করোনাভাইরাস মহামারির শেষ কীভাবে?

যে কোনো নতুন ভাইরাস ঠেকানোর সহজ উপায় হলো-ভ্যাকসিন বা টিকা উদ্ভাবন। ছবি: রয়টার্স
যে কোনো নতুন ভাইরাস ঠেকানোর সহজ উপায় হলো-ভ্যাকসিন বা টিকা উদ্ভাবন। ছবি: রয়টার্স

সারা বিশ্বে উদ্বেগজনক হারে ছড়িয়ে পড়ছে নতুন করোনাভাইরাস। লকডাউন, সামাজিক দূরত্ব সৃষ্টি প্রভৃতি নানা উপায়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানো ঠেকানোর চেষ্টা চলছে। তারপরও বেড়েই চলেছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এমন ত্রিশঙ্কু পরিস্থিতিতে সবার মনে একটি প্রশ্ন উঠছে, এই মহামারির শেষ কীভাবে?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেকোনো মহামারির কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য আছে। সংক্রামক রোগ মহামারি আকারে দেখা দিলে তা অত্যন্ত ভয়ংকর রূপ নেয়। নতুন করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রেও তা–ই হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে ধারণা করা হচ্ছিল, উৎসভূমি চীনে নতুন করোনাভাইরাসটির বিস্তার সীমাবদ্ধ করা যাবে। কিন্তু তা করা যায়নি। এখন তা পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে গেছে।

রোগতত্ত্বের গবেষকদের ধারণা, যদি পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষের শরীরে এই রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতা জন্মায়, তবে একসময় ধীরে ধীরে কোভিড-১৯-এর প্রকোপ কমে আসতে পারে। একটি নির্দিষ্ট রোগের বিরুদ্ধে মানবদেহে তখনই প্রতিরোধক্ষমতা জন্মায়, যখন কেউ ওই রোগে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয় বা ভ্যাকসিন গ্রহণ করে। আরেকটি সম্ভাবনা হলো, কোভিড-১৯ যথারীতি ছড়াতেই থাকবে এবং ধীরে ধীরে একটি সাধারণ শ্বাসতন্ত্রজনিত ভাইরাসে পরিণত হবে।

প্রতিটা মহামারি শেষ হওয়ার কিছু প্রক্রিয়া আছে। নতুন করোনাভাইরাস কোন পথে এগোবে, তা অনুমান করা মুশকিল। আসুন, জেনে নেওয়া যাক এমন কিছু প্রক্রিয়ার কথা, যার মাধ্যমে শেষ হতে পারে করোনাভাইরাসের মহামারি:

নতুন করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে বিশ্ব খুব দ্রুত সাড়া দিয়েছে। তারপরও প্রতিদিন অনেক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স
নতুন করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে বিশ্ব খুব দ্রুত সাড়া দিয়েছে। তারপরও প্রতিদিন অনেক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স

১. কনটেইনমেন্ট
নতুন রোগকে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে কনটেইন করা বা নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ থাকে রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে। কিন্তু নতুন করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে সেটি করা সম্ভব হয়নি। ফলে রোগের বিস্তার একটি এলাকায় সীমাবদ্ধ করে, তা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের সুযোগ এখন সীমিত।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বলছে, এরই মধ্যে মহামারির তিনটি বৈশিষ্ট্যই পূরণ করে ফেলেছে নতুন করোনাভাইরাস। প্রথমত, এটি মানুষকে আক্রান্ত করছে, অসুস্থ করছে। দ্বিতীয়ত, রোগটি সহজেই মানুষ থেকে মানুষে ছড়াচ্ছে। তৃতীয়ত, বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে রোগটি ছড়িয়ে পড়ায় তা মহামারির আকার নিয়েছে।

ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণের জন্য কোয়ারেন্টিন, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রভৃতি পদক্ষেপ অত্যন্ত কার্যকরী। ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের রোগতত্ত্বের সহযোগী অধ্যাপক অবরি গর্ডন বলছেন, এমন পদক্ষেপ সারা বিশ্বেই নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এভাবে নতুন করোনাভাইরাসটির বিস্তার ছড়ানো বন্ধ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, নতুন ভাইরাসটি সম্পর্কে আমরা যতটুকু তথ্য জানতে পেরেছি, তার ভিত্তিতেই নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপগুলো নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এখনো এ ভাইরাসটি সম্পর্কে আমরা সব তথ্য জানি না। ফলে এক অচেনা শত্রুর সঙ্গেই লড়তে হচ্ছে মানুষকে।

