যুক্তরাষ্ট্রে আগস্ট নাগাদ ৮২ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে

হোয়াইট হাউসের করোনাভাইরাস টাস্কফোর্সের সমন্বয়ক ডেবোরাহ বার্কস। ছবি: এএফপি
হোয়াইট হাউসের করোনাভাইরাস টাস্কফোর্সের সমন্বয়ক ডেবোরাহ বার্কস। ছবি: এএফপি

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আগামী আগস্ট নাগাদ ৮২ হাজার মানুষ মারা যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে হোয়াইট হাউস। পরিসংখ্যানের ১২টি মডেল পর্যালোচনা করে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এই প্রেক্ষাপটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নীতি মেনে চলার সময়সীমা ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়েছেন। গত রোববার প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান হোয়াইট হাউসের করোনাভাইরাস টাস্কফোর্সের সমন্বয়ক ড. ডেবোরাহ বার্কস।

প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় ডেবোরাহ বার্কস অবশ্য আরেকটি মডেলের কথাও উল্লেখ করেন, যেখানে একই ধরনের শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল। ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভালুয়েশন বিভিন্ন দেশের সরকার, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা ওই মডেলটি জনপরিসরে তুলনামূলক বেশি পরিচিত। ডেবোরাহ বলেন, ‘এই বিশ্লেষণ এক হতাশাজনক চিত্র তুলে ধরছে। কোনো অঙ্গরাজ্য বা শহরই এই সংক্রমণের বাইরে থাকবে না। এমনকি সামাজিক দূরত্ব মেনে চলেও মৃতের সংখ্যা খুব বেশি কমানো যাবে না।’

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল সোমবার পর্যন্ত যে পূর্বাভাস পাওয়া গেছে, তাতে মধ্য-এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি দিন গড়ে ২ হাজার মানুষ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়েই যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি হবে। ওই পরিস্থিতি সামাল দিতে যুক্তরাষ্ট্রে ২ লাখ ২৪ হাজার হাসপাতাল বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় অন্তত ৬০ হাজার কম। এতে আরও বলা হয়, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নীতি মে মাস পর্যন্ত বর্ধিত হতে পারে। তারপরও যুক্তরাষ্ট্রে আগামী আগস্টের মধ্যে কোভিড-১৯-এ প্রায় ৮২ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে।

ডেবোরাহ জানান, ইতালি, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের অতীত অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করেই এমন আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। তবে এমন পূর্বাভাস যে হুবহু ফলে যাবে, এমন নয়। কিন্তু এটি সবাইকে সতর্ক থাকতে বলছে। পরিস্থিতি খারাপ হলে হাসাপাতালগুলোয় নেওয়া প্রস্তুতি ভীষণভাবে অপ্রতুল হয়ে উঠবে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হবে। তেমনটি হলে মৃতের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়ে যাবে।

এ অবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে অঙ্গরাজ্যসহ স্থানীয় প্রশাসনগুলোকে আরও বেশি তৎপর হতে হবে উল্লেখ করে ডেবোরাহ বার্কস বলেন, ‘সবাই একসঙ্গে কার্যকর পদক্ষেপ নিলে আমরা অনেককেই বাঁচাতে পারব। কিন্তু যদি অঙ্গরাজ্যগুলো পদক্ষেপ না নেয় এবং সাধারণ মানুষ প্রশাসনিক নির্দেশ না মানে, তাহলে অনেক লোক মারা যাবে।’

পরিস্থিতি যে আরও ভয়াবহ হতে পারে তা সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউচির কথাতেই স্পষ্ট। গত রোববার সিএনএনকে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যে অবস্থা, তাতে যুক্তরাষ্ট্রে মৃতের সংখ্যা ১ লাখ এমনকি ২ লাখও হতে পারে। তবে এটা আশঙ্কাই শুধু। এ ধরনের সুস্পষ্ট কোনো সংখ্যা তুলে ধরে মানুষকে আতঙ্কিত ও বিভ্রান্ত না করাটাই ভালো হবে।’