মহামারির পর এই প্রথম করোনায় চীনে কারো মৃত্যু হয়নি

মহামারির বিপর্যয় কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে চীনের মানুষ। আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানী বেইজিংয়ে। ছবি: রয়টার্স
মহামারির বিপর্যয় কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে চীনের মানুষ। আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানী বেইজিংয়ে। ছবি: রয়টার্স

করোনাভাইরাস মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার পর আজ মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো চীনে এতে আক্রান্ত কারো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। তবে নতুন করে ৩২ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য কমিশন এ তথ্য জানিয়েছে বলে আজ বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে।

গত জানুয়ারি থেকে চীনে প্রতিদিন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের পরিসংখ্যান দিয়ে আসছে ন্যাশনাল হেলথ কমিশন। তাদের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ৩২ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। আগের দিন সোমবার এই সংখ্যা ছিল ৩৯। নতুন যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন, তাঁরা সবাই সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বাইরে থেকে চীনে গেছেন।

চীনের সরকারি হিসাবে, করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৮১ হাজার ৭৪০ জন আর মারা গেছে ৩ হাজার ৩৩১ জন। যদিও চীন করোনাভাইরাসে প্রকৃত আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা গোপন করছে বলে অভিযোগ আছে। চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস স্পেন, ইতালি ও যুক্তরাষ্ট্রে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। সেই হিসাবে ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনে মৃতের সংখ্যা এত কম হওয়ার কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা বিশেষজ্ঞরা বের করতে পারছেন না।

গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা 'ওয়াশিংটন পোস্ট'–এর প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ মারা গেছে। দেশটি মৃত ও আক্রান্ত লোকজনের বিষয়ে প্রকৃত তথ্য দেয়নি।

চীনের সাময়িকী 'ক্যাক্সিন'–এর তথ্য উদ্ধৃত করে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, উহানের হানকাউ নামের একটি শ্মশানে প্রতিদিন ১৯ ঘণ্টা ধরে মৃতদেহ সৎকার হয়েছে। মাত্র দুই দিনে সেখানে ৫ হাজার মানুষের মরদেহ পোড়ানো হয়। অনলাইনে পোস্ট করা ছবি ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো একটা হিসাব বের করেছে। এ হিসাবে গত ২৩ মার্চ থেকে মৃতদেহ সৎকার শেষে উহানে মৃতদেহের ভষ্ম ভরা ৩ হাজার ৫০০ কলস ফিরে এসেছে প্রতিদিন। এই হিসাবে 'ওয়াশিংটন পোস্ট'–এর প্রতিবেদনে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ১২ দিনে উহানে ৪২ হাজার মানুষের মৃত্যুর তথ্য উঠে এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাও দাবি করেছে, চীন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত মানুষের তথ্য গোপন করছে। প্রকৃত অবস্থা আরও ভয়াবহ।