অবরি গর্ডনের মতে, যদি কনটেইনমেন্টের চেষ্টা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়, তবে আর দুটি রাস্তাই খোলা থাকবে। প্রথম পথ, আক্রান্তের পর সুস্থ হলে মানুষের মধ্যে ধীরে ধীরে এই রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা জন্মাবে। অথবা সঠিক ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হলে, মানুষ তা গ্রহণ করে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী হয়ে উঠবে। দ্বিতীয় পথ, কোভিড-১৯ যথারীতি ছড়াতেই থাকবে এবং ধীরে ধীরে একটি সাধারণ শ্বাসতন্ত্রজনিত ভাইরাসে পরিণত হবে।

ভ্যাকসিন তৈরির পুরো প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল ও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। ছবি: এএফপি
ভ্যাকসিন তৈরির পুরো প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল ও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। ছবি: এএফপি

২. প্রাকৃতিক উপায়
মহামারি তখনই শেষ হয়, যখন নতুন ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার মতো সংবেদনশীল মানুষের সংখ্যা কমে আসে। ১৯১৮ সালের স্প্যানিশ ফ্লু মহামারির সময় বিশ্বব্যাপী ৫০ কোটি মানুষ তাতে আক্রান্ত হয়েছিল। এর মধ্যে অনেকেই ছিল সৈন্য। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার ওই সময়ে একপর্যায়ে সেনারা সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল। একপর্যায়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্প্যানিশ ফ্লুয়ের বিস্তার কমে আসে। কারণ যারা এই ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েও বেঁচে ছিল, তাদের মধ্যে ওই রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা জন্মায়। ফলে ভাইরাসটি শুরুতে যেভাবে ছড়াচ্ছিল, পরে আর তা হয়নি।

নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির রোগতত্ত্বের অধ্যাপক জোশুয়া এপস্টেইন বলছেন, যদি কোনো নতুন ভাইরাস এমন কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শে আসে, যিনি ওই ভাইরাসের প্রতি সংবেদনশীল নন (অর্থাৎ ভাইরাসটি তাকে আক্রান্ত করতে সক্ষম হচ্ছে না), তখন ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার ধারাবাহিকতা ভেঙে যায়। সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে সাধারণত একজন আক্রান্ত হলে তিনি দুজনকে আক্রান্ত করেন। ওই দুজন থেকে আবার চারজন আক্রান্ত হন। এভাবে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমে বাড়তে থাকে। কিন্তু ভাইরাসটি যখন এই চক্রে এগোতে গিয়ে একজনকে আর আক্রান্ত করতে পারে না, তখন সেই চক্রটি ভেঙে যায়। ফলে একসময় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যে আক্রান্ত করার মতো আর মানুষ পাওয়া যায় না। তখন সংক্রমণ কমে আসতে থাকে। তবে এই প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ।

আরেকটি সম্ভাবনাও আছে। সেটি হলো মিউটেশন (বিবর্তনীয় পরিবর্তন)। সার্সও একধরনের করোনাভাইরাস। চলতি শতকের প্রথম দিকে এটি চীনে ছড়িয়ে পড়েছিল। পরে তা আরও ২৬টি দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এটি যখন কানাডা ও উত্তর আমেরিকায় পৌঁছেছিল, তখন আশঙ্কা করা হয়েছিল যে সেটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়বে এবং প্রাণহানি ঘটাবে। কিন্তু সার্সের সংক্রমণের তীব্রতা ধীরে ধীরে ম্রিয়মাণ হয়ে এসেছিল। এর একটি কারণ ছিল, সার্সের বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছিল। অন্যদিকে সার্স ভাইরাসটি খুব দ্রুত ‘মিউটেটেড’ হয়েছিল। সেটি আরও ভয়ংকর হয়ে উঠেছিল ঠিকই, কিন্তু এর ফলে মানুষের মধ্যে তা সংক্রমিত হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল। ফলে একপর্যায়ে সার্সের তীব্রতা কমে আসে।

