।

এই চুক্তির ২৪ ঘণ্টা না যেতেই কাবুলে আফগান প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুরোপুরি অস্ত্রবিরতির লক্ষ্য নিয়ে সহিংসতা হ্রাসের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। কিন্তু পাঁচ হাজার বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার কোনো কথা দেওয়া হয়নি। এটি আফগানিস্তানের জনগণের অধিকার ও নিজস্ব ব্যাপার। এটি আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ আলোচনার বিষয় হতে পারে। কিন্তু কোনো আলোচনার পূর্বশর্ত হতে পারে না।’

আশরাফ ঘানি বলেছেন, আফগান কর্তৃপক্ষের কোনো বন্দীকে মুক্তির দেওয়ার ক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্রের নেই।

এদিকে বিবিসি জানায়, এক হিসাবে দেখা গেছে, আফগানিস্তানে ১০ হাজার তালেবান বন্দী রয়েছে।

চুক্তি সইয়ের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আফগানিস্তানের সরকার এক যৌথ ঘোষণায় জানায়, তালেবান এ শান্তি চুক্তি মানলে আগামী ১৪ মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার করে নেবে যুক্তরাষ্ট্র। এর জবাবে জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবান আফগান সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসতে রাজি হয়। নিজেদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় আল-কায়েদা বা অন্য কোনো জঙ্গিগোষ্ঠীকে সক্রিয় হতে দেওয়া হবে না—চুক্তিতে এ ব্যাপারেও রাজি হয়েছে তালেবান।

২০০১ সালে টুইন টাওয়ারে আত্মঘাতী হামলার পর আফগানিস্তানে সেনা মোতায়েন করে যুক্তরাষ্ট্র। প্রায় ১৯ বছর ধরে আফগানিস্তানে চলমান সহিংসতায় প্রায় আড়াই হাজার মার্কিন সেনা নিহত হন। এখনো আফগানিস্তানে প্রায় ১২ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন আছে।