উহানে স্কুল খুলেছে, সিউলে স্বাভাবিক জীবন

চীনের উহানে বড় শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হয়েছে। উহান, হুবেই প্রদেশ, চীন, ৬ মে। ছবি: এএফপি
চীনের উহানে বড় শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হয়েছে। উহান, হুবেই প্রদেশ, চীন, ৬ মে। ছবি: এএফপি

চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হয়ে আসছে। আজ বুধবার থেকে সেখানের শিক্ষার্থীরা ক্লাসে যাওয়া শুরু করেছে। অন্যদিকে শ্রমিকদের কাজে ফেরার মধ্য দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে দক্ষিণ কোরিয়াও।

এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়, উহানের স্কুলগুলোতে এখনো মুখে মাস্ক পরে থার্মাল স্ক্যানার পার হয়ে সারিবদ্ধভাবে বিদ্যালয়ে ঢুকতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। বসার জায়গায় মিটার দূরত্ব রাখা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব মেনে ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষকেরাও। কেবল বড় শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুল খোলা হয়েছে। ছোট ও মাঝারি পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুল কবে খোলা হবে, তা এখনো বলা হয়নি।

উহানের কর্মকর্তারা বলেন, শিক্ষার্থী ও কর্মীদের অবশ্যই স্কুলে ফিরে যাওয়ার আগে ভাইরাসের পরীক্ষা করা হবে এবং ক্যাম্পাসগুলো জীবাণুমুক্ত ও পরিষ্কার করা হয়েছে। পুনরায় স্কুল খোলার প্রস্তুতি হিসেবে স্থানীয় স্কুলগুলো শিক্ষার্থীদের বসার ডেস্কগুলোর মধ্যে ব্যবধান বাড়িয়েছে।

১২১টি প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র স্কুল শিক্ষার্থীরা অনেক দিন পর ডিজিটাল ডিসপ্লের বদলে সাধারণ চক বোর্ডে ফিরে এসেছে। করোনারর প্রাদুর্ভাবের কারণে গত জানুয়ারি থেকে উহানের সব কিছু বন্ধ রাখা হয়।

চীনের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ওয়েবোতে একজন পোস্ট করেছেন, ‘অবশেষে স্কুল আবার খুলল। এই প্রথম স্কুলে ফিরে এসে আমি খুব খুশি, যদিও আমাকে ৮ মে থেকে মাসিক পরীক্ষায় বসতে হবে।’

স্কুল খোলার মধ্য দিয়ে একেবারে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গেল হুবেই প্রদেশের উহান। এই শহর থেকেই করোনা মহামারির উৎপত্তি। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে।চীনের অন্য শহরগুলোতে গত মাসেই স্কুল খুলতে শুরু করে।

সিউলে জাতীয় জাদুঘরের প্রদর্শনী হলে লাইন ধরে দাঁড়িয়েছেন মাস্ক পরা দর্শনার্থীরা। শুরু হয়েছে তাঁদের স্বাভাবিক জীবন। সিউল, দক্ষিণ কোরিয়া, ৬ মে। ছবি: এএফপি
সিউলে জাতীয় জাদুঘরের প্রদর্শনী হলে লাইন ধরে দাঁড়িয়েছেন মাস্ক পরা দর্শনার্থীরা। শুরু হয়েছে তাঁদের স্বাভাবিক জীবন। সিউল, দক্ষিণ কোরিয়া, ৬ মে। ছবি: এএফপি

আজ বুধবার থেকে কাজে ফিরেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মজীবী মানুষেরা। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে খুলে দেওয়া হয়েছে জাদুঘর ও গ্রন্থাগারগুলো। এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়, আজ প্রায় ১০০ জন দর্শনার্থী জাদুঘর পরিদর্শনে যান। প্রথম এক দম্পতি আসেন। তাঁদের ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।

জাদুঘর কর্তৃপক্ষ বলেছে, তাদের অনেক সহকর্মী আজ কাজে ফিরেছেন। জাদুঘর খুলে দিয়ে তারা উচ্ছ্বসিত, আনন্দিত।

দক্ষিণ কোরিয়ায় শুরুতেই এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা গিয়েছিল। তবে দেশটি বাধ্যতামূলক কোনো লকডাউন জারি করেনি। বরং মার্চ থেকে কড়াভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেছে। কর্মীদের বাসা থেকে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়। মার্চে স্কুলের নতুন বর্ষ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে দেওয়া হয়। কনসার্ট ও খেলাধুলার সব আয়োজন বাতিল করা হয় বা পিছিয়ে দেওয়া হয়। গ্রন্থাগার ও জাদুঘরের মতো ভিড় করার স্থান বন্ধ করে দেওয়া হয়। ধর্মীয় কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে যায। ব্যাপক হারে পরীক্ষা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মাধ্যমে ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে এনেছে দেশটি।

‘ট্রেস–টেস্ট–ট্রিট’ এই নীতি নিয়ে এখন ভাইরাস মোকাবিলায় সফল দেশটি। ৫ কোটি ১০ লাখ মানুষের দেশে করোনাভাইরাসে মারা গেছে ২৫০ জন। নতুন সংক্রমণের সংখ্যা খুবই কম। তিন দিন আগে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র ১৩ জন। এদের বেশির ভাগই বিদেশ থাকা আসা মানুষ। আজ বুধবার ২ জন সংক্রমিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ১০ হাজার ৮০৬।