আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে জ্যোতিরাদিত্য, সরকার ফেলার খেলা শুরু

জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া।
জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া।

কংগ্রেস ছাড়ার পর প্রত্যাশামতো বিজেপিতে যোগ দিলেন মধ্যপ্রদেশের নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। আজ বুধবার দুপুরে বিজেপির সদর দপ্তরে রাষ্ট্রীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার উপস্থিতিতে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। আনুষ্ঠানিকতা শেষে তিনি বলেন, কংগ্রেস আর সেই কংগ্রেস নেই। যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়ে মধ্যপ্রদেশে তাঁরা ক্ষমতায় এসেছিলেন, এত দিন কেটে গেলেও তা পূরণ হয়নি।

জ্যোতিরাদিত্য বলেন, জনসেবার জন্য তিনি রাজনীতিতে এসেছিলেন। কংগ্রেসে থেকে জনতার সেই সেবা আজ আর করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ভোটের আগে কৃষিঋণ মওকুফের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কংগ্রেস। বলেছিল, ক্ষমতায় আসার ১০ দিনের মধ্যে ঋণ মওকুফ করা হবে। অথচ আজও হয়নি। তিনি বলেন, বিজেপিতে এসে নতুনভাবে সবকিছু তিনি শুরু করতে চান।

বিজেপির রাষ্ট্রীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা বলেন, জ্যোতিরাদিত্যের দাদি রাজমাতা বিজয়রাজে সিন্ধিয়া ছিলেন বিজেপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। চিরকাল তিনি সংঘের আদর্শ মেনে চলেছেন। জ্যোতিরাদিত্য দলে যোগ দেওয়ার সিন্ধিয়া পরিবারের আর কেউ অন্য দলে থাকলেন না।

জ্যোতিরাদিত্য বিজেপিতে শামিল হওয়ার পর এখন দেখার, মধ্যপ্রদেশ থেকে তাঁকে রাজ্যসভায় নিয়ে আসা হয় কি না। কাল বৃহস্পতিবার তিনি ভোপাল যাচ্ছেন। এই রাজ্য থেকে ৩টি আসনে নির্বাচন হবে ২৬ মার্চ। যে তিন আসন খালি হচ্ছে, তার দুটি বিজেপির দখলে। একটি কংগ্রেসের। রাজনীতির অলিন্দের খবর, জ্যোতিরাদিত্যকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাতেও নিয়ে আসা হতে পারে।

জ্যোতিরাদিত্যর সঙ্গে কংগ্রেস ছেড়েছেন মোট ২১ জন বিধায়ক। তাঁদের সবাইকে কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরু উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বিধায়ক পদে তাঁদের ইস্তফা ১৫ মাসের কমলনাথ সরকারের অস্তিত্ব বিপন্ন করে তুলেছে। তাঁদের পদত্যাগপত্র গৃহীত হলে ২৩০ সদস্যের বিধানসভায় কংগ্রেসের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করা কঠিন।

কিন্তু এই অবস্থায় পদত্যাগী বিধায়কদের কারও কারও অবস্থান মধ্যপ্রদেশের রাজনৈতিক সমীকরণে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করেছে। কংগ্রেসের দাবি, জ্যোতিরাদিত্যর সঙ্গে যাঁরা দলত্যাগ করেছেন তাঁদের কেউ কেউ বিজেপিতে যোগ দিতে রাজি নন। এই মহলের দাবি, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কথা জ্যোতিরাদিত্য বলেননি। তাঁদের নাকি বলা হয়েছিল এটা রাজ্যসভার মনোনয়ন পাওয়ার জন্য একটা কৌশল। মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ এবং কর্ণাটকে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা ডি কে শিবকুমার বলেছেন, পদত্যাগীদের মধ্যে ১২ জন বিজেপিতে যোগ দিতে চান না। তাঁরা কংগ্রেসেই থাকতে চান।

একদিকে সরকার ধরে রাখার তাগিদ, অন্যদিকে রাজ্যসভার ভোটকে কেন্দ্র করে মধ্য প্রদেশের রাজনীতি গমগম করছে। বিজেপি তাদের বিধায়কদের রাজ্য থেকে উড়িয়ে এনেছে দিল্লির কাছে হরিয়ানার গুরুগ্রামে। কংগ্রেস তাদের বিধায়কদের নিয়ে গেছে রাজস্থানের জয়পুরে। শুরু হয়েছে ‘রিসোর্ট রাজনীতি’।

কমলনাথ সরকারের ভাগ্য কবে নির্ধারিত হবে এখনো অজানা। বিধানসভার স্পিকার এখনো কারও পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি। বিজেপিও রাজ্যপালের কাছে সরকার গঠনের কোনো দাবি জানায়নি। রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশন শুরু হবে ১৬ মার্চ। সরকার ফেলতে হলে বিজেপিকে ওই অধিবেশনে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে হবে।

আরও পড়ুন: