রাশিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কম কেন

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এএফপি
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এএফপি

রাশিয়ার সঙ্গে চীনের ২ হাজার ৬০০ মাইলের দীর্ঘ সীমান্ত। জনসংখ্যা সাড়ে ১৪ কোটিরও বেশি। কিন্তু জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৩০৬। অথচ লুক্সেমবার্গের জনসংখ্যা ৬ লাখ ২৮ হাজার। গতকাল পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৬৭০। মারা গেছে আটজন। আর রাশিয়ায় এযাবৎ মারা গেছেন ৭৯ বছর বয়সী এক নারী। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দাবি করেছেন, তাঁর দেশ করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে। আর ‘পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে’ আছে। দ্রুত এবং কঠোর পদক্ষেপের জন্যই এটা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি রুশ প্রেসিডেন্টের।

রাশিয়ায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কি আসলেই নিয়ন্ত্রণের মধ্যে? রাশিয়ার স্বাস্থ্য দপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পুতিনের কৌশল কাজ করেছে। রাশিয়া ৩০ জানুয়ারির মধ্যে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। আর এর সঙ্গে সঙ্গেই অনেকগুলো এলাকা কোয়ারেন্টিন করে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পরীক্ষা, পরীক্ষা এবং পরীক্ষা—পরীক্ষাই করোনাভাইরাস প্রতিরোধের বড় উপায়। রাশিয়ার এই সংস্থার প্রধান মেলিটা ভুজোনভিক বলেছেন, রাশিয়া এই পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে জানুয়ারির শেষ দিক থেকেই। এর পাশাপাশি রাশিয়া সীমান্তও বন্ধ করে দিয়েছে। রাশিয়ায় এখন ১ লাখ ৫৬ হাজার কিট আছে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য। রাশিয়া এত আগে ব্যবস্থা নিলেও যুক্তরাষ্ট্র মার্চের শুরু থেকে নড়েচড়ে বসেছে।

তবে রাশিয়া যে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছে, তা নিয়ে অবশ্য নানা সমালোচনাও আছে। রাশিয়া আদৌ ঠিক সংখ্যা বলছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। রাশিয়ার অতীত রেকর্ডের কারণেই এই অবিশ্বাস। রাষ্ট্রীয় স্তরে লুকোছাপার ঘটনা রাশিয়ায় নতুন না। এর আগে ১৯৮৬ সালে চেরনোবিল দুর্ঘটনার সময় প্রকৃত মৃত মানুষের সংখ্যা নিয়ে টালবাহানা করেছিল রাশিয়া।

রাশিয়ার ভিন্নমতাবলম্বী বলে পরিচিতি আলেক্সি নাভালনির অনুসারী চিকিৎসক অ্যানেসটিসিয়া ভেসিলিভার দাবি, রুশ সরকার তথ্য গোপন করছে। তিনি বলেছেন, অনেক আক্রান্ত রোগীকে নিউমোনিয়ার রোগী বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এভাবেই লুকোনো হচ্ছে বাস্তব চিত্র।

তবে মস্কোর চিকিৎসকেরা অ্যানেসটিসিয়া ভেসিলিভার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। শুধু সরকারি চিকিৎসকেরাই নন, খোদ ডব্লিউএইচওর প্রতিনিধি ভুজনোভিক বলেছেন, ‘লুকোছাপার কিছু ঘটেনি। আর এখন সংক্রমণের সংখ্যা কম মানে এটা নয় যে আগে বাড়বে না।’