সাবওয়ে স্টেশনে আগত লোকজনের তাপমাত্রা পরীক্ষা করছেন চীনের স্বাস্থ্যকর্মীরা। ছবি: এএফপি
সাবওয়ে স্টেশনে আগত লোকজনের তাপমাত্রা পরীক্ষা করছেন চীনের স্বাস্থ্যকর্মীরা। ছবি: এএফপি

৩. ভ্যাকসিন
যেকোনো নতুন ভাইরাস ঠেকানোর সহজ উপায় হলো—ভ্যাকসিন বা টিকা উদ্ভাবন। ইউনিভার্সিটি অব নটর ডেমের রোগতত্ত্বের শিক্ষক অ্যালেক্স পারকিনস বলছেন, যেকোনো মহামারি ঠেকাতে ভ্যাকসিন খুবই আদর্শ একটি উপায়। কারণ, এর মাধ্যমে সংক্রমণ ঠেকানো যায় এবং একটি বিশাল জনগোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে সুনির্দিষ্ট রোগ প্রতিরোধক্ষমতা জন্মানো যায়। কিন্তু রাতারাতি ভ্যাকসিন তৈরি করা কঠিন কাজ। এ কারণেই এখনো অনেক সংক্রামক রোগের ভ্যাকসিন নেই।

অবশ্য এরই মধ্যে বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানীরা নতুন করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন ও কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরিতে ১৮ থেকে ২৪ মাস পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।

পৃথিবীতে যেকোনো রোগের ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয়ে থাকে। অতীতে এমনটাই দেখা গেছে। এই কারণেই নতুন করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরি প্রসঙ্গে নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, করোনাভাইরাস ঠেকাতে সব মিলিয়ে কমপক্ষে ২০টি ভ্যাকসিন তৈরির কাজ চলছে। এরই মধ্যে কিছু ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়ে গেছে। এর আগে এত কম সময়ে কখনো কোনো রোগের ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করা যায়নি। কোভিড-১৯-এর জিন সিকোয়েন্স তৈরির মাত্র ৬০ দিনের মাথায় এসব ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে।

তার পরও নতুন ভ্যাকসিন নিয়ে শিগগিরই কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাচ্ছে না। কারণ, নানা ধাপ পেরিয়ে ধীরে ধীরে একটি ভ্যাকসিন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়। এসবের মধ্যে রয়েছে ভ্যাকসিন আবিষ্কার থেকে শুরু করে প্রাণীর দেহে তার সফল পরীক্ষা পর্যন্ত একটি বিশাল চক্র। ধাপে ধাপে আছে অনুমোদন পাওয়ার মতো কঠোর নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা। সব পার হওয়ার পর আছে তৈরি করা ভ্যাকসিন বিপুল পরিমাণে উৎপাদন, তা বাজারজাত করা ও তৃণমূল পর্যায়ে সাধারণ মানুষের হাতে পৌঁছে দেওয়ার বিষয়গুলো। এই পুরো প্রক্রিয়াটিই অত্যন্ত জটিল ও সময়সাপেক্ষ।

চীনের হুবেই প্রদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত একজন রোগীকে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন একজন স্বাস্থ্যকর্মী। ছবি: এএফপি
চীনের হুবেই প্রদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত একজন রোগীকে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন একজন স্বাস্থ্যকর্মী। ছবি: এএফপি

৪. আচরণ-অভ্যাসে পরিবর্তন
ইউনিভার্সিটি অব এডিনবার্গের সংক্রামক রোগতত্ত্বের অধ্যাপক মার্ক উলহাউস বলছেন, নতুন করোনাভাইরাসের প্রকোপ থেকে বাঁচার উপায় নিয়ে পুরো বিশ্বই সংকটে পড়েছে। এ থেকে বের হওয়ার উপায় কী হবে, তা নিয়ে সবাই সমস্যায় পড়েছে। অগতির গতি হলো, নিজেদের জীবনাচরণ, আচরণ ও অভ্যাসে পরিবর্তন আনা। এর মাধ্যমে নতুন করোনাভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার হার কমিয়ে আনা যেতে পারে।

