মুক্তির আনন্দে ছুটছে হুবেইয়ের মানুষ

চীনের হুবেই প্রদেশের মানুষ ফিরতে শুরু করেছে। ছবি: রয়টার্স
চীনের হুবেই প্রদেশের মানুষ ফিরতে শুরু করেছে। ছবি: রয়টার্স

মুক্তির আনন্দ বাঁধ মানে না। চীনের হুবেই প্রদেশের মানুষ তেমনি মুক্তির আনন্দে আজ বুধবার ছুটছে নিজ গন্তব্যে। প্রায় দুই মাসের বেশি সময় ধরে লকডাউন থাকার পর আজ তাদের মুক্তি। সেই স্রোতে মানুষ ট্রেনে–বাসে ভিড় করে ছুটছে। প্রিয়জনকে এত দিন পর দেখবে বলে অনেকের মনে আনন্দ বাঁধ মানছে না।

বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে জানানো হয়, দৈনন্দিন জীবনযাত্রার কঠোর প্রতিবন্ধকতা অবশেষে তুলে নেওয়া হচ্ছে, সুস্থ লোকেরা বাড়ির দিকে যেতে পারবেন এবং কয়েক সপ্তাহের বিচ্ছেদের পরে প্রিয়জনদের দেখতে পাবেন।

মাচেংয়ের এক রেলস্টেশনে দেখা যায়, বৃষ্টির মধ্যেও স্যুটকেসের সারি নিয়ে লোকেরা ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন। শিশুদের মুখে মাস্ক পরানো রয়েছে। নিরাপত্তাকর্মীরা ভিড়ের মধ্যে লোকজনকে বিভিন্ন নির্দেশনা দিচ্ছেন। স্টেশনে বিভিন্ন গন্তব্যর ট্রেনের ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে।

চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, করোনা মহামারির সময় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শহর হুয়াংগ্যাংয়ের প্রবাসী শ্রমিকেরা ব্যাগ ও স্যুটকেস নিয়ে দূরপাল্লার গাড়ির জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন।

একজন শ্রমিক বলেন, তিনি পূর্ব ঝেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনঝোতে ফিরছেন। তিনি দুই মাসের বেশি সময় ধরে হুবেইতে আটকে ছিলেন।

দেশটিতে আজ থেকে উহান বাদে সব রেলস্টেশন ও বিমানবন্দর খুলে দেওয়া হয়েছে। হুবেইয়ের রাজধানী উহান থেকে গত বছরে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি ঘটেছিল বলে ধারণা করা হয়।

সিনহুয়া বলছে, আজ সকালেই উহানের সঙ্গে সংযুক্ত ৩০টি হাইওয়ে খুলে দেওয়া হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাস্তাগুলোয় যানজট সৃষ্টি হয়েছে। হুবেইয়ের বাসিন্দারা সেখানে ফেরার সুযোগ নিচ্ছেন।

বেইজিংয়ে কর্মরত গুয়ো ওয়ে নামের এক শিক্ষক বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, আজ সকালেই মাচেংয়ে ফেরার প্রথম টিকিট কিনে ফেলেন তিনি। করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে প্রথমবার তিনি সেখানে ফিরছেন। কয়েকটি ব্যাগ নিয়ে ট্রেনে ওঠা খুব কষ্ট বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এক ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, রাস্তায় তিনি কমপক্ষে দুই হাজার মানুষকে শহরটিতে ফিরতে দেখেছেন। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সবুজ কোড পেলে হুবেইতে ভ্রমণে আর কোনো নিষেধাজ্ঞা থাকছে না।

গত জানুয়ারি মাসে হুবেই শাটডাউনের ঘোষণা দেয় বেইজিং। দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩ হাজার ২০০ জনের বেশি মারা গেছেন। তবে সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত মানুষের হার কমে যাওয়ার সেখানে শাটডাউন পরিস্থিতি ধীরে ধীরে শিথিল করা হয়।