ইউরোপে করোনারোধী মাস্কের আকাল

ক্রমবর্ধমান করোনা সংকটে বিপর্যস্ত ইউরোপ। ছবি: রয়টার্স
ক্রমবর্ধমান করোনা সংকটে বিপর্যস্ত ইউরোপ। ছবি: রয়টার্স

ইউরোপে করোনা মহামারির বিস্তার রোধে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক নয়। এটি রোধে মাস্ক পরে রাস্তাঘাট, সুপার মার্কেট, বাস, ট্রেন বা অফিসে লোকজন আসছেন-সেই দৃশ্য ততটা চোখে পড়ে না। তবে করোনার প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে তা রোধে মাস্ক ব্যবহারের যৌক্তিকতা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে জার্মানি বা ইউরোপের অনেক দেশে। কিন্তু করোনারোধের মাস্ক পাওয়া দুষ্কর। কারণ, হঠাৎ করে তা ছড়িয়ে পড়ায় করোনা প্রতিরোধের মাস্ক বাজারজাত করা হয়নি।

এমন সময় খবর এসেছে, চীনের কাছে ফরমাশ করা ফ্রান্সের ১০০ কোটি করোনাপ্রতিরোধী মাস্কের একটি বিরাট অংশ চীনা মাস্ক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানটি চড়া দামে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিক্রয় করে দিয়েছে। ফ্রান্সের গ্র্যান্ড ইস্ট রাজ্যের আঞ্চলিক প্রধান জ্যঁ রোটনার গতকাল বৃহস্পতিবার এমন ঘটনার কথা জার্মানির আরটিএল টেলিভিশনকে জানিয়েছেন। রোটনা তাঁর অভিযোগে বলেছেন, ফ্রান্সের ফরমাশ করা ১০০ কোটি করোনাপ্রতিরোধী মাস্কের একটি বিরাট অংশ চীনের প্রতিষ্ঠানটি তিন বা চার গুণ বেশি মূল্যে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়ে দিয়েছে।

ফ্রান্সের গ্র্যান্ড ইস্ট রাজ্যের আঞ্চলিক প্রধান রোটনার ও আল্পস কোটে ডি আজুরের রাজ্যের আঞ্চলিক প্রধান রেঁনো মুস্যেলিয়র চীনের ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করে বলেছেন, প্রয়োজনের মুহূর্তে এই ধরনের বাণিজ্য দুর্ভাগ্যজনক।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে বলেছেন, ফ্রান্স শিগগিরই তাদের প্রয়োজনীয় করোনারোধী মাস্ক নিজেরাই তৈরি করবে।

এ মুহূর্তে ফ্রান্সে করোনাভাইরাসে ৫৯ হাজার ১০৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আর ৫ হাজার ৩৮৭ জন মারা গেছেন।

এশিয়ার দেশগুলোয় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্ক ব্যবহারের বহুল প্রচলন লক্ষণীয়। তবে ইউরোপে তা এখনো ততটা হয়নি। তবে ক্রমবর্ধমান করোনা সংকটে বিপর্যস্ত ইউরোপের দেশগুলোয় এখন মাস্কের ব্যবহার নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। ইউরোপের বাইরে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে মাস্কের সংকট দেখা দিয়েছে। এই সুযোগ নিচ্ছে চীনের মাস্ক প্রস্তুতকারী কিছু প্রতিষ্ঠান।

এর আগে জার্মানির সেনাবহিনীর পক্ষ থেকে ফরমাশ করা করোনাপ্রতিরোধী ৬০ লাখ মাস্ক আকাশপথে গত ২০ মার্চ জার্মানিতে এসে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু তা কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবি থেকে গায়েব হয়ে যায়। অবশ্য নাইরোবি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তা অস্বীকার করেছে। সেনাবহিনীর পক্ষ থেকে ফরমাশ করা মাস্কগুলো জার্মানির বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে সরবরাহ করার কথা ছিল।

জার্মানিতে করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত ৮৪ হাজার ৭৯৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ১ হাজার ১০৭ জন।