সিডনিতে খুলেছে ৩ সৈকত

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির র‍্যান্ডউইক কাউন্সিলের কুজি সৈকত। ফাইল ছবি প্রথম আলো
অস্ট্রেলিয়ার সিডনির র‍্যান্ডউইক কাউন্সিলের কুজি সৈকত। ফাইল ছবি প্রথম আলো

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমে গেছে বলে সিডনির র‍্যান্ডউইক কাউন্সিল তাদের তিনটি সমুদ্রসৈকত খুলে দিয়েছে আবার। ফলে প্রায় এক মাস বন্ধ থাকার পর আজ সোমবার আবার সৈকতগুলোতে মানুষের আনাগোনা শুরু হয়েছে।

এর আগে গত মাসে অস্ট্রেলিয়ায় করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে গেলে দেশটির নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের সিডনির পূর্বাঞ্চলীয় শহরতলির কুজি, মারোব্রা ও ক্লোভেলি নামের তিনটি সৈকত বন্ধ করে দিয়েছিল সরকার। ফলে জনপ্রিয় এই সমুদ্রসৈকতগুলোতে মানুষের আগমন ছিল নিষিদ্ধ। কিন্তু আজ নিষেধাজ্ঞা তুলে সীমিত ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে স্থানীয় র‍্যান্ডউইক কাউন্সিল। ফলে সামজিক দূরত্ব বজায় রেখে শুধু শারীরিক অনুশীলন করা যাবে সৈকতগুলোতে।

তবে এ খবর প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অনেকে। কারণ নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের অন্যতম করোনাভাইরাস আক্রান্ত অঞ্চল র‍্যান্ডউইক। এ ছাড়া এর পার্শ্ববর্তী সিডনি ও ওয়েভারলি কাউন্সিল অস্ট্রেলিয়ার করোনাভাইরাসের ভরকেন্দ্র। সিডনির পূর্ব দিকের ওই অঞ্চলগুলোতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। কিন্তু সমালোচনার জবাবে র‍্যান্ডউইক কাউন্সিল বলছে অন্য কথা। তারা বলছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হ্রাস পাওয়াতে স্থানীয়দের ভালোর জন্য সৈকতগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহ ধরে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে নিউ সাউথ ওয়েলস (এনএসডব্লিউ) স্বাস্থ্য বিভাগ র‍্যান্ডউইকসহ আরও ১২টি উচ্চঝুঁকিপূর্ণ কাউন্সিলের বাসিন্দাদের করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ পরীক্ষা করার জন্য অনুরোধ করে আসছে। এর মধ্যে সৈকতগুলো খুলে দেওয়ায় অনেকেই বিস্ময় প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে কঠোর সমালোচনাও করছেন। তাদের আশঙ্কা, সৈকতগুলো খুব তাড়াতাড়ি খুলে দেওয়া হলো। ফলে ভাইরাস ঠেকানোর সমস্ত অগ্রগতি বিফলে গিয়ে পরিস্থিতি আগের অবস্থায় চলে যেতে পারে।

অন্যদিকে অনেকে সৈকতগুলো খুলে দেওয়ার ঘোষণাকে এ মাসের সেরা খবর বলে উল্লেখ করেছেন। তারা বলছেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা প্রচণ্ড অবসাদে ভুগছিলেন। এ সিদ্ধান্তের ফলে অনেকে উজ্জীবিত হবে।

গত মাসে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের শুরুতে নির্দিষ্ট করে নিষেধাজ্ঞা না থাকায় হাজারো মানুষ ভিড় করেছিল ওয়েভারলি কাউন্সিলের বিখ্যাত বণ্ডাই সমুদ্রসৈকতে। ওই খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে দেশে-বিদেশে তীব্র সমালোচনার ঝড় ওঠে। তারপরই সামাজিক দূরত্বের নতুন আইনে সৈকতগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখন র‍্যান্ডউইক কাউন্সিলের সৈকতগুলো খুললেও বন্ডাইসহ অন্য কোনো সৈকত খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়নি।

আজ সোমবার পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় মোট শনাক্তের সংখ্যা ৬ হাজার ৬১৯ জন। এর মধ্যে ৭১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অন্যদিকে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪ হাজার ২৫৮ জন। দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাস আক্রান্তের শনাক্তকরণ পরীক্ষা হয়েছে ৪ লাখ ৩১ হাজার। আজকের সুখবর হচ্ছে দেশটির তিনটি রাজ্যে কেউ আক্রান্ত হয়নি। এ ছাড়া দেশটিতে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের কেউ এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা যায়নি।