অস্ট্রেলিয়ায় ৬০ লাখ কর্মী সপ্তাহে ৭৫০ ডলার পাবেন

অস্ট্রেলিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিন। তবে প্রাদুর্ভাবের মাত্রা কিছুটা কমেছে। আজ সোমবার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ২৪৫ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের। অস্ট্রেলিয়ায় আজ পর্যন্ত করোনাভাইরাস শনাক্ত করার জন্য পরীক্ষা করা হয়েছে ২ লাখ ৩৮ হাজার মানুষকে, যা বিশ্বে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি টেস্টের উদাহরণ। তবে অস্ট্রেলিয়ায় কোনো বাংলাদেশির করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল সরকারের নতুন প্রণোদনার ঘোষণায় কিছুটা প্রাণচাঞ্চল্য বেড়েছে এখানকার নাগরিকদের। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কর্মীদের চাকরি রক্ষার্থে আজ সোমবার এ যাবৎকালের সবচেয়ে বেশি অঙ্কের প্রণোদনা ঘোষণা করেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। লকডাউন নয়, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার গুরুত্ব সমানতালে উচ্চারিত হয়েছে দেশজুড়ে। এখনো দুজনের বেশি মানুষের একসঙ্গে না চলার নিয়মটি কঠোরভাবে পালন করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নিয়ম ভাঙলেই জেল-জরিমানা।

এক পরিসংখ্যান বলছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া প্রায় ৬৪ শতাংশ মানুষ হচ্ছে সম্প্রতি দেশের বাইরে থেকে আসা এবং আক্রান্তের বাকি একটা বড় অংশ হচ্ছে বিদেশ থেকে আসা মানুষের সংস্পর্শ। এ জন্য এখন থেকে যে কেউ দেশটিতে প্রবেশ করলেই সরকারের তত্ত্বাবধানে হোটেলে বাধ্যতামূলক ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হচ্ছে। যদিও এর আগে নিজের বাসস্থানে থাকতে পারতেন আগত ব্যক্তিরা।

অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল সরকার প্রায় ১৩ হাজার কোটি অস্ট্রেলিয়ান ডলারের প্রণোদনা ঘোষণা করেছে আজ। অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের চাকরি রক্ষার্থে সরকারের এ যাবৎকালের সবচেয়ে বেশি অঙ্কের প্রণোদনা এটি। এই ১৩ হাজার কোটি অস্ট্রেলিয়ান ডলারের ‘জবকিপার’ প্রণোদনা দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের এই মহাদুর্যোগের দিনে চাকরি সামলাবে সরকার। এর আওতায় ব্যবসায়ীদের কর্মীপ্রতি দুই সপ্তাহ পরপর ১ হাজার ৫০০ ডলার করে দিয়ে যাবে আগামী ৬ মাস। পার্টটাইম ও ক্যাজুয়াল কর্মী এবং নিউজিল্যান্ডের নাগরিক যাঁরা অস্ট্রেলিয়ায় কাজ করেন, তাঁরাও এ সুবিধা পাবেন, যদি তাঁদের কাজের মেয়াদ কমপক্ষে এক বছর পূর্ণ হয়। তবে কর্মীর স্বামী বা স্ত্রী বা পার্টনারের বার্ষিক আয় ৭৯ হাজার ডলারের ওপরে হলে এ সুবিধা পাবেন না।

এর আগে আরও দুই দফায় ৮ হাজার ৩৬০ কোটি ডলারের প্রণোদনা বাজেট ঘোষণা করেছিল সরকার। তাতে অস্ট্রেলিয়ার বেকার নাগরিকদের ভাতা দ্বিগুণ হয়েছে। তাঁরা প্রতি দুই সপ্তাহে সরকার থেকে সাড়ে ৫০০ ডলারের পরিবর্তে ১ হাজার ১০০ ডলার পেতে যাচ্ছেন। এ ছাড়া বয়স্ক, শারীরিক প্রতিবন্ধী, নিম্ন আয়ের যেসব অভিভাবক শিশু অথবা স্কুলপড়ুয়া বাচ্চাদের লালন-পালন করেন, তাঁদের নিয়মিত ভাতার সঙ্গে অতিরিক্ত ভাতা হিসেবে এককালীন ৭৫০ ডলার দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

করোনাভাইরাসের সর্বশেষ অবস্থা
এখন পর্যন্ত দেশটিতে ৪ হাজার ২৪৫ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের। দেশটির স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যে। এই রাজ্যে এখন পর্যন্ত মোট শনাক্ত মানুষের সংখ্যা ১ হাজার ৯১৮। এ ছাড়া, ভিক্টোরিয়াতে ৮২১, কুইন্সল্যান্ডে ৬৮৯, সাউথ অস্ট্রেলিয়ায় ৩০৫, ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ায় ৩৫৫, ক্যানবেরায় ৭৮, তাসমানিয়ায় ৬৫ এবং নর্দান টেরিটরিতে ১৪ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছে।