পশ্চিমবঙ্গে লকডাউন বাড়ানোর পক্ষে মমতা

সচিবালয় নবান্নের সভাঘরে রাজ্যের বণিক সভার নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
সচিবালয় নবান্নের সভাঘরে রাজ্যের বণিক সভার নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে লকডাউনের সময় বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছেন সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সচিবালয় নবান্নের সভাঘরে রাজ্যের বণিক সভার নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

ভারতে লকডাউনের মেয়াদ ১৪ এপ্রিল শেষ হচ্ছে। কাল শনিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেখানে তিনি লকডাউন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানাবেন। মমতা বলেন, লকডাউন বাড়লে এতে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের সায় থাকবে।

মমতা জানান, চা–বাগানের শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করে তিনি চা–বাগান খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রতিটি চা–বাগানে ১৫ শতাংশ শ্রমিক কাজ করবেন। তিনি জরুরি কাজ ও ব্যবসায়ীদের ব্যবসার কথা বিবেচনা করে শহরের কয়েকটি ট্যাক্সিস্ট্যান্ডে ট্যাক্সি চালানোর অনুমতি দিচ্ছেন।

ট্যাক্সিতে চালক ছাড়া দুজনের বেশি থাকতে পারবেন না। ট্যাক্সিতে পণ্য পরিবহন করা যাবে। এর আগে মমতা ফুলের বাজার খোলার অনুমতি দিয়েছেন। খুলেছে সবজির পাইকারি বাজারও।

গতকাল মমতা বলেন, ‘আমাদের করোনা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। আমরা এই করোনার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা জিতব। তিনি এ কথাও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় পশ্চিমবঙ্গে ১২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এই নিয়ে রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দাঁড়াল ৮৩। আর মৃতের সংখ্যা বাড়েনি।

মমতা বলেন, পশ্চিমবঙ্গে সরকারিভাবে গড়া হয়েছে ৬১টি করোনা হাসপাতাল। ৫৬২টি কোয়ারেন্টিন কেন্দ্র। এতে এখন রয়েছে ৪ হাজার ৭১৭ জন। রয়েছে এই রাজ্যের ভারতের অন্য ১৬ রাজ্য থেকে আসা ২ লাখ শ্রমিক। তাঁদের জন্য ৭১১টি ত্রাণকেন্দ্র খোলা হয়েছে।

মমতা বলেন, রাজ্যের ৫৫ হাজার ২৬৪ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। তিনি এ কথাও বলেন, এই রাজ্যে এর মধ্যে ১ হাজার ৮৮৬ জন রোগীর করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয়েছে।

ভারতের ১৩৩ জেলাকে হটস্পট চিহ্নিত
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘করোনা নিয়ে আমাদের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। আমরা অন্যান্য দেশের তুলনায় এখন ভালো আছি। ভারত সরকার করোনা প্রতিরোধের জন্য সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। করোনার সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য দেশবাসীও প্রস্তুত রয়েছে। তাঁরা লকডাউন মেনে করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ভারতের ১৯টি রাজ্যের ১৩৩টি জেলাকে করোনার হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করেছি। আবার ১৩৩টি জেলার মধ্যে ৭৫টি জেলায় রয়েছে করোনা আক্রান্ত ৮০ ভাগ রোগী। আর ১০টি জেলায় রয়েছে ১০ ভাগ রোগী।’ তিনি আরও বলেন, ‘তাই আমাদের অযথা দুশ্চিন্তা করার দরকার নেই। করোনা মোকাবিলায় আমরা যথেষ্ট প্রস্তুত রয়েছি। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে এখন দুই লাখের বেশি আইসোলেশন বেড রয়েছে। পর্যাপ্ত ভেন্টিলেটর, আইসিইউ বেড, কেবিন, পিপিই ও মাস্ক রয়েছে।’