টোকিওতে এক দিনেই ১১৮ করোনা রোগী শনাক্ত

ফাইল ছবি রয়টার্স
ফাইল ছবি রয়টার্স

জাপানের রাজধানীতে এক দিনে নতুন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ১১৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। আজ শনিবার বিকেল পর্যন্ত এই সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন মেট্রোপলিটন সরকারের কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, এটা প্রথমবারের মতো ১০০-র মনস্তাত্ত্বিক বাধা অতিক্রম করে যাওয়া। এর ফলে অনেকেই মনে করছেন, নতুন এই হিসাবের পর সরকারের ওপর জরুরি অবস্থা ঘোষণার জন্য চাপ বাড়বে।

জাপানে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৯৩৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে ৬৯ জন। পাশাপাশি ৫১৪ জন সুস্থ হয়ে উঠেছে।

এদিকে লকডাউন কিংবা জরুরি অবস্থা ঘোষণা ছাড়াই জাপানের রাজধানী আজ শনিবার অনেকটাই ছিল জনশূন্য। সপ্তাহান্তের ছুটিতে ঘরের বাইরে না যাওয়ার জন্য মেট্রোপলিটন প্রশাসনের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের জানানো আবেদনে সাড়া দিয়েছে নগরবাসী। পাশাপাশি আছে আতঙ্ক। শিবুইয়া ও আসাকুসার মতো বিদেশি পর্যটকপ্রিয় এলাকাগুলো ছিল একেবারে ফাঁকা।

ছুটির দিনগুলোতে মূলত ভিড় হয় শিনজুকু, ওমোতে সান্দো কিংবা তরুণদের আকৃষ্ট করা হারাজুকুর তাকেশিতা স্ট্রিট এলাকা। সেগুলোও ছিল ফাঁকা ফাঁকা। একই প্রবণতা টোকিওর বাইরের বড় শহরগুলোতেও দেখা গেছে। জাপানবাসী এখন ছুটির দিনেও নিজেদের ঘরে থাকছে।

ওষুধের সন্ধানে জাপান

জাপান সরকারের শীর্ষ মুখপাত্র বলেছিলেন, যেসব দেশ করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় জাপানের ফুজি ফিল্ম তোইয়ামা কেমিক্যাল কোম্পানির তৈরি ওষুধ এভিগান ব্যবহার করতে আগ্রহী, সরকার বিনা মূল্যে তাদের সেই ওষুধ সরবরাহ করবে। সরকার আজ জানিয়েছে, ৩০টির মতো দেশ ইতিমধ্যে কূটনৈতিক সূত্রের মাধ্যমে এভিগান পাওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়েছে। এর বাইরে জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী গত বৃহস্পতিবার বলেছেন, তাঁর দেশ কয়েক লাখ এভিগান ট্যাবলেট কিনতে আগ্রহী।

করোনা ভাইরাসের চিকিৎসায় এভিগানের কার্যকারিতা কিছুটা প্রমাণিত হলেও সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জার চিকিৎসার জন্য ব্যবহার হয়ে আসা এই ওষুধের রাসায়নিক যৌগে রদবদল ঘটিয়ে এটাকে করোনাভাইরাসের চিকিৎসার জন্য আরও বেশি উপযোগী করে তোলার জন্য গবেষণা ফুজি ফিল্ম তোইয়ামা কেমিক্যাল অব্যাহত রেখেছে। চলতি মাসের মাঝামাঝি এর ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা কোম্পানি চালাবে। চীনের উহান বিশ্ববিদ্যালয় ও আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের চালানো গবেষণায় দেখা গেছে, বিশেষ করে রোগের হালকা উপসর্গ যাদের মধ্যে দেখা গেছে, তাদের চিকিৎসার বেলায় এভিগান হচ্ছে কার্যকর এক ওষুধ।

জাপান সরকারের বিশেষজ্ঞ প্যানেল অবশ্য দেশে উৎপাদিত আরও কয়েকটি ওষুধ করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় কাজে লাগানোর সম্ভাবনা বিবেচনা করে দেখছে। বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সদস্যরা এর বাইরে আলভেসকো নামে বাজারজাত হওয়া হাঁপানি রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে আসা স্টেরয়েড ইনহেলার নিয়ে আশাবাদী। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কয়েকজন রোগীর ওপর চালানো এর ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার সব কটিতে ইতিবাচক ফলাফল ইতিমধ্যে পাওয়া গেছে।

এ ছাড়া ইবোলা ভাইরাসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ রেমডেসিভির এবং ম্যালেরিয়ার চিকিৎসার জন্য আবিষ্কৃত ওষুধ প্লাকেনিল নিয়েও জাপানের গবেষকেরা আশাবাদী। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের ওপর এসব ওষুধের ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় আশাব্যঞ্জক ফলাফল গবেষকেরা পেয়েছেন। তাঁরা আশা করছেন, ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আনার সঠিক পথের সন্ধান অচিরেই তাঁরা পেয়ে যাবেন।