ইসরায়েলে করোনাভাইরাস ঠেকাতে গোয়েন্দা

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী করোনা ঠেকাতে বিশেষ ক্ষমতা দিচ্ছেন গোয়েন্দাদের। ছবি: রয়টার্স
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী করোনা ঠেকাতে বিশেষ ক্ষমতা দিচ্ছেন গোয়েন্দাদের। ছবি: রয়টার্স

ইসরায়েল সরকার সন্দেহভাজন করোনাভাইরাসযুক্ত ব্যক্তিদের মোবাইল ফোনের ডেটাতে নজরদারি করতে নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর জন্য জরুরি ব্যবস্থা অনুমোদন করেছে। এ সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিনে বাধ্য করবে। যারা সংক্রমিত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আসতে পারে, তাদের সতর্ক করতে ব্যবহার করবে। সংসদীয় অনুমোদনের বাইরে মন্ত্রিসভার রাতারাতি বৈঠকে অস্থায়ী এ আইন পাস করা হয়।

ইসরায়েলে সিভিল রাইটস অ্যাসোসিয়েশন এই পদক্ষেপকে ‘একটি বিপজ্জনক নজির’ বলে মন্তব্য করেছে। এ–জাতীয় ক্ষমতা সাধারণত সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযানের জন্য সংরক্ষিত থাকে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সাইবার মনিটরিং’ কীভাবে কাজ করবে, এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেট টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানির কাছ থেকে অবস্থানগত তথ্য সংগ্রহ করবে এবং তা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিনিময় করবে।

বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, যখন কোনো ব্যক্তি করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য রোগী হিসেবে চিহ্নিত হবে, তখন তিনি কোয়ারেন্টিনের নিয়ম মানছেন কি না, তা ট্র্যাক বরতে পারবে ইসরায়েলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কোনো উপসর্গ দেখা দেওয়ার আগেই কোনো ব্যক্তি যদি সম্ভাব্য করোনা সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসেন, তবে তাঁকে এসএমএস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।

ইসরায়েলে করোনা এখনো মহামারির প্রাথমিক অবস্থায়। অনেক সাধারণ ইসরায়েলি তাদের সুরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত এ ধরনের পদক্ষেপ মেনে চলতে অভ্যস্ত। তবে এবার জনস্বাস্থ্যের হুমকি, কোনো নিরাপত্তাবিষয়ক হুমকি নয়। এতে করোনাভাইরাস ছড়ানো এতে ঠেকানো যাবে কি না, এ বিষয়ে নজরদারি সংস্থাগুলোর ক্ষমতা জোরদার করার চূড়ান্ত পরীক্ষা হবে এটি।

ইসরায়েল এর মধ্যে ৩০০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি। স্কুল, শপিং সেন্টার, রেস্তোরাঁসহ বিনোদনের সব জায়গা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একসঙ্গে ১০ জনের বেশি জড়ো হওয়ার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটি।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, নিরাপত্তা সংস্থাকে মাত্র ৩০ দিনের জন্য এ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তারা অসুস্থকে শনাক্ত করা ও ভাইরাস প্রতিরোধে ভূমিকা রাখবে।

ইসরায়েল ছাড়াও এ ধরনের নজরদারি করার ক্ষেত্রে চীনের নাম আসে। চীনের নজরদারি ব্যবস্থায় অসুস্থ ব্যক্তিকে সব সময় লক্ষ রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে দেশটির জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ উইচ্যাটের নির্মাতা টেনসেন্ট কিউআর কোডভিত্তিক ট্র্যাকিং ফিচার চালু করেছে। ক্লোজ কন্টাক্ট ডিটেক্টর অ্যাপ ব্যবহারকারীকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগীর কাছে গেলে নোটিফিকেশন দেখাবে এবং কোয়ারেন্টিনে যেতে বলবে।

দক্ষিণ কোরিয়াতেও এ ধরনের প্রযুক্তি প্রাইভেসির ওপর আক্রমণ বলে সমালোচনার মুখে পড়েছে। কিছু লোকের অবস্থানের তথ্য জানাজানি হওয়ায় তাদের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়।