এই অধ্যাপক বলছেন, উপসর্গ দেখা দেওয়ামাত্র কোভিড-১৯-এর উপস্থিতি নির্ণয়ের পরীক্ষার ব্যবস্থা করা, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা, কঠোর আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিনের মাধ্যমে রোগের ছড়িয়ে পড়া কিছুটা ঠেকানো যেতে পারে। এ ছাড়া চিকিৎসকদের সঠিক সুরক্ষাব্যবস্থা প্রদান, আক্রান্তদের অপেক্ষাকৃত ভালো চিকিৎসাব্যবস্থা নিশ্চিতের পদক্ষেপ নিতে হবে।

রোগীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা নমুনা নিয়ে কাজ করছেন একজন ল্যাবরেটরি অপারেটর। ছবিটি ফ্রান্সের প্যারিসের একটি ল্যাবরেটরি থেকে তোলা। ছবি: এএফপি
রোগীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা নমুনা নিয়ে কাজ করছেন একজন ল্যাবরেটরি অপারেটর। ছবিটি ফ্রান্সের প্যারিসের একটি ল্যাবরেটরি থেকে তোলা। ছবি: এএফপি

৫. বিদ্যমান ওষুধ দিয়ে প্রতিরোধ
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যমান কোনো ওষুধ দিয়ে কোভিড-১৯ ঠেকানো সম্ভব কি না, তা এখনো জানা যায়নি। এরই মধ্যে তৈরি আছে, এমন কিছু ওষুধকে নতুন করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে কার্যকরী বলে ভাবা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে এরই মধ্যে এমন বেশ কিছু ওষুধ শনাক্ত করা হয়েছে। যেহেতু নতুন ভ্যাকসিন তৈরি করা সময়সাপেক্ষ বিষয়, তাই এরই মধ্যে তৈরি কিছু ওষুধের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের কথা বলা হচ্ছে। জানা গেছে, মার্কিন নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান ফেডারেল ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) এমন কিছু ওষুধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অনুমতি দিতেও পারে।

সমস্যা হলো, এসব ওষুধ কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে কাজে লাগতেও পারে, না-ও লাগতে পারে। যদি এসব ওষুধ রোগাক্রান্তদের অবস্থার উন্নয়নে কাজে লাগে, তবে পরিস্থিতি কিছুটা ভালো হতে পারে। তবে মাঠে নামলেই একমাত্র এই পথের কার্যকারিতা সম্পর্কে জানা যাবে।

শেষ কথা: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, একটি রোগ পৃথিবীর বুক থেকে পুরোপুরি নির্মূল করা অত্যন্ত দুরূহ কাজ। মানুষের বা অন্য প্রাণীদের দেহে কোনো না কোনোভাবে যেকোনো ভাইরাস থেকে যেতে পারে। নতুন করোনাভাইরাসও পারে। মানুষের মধ্য থেকে দূর করা গেলেও, অন্য প্রাণীদের মধ্যে এটি থেকে যেতে পারে। পরে তা আবার ছড়িয়ে পড়তে পারে।

টেনেসির ভ্যানডারবিল্ট ইউনিভার্সিটির সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ উইলিয়াম স্ক্যাফনার মনে করেন, নতুন করোনাভাইরাস যেহেতু অত্যন্ত সংক্রামক, সেহেতু এটি কখনোই পুরোপুরি অদৃশ্য হবে না। কোনো না কোনো আকারে রয়ে যাবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন করোনাভাইরাস বিশ্বে একটি দীর্ঘস্থায়ী ভাইরাস হিসেবে টিকে থাকতে পারে। মৌসুমি রোগের মতো এটি ফিরে ফিরে আসতে পারে। তবে কোনো নতুন ভাইরাসের আচরণ কেমন হবে, তার নিখুঁত অনুমান করা কঠিন।

তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স, বোস্টন গ্লোব, বিবিসি, দ্য হিল ডট কম, সায়েন্স নিউজ ডট অরগ ও দ্য নিউইয়র্ক টাইমস