নারীর প্রতি বিশ্বের ৯০ শতাংশ নারী-পুরুষই নেতিবাচক

নারীর প্রতি বিশ্বের ৯০ শতাংশ নারী-পুরুষই নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে। ছবি: রয়টার্স
নারীর প্রতি বিশ্বের ৯০ শতাংশ নারী-পুরুষই নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে। ছবি: রয়টার্স

নারীর প্রতি বিশ্বের ৯০ শতাংশ নারী-পুরুষেরই নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে। অর্থাৎ, ১০০ জনের মধ্যে ৯০ জনই নারীর প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ‘জেন্ডার সোশ্যাল নর্ম’ সূচক প্রকাশ করে জাতিসংঘ। আর সেখানেই এ তথ্য উঠে আসে। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে দেখা যায়, বিশ্বব্যাপী ৫০ শতাংশ পুরুষ মনে করেন চাকরির ক্ষেত্রে নারীর চেয়ে তাঁদের অধিকার বেশি। জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ মনে করেন, পুরুষ যদি তাঁদের নারী সঙ্গীকে আঘাত করেন, তা গ্রহণযোগ্য। গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বের কোনো দেশেই লিঙ্গসমতা নেই।

পুরুষের প্রতি সবচেয়ে বেশি পক্ষপাতমূলক আচরণ জিম্বাবুয়ের মানুষের। এখানে মাত্র শূন্য দশমিক ২৭ শতাংশ মানুষ এই পক্ষপাত দেখান না। দেশটির ৯৬ শতাংশ মানুষ মনে করেন, নারীর প্রতি সহিংসতা গ্রহণযোগ্য এবং নারীর প্রজনন অধিকারকে সমর্থন করে না। ফিলিপাইনের ৯১ শতাংশ মানুষের এই মতামত। অন্যদিকে দক্ষিণ-পশ্চিম ইউরোপের একটি ক্ষুদ্র দেশ অ্যান্ডোরার ৭২ শতাংশ মানুষই এই পক্ষপাতমূলক মনোভাব প্রকাশ করেন না।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, পৃথিবীর অর্ধেক নারী-পুরুষ মনে করেন পুরুষেরাই রাজনৈতিক নেতৃত্ব গঠনে এগিয়ে। চীনে ৫৫ শতাংশ মানুষ মনে করেন পুরুষেরা রাজনৈতিক নেতা হওয়ার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। যুক্তরাষ্ট্রের ৩৯ শতাংশ মানুষ মনে করেন, পুরুষেরাই যোগ্য নেতৃত্ব দেন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত কোনো নারী প্রেসিডেন্ট হননি। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ড, বর্তমানে যাদের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী, মাত্র ২৭ শতাংশ মানুষ এমন মনোভাব পোষণ করেন।

জরিপে বলা হচ্ছে, বিশ্বের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারী-পুরুষ বৈষম্য বিদ্যমান। রাজনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য প্রভৃতি খাতে নারীর অংশগ্রহণ এখনো সুপ্রতিষ্ঠিত নয়। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, বিশ্বে সংসদীয় আসনে নারীদের অবস্থান মাত্র ২৪ শতাংশ এবং ১৯৩টি দেশের মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ সরকারপ্রধান নারী। শ্রমবাজারে নারীদের পারিশ্রমিক পুরুষদের চেয়ে অনেক কম। এ ক্ষেত্রে শীর্ষপদে নারীদের অবস্থান নেই বললেই চলে। প্রতিষ্ঠানের সিইওদের মধ্যে মাত্র ৬ শতাংশ নারী এবং পুরুষদের চেয়ে নারীর কর্মঘণ্টা বেশি।

বিশ্বব্যাপী, ৪০ শতাংশ মানুষ মনে করেন পুরুষেরা ভালো ব্যবসায়িক নির্বাহী হতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রে ২৫ শতাংশ মানুষ মনে করেন, নারীর চেয়ে পুরুষের চাকরি করার অধিকার বেশি এবং পুরুষেরা নারীর চেয়ে ভালো কর্মী হন। ভারতে এই হার ৬৯ শতাংশ।