করোনার 'লাল জোন' নিয়ে মোদি-মমতা সংঘাত

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন তালিকায় অতি করোনাপ্রবণ 'লালজোনে' পশ্চিমবঙ্গের ছয়টি জেলা বেশি দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে রাজ্য সরকার। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্য সরকারের দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে।

ভারতের দ্বিতীয় পর্যায়ের লকডাউন শেষ হচ্ছে কাল ৩ মে। এর আগেই ১ মে শুক্রবার কেন্দ্রীয় সরকার এই লকডাউনের মেয়াদ তৃতীয় পর্যায়ে ১৭ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছে। একই সঙ্গে ভারতের ৭৩৩টি জেলাকে করোনার সংক্রমণের নিরিখে নতুন করে লাল, কমলা ও সবুজ জোনে ভাগ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, এখন ভারতে নতুন করে সমীক্ষা করে বলা হয়েছে, ১৩০টি জেলাকে 'লাল জোনের' আওতায় নেওয়া হয়েছে। কমলা জোনের আওতায় রাখা হয়েছে ২৮৪টি জেলা। সবুজ জোনের আওতায় নতুন করে আনা হয়েছে ৩১৯টি জেলা। সবুজ জোন হলো করোনা সংক্রমণহীন জেলা। কমলা জোন মৃদু সংক্রমিত জেলা এবং লাল জোন অতি সংক্রমিত জেলা।
সবুজ জোন এলাকায় লকডাউনের বহু বিধি কার্যত শিথিল করা হয়েছে। এসব এলাকায় শর্তাধীনে যানবাহন চলাচল, শিল্পকারখানা , হাটবাজার খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে কমলা জোনেও লকডাউনের কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। তবে লাল জোন ও লালজোনের কনটেনমেন্ট এলাকাকে কড়া লকডাউনের আওতায় রাখা হয়েছে। সেখানে জারি হয়েছে কড়া নির্দেশনাও।

গতকাল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব প্রীতি সুদন নতুন করে দেশের লাল, কমলা ও সবুজ জোনের তালিকা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য সচিবকে পাঠান। তালিকা দেখে ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকার। তালিকায় দেখা যায়, পশ্চিমবঙ্গের লাল জোনের অন্তর্ভুক্ত ৪ জেলার সংখ্যা বাড়িয়ে ১০ জেলা করা হয়েছে। কমলা জোনের তালিকা ১১ থেকে কমিয়ে ৫ করা হয়েছে। সবুজ জোনের তালিকা অবশ্য ৮টিই রাখা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে লাল জোনের তালিকায় নতুন করে আরও ৬টি জেলা অন্তর্ভুক্ত করায় গতকালই এর প্রতিবাদ জানিয়েছে রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব বিবেক কুমার। দাবি তুলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের লালজোনের সংখ্যা পূর্বে ঘোষিত ৪টিই রাখা হোক। এতে সায় দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। এতে লালজোন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে মমতা সরকারের নতুন করে সংঘাত দেখা দিল।

পশ্চিমবঙ্গের লাল জোনে থাকা ৪ জেলার কনটেনমেন্ট জোনের সংখ্যা আরও বেড়ে করা হয়েছে ৪৪৪টি। এরমধ্যে কলকাতায় ২৬৪, হাওড়ায় ৭২টি ও উত্তর ২৪ গরগনায় ৭০টি। অন্যটি পূর্ব মেদিনীপুরে। এতে দেখা যাচ্ছে, করোনার সংক্রমণে এখনো শীর্ষে কলকাতা।

এর আগে মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের লাল জোনের ৪ জেলায় ৩৪৮টি এলাকাকে কনটেনমেন্ট এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল।