ভারতে ট্রেনে হচ্ছে আইসোলেশন ওয়ার্ড

ট্রেন ধরতে ভারতের রেলস্টেশনে মাস্ক পরে ছুটছেন এক যাত্রী। ছবি: এএফপি
ট্রেন ধরতে ভারতের রেলস্টেশনে মাস্ক পরে ছুটছেন এক যাত্রী। ছবি: এএফপি

করোনা মোকাবিলায় অভিনব ব্যবস্থা নিতে চলেছে ভারতীয় রেল। দূরপাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেনগুলোকে ব্যবহার করা হবে আইসোলেশন ওয়ার্ড হিসেবে। রেল মন্ত্রণালয় এই প্রস্তাব শিগগিরই বাস্তবায়িত করতে চলেছে। এ নিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে।

রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল শনিবার নিজেই এই খবর জানিয়ে টুইট করেছেন। বলেছেন, এই ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে ভারতীয় রেল করোনা আক্রান্ত রোগীদের সারিয়ে তুলতে পরিচ্ছন্ন, জীবাণুমুক্ত এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশ উপহার দেবে।

এই সিদ্ধান্তের একটা প্রেক্ষাপট রয়েছে। করোনার মতো মরণব্যাধি রুখতে কী কী করা যায়, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মন্ত্রিসভার সদস্যদের কাছে পরামর্শ চেয়েছিলেন। গত বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই অভিনব প্রস্তাব রাখা হয়। বৈঠকের পরই রেলমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্স মারফত কথা বলেন রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান ভি কে যাদবের সঙ্গে। চেয়ারম্যানের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সব আঞ্চলিক ও বিভাগীয় ম্যানেজাররা। প্রস্তাব অনুযায়ী এক্সপ্রেস ট্রেনের তাপানুকূল কামরাগুলো হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের উপযুক্ত করে গড়ে তোলা হবে। যে শহর বা অঞ্চলে করোনা-আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি অথচ পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে, ওই এক্সপ্রেস ট্রেন সেখানে পাঠানো হবে। করোনার চিকিৎসায় যা যা প্রয়োজন, সবকিছুই ওখানে রাখা হবে বলে রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন।

আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সারা দেশে লকডাউন। ট্রেন, বাস, বিমান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ। দেশে দৈনিক প্রায় ১৪ হাজার এক্সপ্রেস ট্রেন চালানো হয়। এখন সব বন্ধ। এই অবসরে বেশ কিছু ট্রেনকে আইসোলেশন ওয়ার্ড হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।

সারা দেশে ট্রেন, বাস বন্ধ থাকায় বহু রাজ্যে কর্মরত শ্রমিকেরা অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়েছেন। অনেকে বাক্স-পেটরা নিয়ে দিনের পর দিন হেঁটে বাড়ি ফিরেছেন। মহারাষ্ট্র থেকে এভাবে রাজস্থান যেতে গিয়ে শুক্রবার রাতে কাজ হারানো ৭ শ্রমিকের একটি দল ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা খায়। তাতে ৪ জনের মৃত্যু হয়, আহত হন ৩ জন। উত্তর প্রদেশ সরকার শনিবার জানিয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন শহরে যেসব শ্রমিক কাজ হারিয়ে আটকে পড়েছেন, তাঁদের এলাকায় ফিরিয়ে দিতে ১ হাজার বাস জরুরি ভিত্তিতে চালানো হবে।

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নিতীশ কুমার অবশ্য এই সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক মনে করেন। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, এতে লকডাউনের মূল উদ্দেশ্যটাই নষ্ট হয়ে যাবে এবং করোনা গ্রামেগঞ্জে আরও ছড়িয়ে পড়বে। নিতীশ চান, যে যেখানে আটকে পড়েছেন, তাঁদের জন্য সেখানেই সরকারের খরচে শিবির খোলা দরকার। বিহার সরকার এই কাজে ১০০ কোটি রুপি বরাদ্দ করেছে।