সৌদিতে 'অভ্যুত্থান-পরিকল্পনার' অভিযোগে তিন প্রিন্সকে আটক

সৌদি আরবের ক্ষমতাধর যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। রয়টার্সের ফাইল ছবি
সৌদি আরবের ক্ষমতাধর যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। রয়টার্সের ফাইল ছবি

অভ্যুত্থান–পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমানের ভাই, ভাতিজাসহ তিন প্রিন্সকে আটক করার খবর প্রকাশ করেছে মার্কিন গণমাধ্যম। সৌদির অঘোষিত শাসক যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ক্ষমতার পথে বাধা বিবেচনায় তাঁদের আটক করা হয়েছে বলে খবরে দাবি করা হয়েছে। 


বার্তা সংস্থা এএফপির আজ শনিবারের খবরে বলা হয়েছে, দ্রুত ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সৌদি আরব সম্প্রতি নিজেদের নাগরিক ও বিদেশিদের জন্য এ বছর ওমরাহ হজ পালন বাতিল করে। এ নিয়ে আপত্তির গুঞ্জনের মধ্যেই তিন প্রিন্সকে আটকের খবর পাওয়া গেল।

বাদশাহ সালমানের ভাই প্রিন্স আহমেদ বিন আবদুল আজিজ আল-সৌদ ও ভাতিজা প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফকে রাজদ্রোহের অভিযোগে আজ সকালে তাঁদের নিজ নিজ বাড়ি থেকে নিয়ে গেছে রাজকীয় বাহিনীর সদস্যরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এ খবর জানিয়েছে। তাদের খবরে বলা হয়েছে, এই দুজনের বিরুদ্ধে বর্তমান বাদশাহ ও যুবরাজের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে রাজকীয় আদালতে। দুই প্রিন্সই সিংহাসনে বসার দৌড়ে বর্তমান যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে যাবজ্জীবন দণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।

নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, বাদশাহের ভাতিজা প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফের ছোট ভাই প্রিন্স নাওয়াফ বিন নায়েফকেও আটক করা হয়েছে।

তবে এ বিষয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের মন্তব্য করতে চায়নি।

২০১৮ সালের অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যার ঘটনায় আলোচনায় আসেন বর্তমান বাদশাহের ছেলে এই যুবরাজ। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে তাঁর বিচারের দাবি উঠলেও এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি। বরং বিভিন্ন সময়ে রাজতন্ত্রের বিরোধিতাকারী ধর্মীয় নেতা, অধিকারকর্মী ও ব্যবসায়ীদের ধরপাকড় করা হয়েছে।

বর্তমান বাদশাহর বয়স ৮৪ বছর। তিনি তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমানকে সব ধরনের সমর্থন করে যাচ্ছেন। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়, প্রতিরক্ষা থেকে অর্থনীতি—সব ক্ষেত্রে নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে চলেছেন যুবরাজ।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আরএএনডির নীতি বিশ্লেষক বেকা ওয়াসের বলেন, যুবরাজের কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করেন কিংবা তিনি নিজের জন্য হুমকি মনে করেন—এমন যেকাউকে দমন করতে চান। সেটা হোক রাজপরিবারে বা বাইরের কেউ। সীমা লঙ্ঘন না করার বার্তাটা তিনি স্পষ্টভাবে সবাইকে দিতে চান।

বাদশাহ সালমানের ভাই প্রিন্স আহমেদের বয়স এখন সত্তরের ঘরে। খাসোগি কেলেঙ্কারির পর তিনি লন্ডন থেকে দেশে ফেরেন। আর বাদশাহের ভাতিজা প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফ সাবেক যুবরাজ ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।