করোনায় জেরুজালেম পরিস্থিতি 'যুদ্ধের চেয়েও ভয়াবহ'

করোনার প্রভাবে জনশূন্য জেরুজালেমের ওল্ড সিটির রাস্তা। ছবি: এএফপি
করোনার প্রভাবে জনশূন্য জেরুজালেমের ওল্ড সিটির রাস্তা। ছবি: এএফপি

জেরুজালেমের ওল্ড সিটির ট্যুর অপারেটর মুনিব আবু আসাব সংঘাতের কারণে আগেও খাঁ খাঁ সড়ক দেখেছেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের প্রভাবে সেখানকার রাস্তাঘাটে এখন যে জনশূন্য পরিস্থিতি, তা যুদ্ধকালের চেয়েও ভয়াবহ। আসাবের এই অভিজ্ঞতা আজ বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।

৫৬ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি আসাব অতীতের অনেক যুদ্ধবিগ্রহের সাক্ষী। আর সেই তিনি এখন দেখছেন করোনার প্রাদুর্ভাব। যুদ্ধ ও করোনা—এই দুই পরিস্থিতির তুলনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে খারাপ বছর ২০২০।’

করোনা ঠেকাতে ইসরায়েল ভ্রমণের ক্ষেত্রে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে। এরপর থেকেই বিপদে আছেন আসাব। এখন ট্যুর বাতিল করতে করতেই তাঁর দিন যায়।

ইসরায়েলে এখন পর্যন্ত ৪৩৩ জন করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। আর দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে শনাক্ত হয়েছে ৪৪ রোগী। এ ছাড়া হাজারো মানুষ ‘সেলফ আইসোলেশন’ অবস্থায় আছে।

প্রয়োজন ছাড়া চলাফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। সব ধরনের ভ্রমণ ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আসাব জানালেন, আগে যখন যুদ্ধবিগ্রহ হাজির হয়েছিল, তখন ব্যবসায় মন্দাভাব এসেছিল। কিন্তু তখনো কিছু আয় হতো। তবে এখনকার পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। ভয়ে কোনো পর্যটক এখানে আসছেন না। দোকানপাট, মার্কেট—সব বন্ধ। জেরুজালেমের ওল্ড সিটি খাঁ খাঁ করছে।

জেরুজালেমের ওল্ড সিটি এখন জনমানব শূন্য। ছবি: এএফপি
জেরুজালেমের ওল্ড সিটি এখন জনমানব শূন্য। ছবি: এএফপি

আসাব বলেন, ‘এখনকার সংকট একেবারেই নতুন। করোনা আমাদের অন্যভাবেও শেষ করছে। আমাদের আয় একেবারে শূন্য।’

বর্তমান পরিস্থিতিতে আসাবের চার কর্মীর মধ্যে দুজনকে বাদ দিতে হতে পারে বলে জানালেন তিনি।

প্রতিবছর ৩০ লাখের বেশি লোক জেরুজালেম পরিদর্শনে আসেন। জেরুজালেমের ওল্ড সিটি পর্যটকে ভরপুর থাকে।

ওল্ড সিটির এক নারী ব্যবসায়ী বললেন, ‘ওল্ড সিটি এখন এক মৃত শহর। অতীতের ঘটনাগুলো (যুদ্ধবিগ্রহ) ছিল রাজনৈতিক। কিন্তু এখনকার ইস্যুটি স্বাস্থ্যগত। করোনা নিয়ে মানুষ অনেক বেশি ভীত।’