বিদেশি শিক্ষার্থীদের ফিরে যেতে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। ছবি: এএফপি
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। ছবি: এএফপি

শিক্ষার্থীসহ আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের অস্ট্রেলিয়া থেকে তাঁদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরায় জাতীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর তিনি এ কথা বলেন। অস্ট্রেলিয়ায় যাঁরা বিভিন্ন অস্থায়ী ভিসার অধীনে আছেন এবং খরচ নির্বাহের সামর্থ্য নেই, তাঁদের বিকল্প হচ্ছে নিজ দেশে ফিরে যাওয়া। বললেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী।

স্কট মরিসন আরও বলেন, অস্ট্রেলিয়াকে অবশ্যই তাদের নাগরিক এবং স্থায়ী বাসিন্দাদের ওপর নজর দেওয়া উচিত, যাতে তাঁদের সর্বাধিক অর্থনৈতিক সমর্থন নিশ্চিত করা যায়। ফলে এটা স্পষ্ট, অস্ট্রেলিয়ায় বর্তমানে ৫ লাখেরও বেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী এবং আরও প্রায় ১০ লাখের বেশি অস্থায়ী ভিসাধারীর কেউই অস্ট্রেলিয়ার সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা পাবেন না।

এক পরিসংখ্যান বলছে, ভ্রমণ অস্থায়ী ভিসায় ব্যাকপ্যাকাররা যে শেয়ারহাউস ও ভূগর্ভস্থ হোস্টেলগুলোতে থাকেন, সেগুলো অধিক জনস্বাস্থ্য ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া সরকার অপরিহার্য নয় এমন পরিষেবা বন্ধ করলেও বিদেশিদের থাকার এ স্থানগুলো আপাতত বন্ধ করতে পারছে না।

অস্ট্রেলিয়ায় বর্তমানে ৫ লাখেরও বেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী এবং সব মিলিয়ে প্রায় ১০ লাখের বেশি অস্থায়ী ভিসাধারী রয়েছেন, যাঁরা ইতিমধ্যে করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধের কারণে কাজ্যুয়াল ও পার্টটাইম চাকরি হারিয়েছেন। তাঁরা এই দুর্যোগে ঘোষিত অস্ট্রেলিয়া সরকারের সামাজিক সুরক্ষা সুবিধাও পাবেন না। তা ছাড়া সীমিত বিমান চলাচলের কারণে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার পথও সংকীর্ণ হয়ে আছে। এ জন্য বিভিন্ন দেশের এই বিশাল সংখ্যক অস্থায়ী ভিসাধারীরা কী করবেন, তা বুঝে উঠতে পারছেন না। গণমাধ্যমে অনেকেই এ অভিযোগ করছেন। যদিও অস্ট্রেলিয়ায় আসা শিক্ষার্থীরা তাঁদের পড়াশোনার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় খরচ নির্বাহের সামর্থ্য রয়েছে—এমন প্রমাণপত্র দেখানোর পরই ভিসা মঞ্জুর করা হয়।

অন্যদিকে এখানে পড়াশোনা করতে আসা বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীও কাজ হারিয়েছেন। কত দিন এ পরিস্থিতি চলে, তা নিয়ে অভিভাবকদের পাশাপাশি এখানকার সচেতন মহলও চিন্তিত। সীমিত আকারে হলেও সিডনিতে বাংলাদেশি কমিউনিটির কিছু মানুষ এই শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে আসছেন বলে জানিয়েছেন অনেকে।

অস্ট্রেলিয়ার সর্বশেষ করোনাভাইরাস পরিস্থিতি
অস্ট্রেলিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। শুক্রবার পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ৩৫০। ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যে। এই রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩৮৯। এ ছাড়া ভিক্টোরিয়ায় এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৮৫, কুইন্সল্যান্ডে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৭৩, সাউথ অস্ট্রেলিয়ায় ৩৯৬, ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ায় ৪২২, ক্যানবেরায় ৯১, তাসমানিয়ায় ৭৩ ও নর্দান টেরিটরিতে ২১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। পুরো অস্ট্রেলিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের শনাক্তকরণ পরীক্ষা হয়েছে ২ লাখ ৭৫ হাজার।

এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় কোনো বাংলাদেশির নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।