এবার হোয়াইট হাউসে ঢুকে গেল করোনা

হোয়াইট হাউস। ছবি: রয়টার্স
হোয়াইট হাউস। ছবি: রয়টার্স

 মার্কিন প্রেসিডেন্টের আবাসন ও দপ্তর হোয়াইট হাউসে এবার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। হোয়াইট হাউসের দুজন কর্মীর শরীরে করোনাভাইরাস পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।

 প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একজন ব্যক্তিগত সহকারীর শরীরে ৮ মে করোনাভাইরাসের লক্ষণ দেখা যায়। যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেই জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে সংক্রমিত কোনো ব্যক্তির সংযোগ ঘটেনি। এর পর হোয়াইট হাউসে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের প্রেস সেক্রেটারি কেটি মিলারের শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। কেটি মিলার হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টা স্টিফেন মিলারের স্ত্রী। এ নিয়ে হোয়াইট হাউসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, এমন সংক্রমণ যেকোনো জায়গায় ঘটতে পারে। আগে কেউ এমনটি দেখেনি।

হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ মার্ক মেডৌস জানিয়েছেন, হোয়াইট হাউসের জন্য অতিরিক্ত কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সংক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য অতিরিক্ত পদক্ষেপের বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি। এদিকে ৮ মে হোয়াইট হাউসে রিপাবলিকান দলের আইণপ্রণেতারা মাস্ক ছাড়াই সভা করেছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও সাবেক মার্কিন সৈনিকদের এক অভিবাদন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। সেখানে তাঁকেও মাস্ক পরতে দেখা যায়নি।

সারা বিশ্বের মধ্যে আমেরিকায় করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে এ পর্যন্ত বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সারা বিশ্বের প্রায় তিন লাখ মানুষের মধ্যে আমেরিকাতেই নিশ্চিত করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে ৭৮ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। করোনা সন্দেহে বা হিসেবের বাইরে অনেক মৃত্যুর ঘটনা থেকে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে দেশটিতে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুর তালিকায় আরও তিন বাংলাদেশির নাম যোগ হয়েছে। তাঁরা হলেন-সামছুল হক, আবু তাহের ও সাব্বির খান। এ নিয়ে ৮ মে পর্যন্ত আমেরিকায় করোনায় সংক্রমিত হয়ে ২৪২ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হলো।

প্রায় দুই মাস ধরে চলা লকডাউন নগরীতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাইরে আসছে লোকজন। চেষ্টা করছেন জীবনকে স্বাভাবিক ছন্দে নিয়ে আসার জন্য। ম্যানহাটন থেকে ছবিটি তুলেছেন হৃদয় অনির্বাণ খন্দকার
প্রায় দুই মাস ধরে চলা লকডাউন নগরীতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাইরে আসছে লোকজন। চেষ্টা করছেন জীবনকে স্বাভাবিক ছন্দে নিয়ে আসার জন্য। ম্যানহাটন থেকে ছবিটি তুলেছেন হৃদয় অনির্বাণ খন্দকার

নিউইয়র্কে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলেই সবাই মনে করছেন। গত এক সপ্তাহ থেকে গড়ে ২০০ জনের কাছাকাছি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে প্রতিদিন। নগরীর মেয়র বিল ডি ব্লাজিও বলেছেন, এভাবে চলতে থাকলে আগামী সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকেই আমরা এমন এক অবস্থায় পৌঁছাতে পারব, যেখান থেকে সবকিছু আবার চালু করে স্বাভাবিক জীবনের পথে হাঁটতে পারব। ধাপে ধাপে বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে ব্যবসা খাত খুলে দেওয়ার কথা বললেও ব্লাজিও কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যবসা খাতের কথা এ ক্ষেত্রে উল্লেখ করেননি। নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের পক্ষ থেকে ঘরে থাকার আদেশ এখনো জারি আছে। ১৫ মে পর্যন্ত রাজ্য গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোর এ আদেশ জারি থাকবে।

এদিকে নিউইয়র্কে শিশুদের মধ্যে অজানা সংক্রমণ নিয়েও উদ্বেগ শুরু হয়েছে। কাওয়াসাকি অসুখের মতো রাজ্যে এমন ৭৩টি শিশুর সংক্রমণটি করোনাভাইরাসের সঙ্গে সম্পর্কিত কি না এ নিয়ে কেউ নিশ্চিত হতে পারছেন না। গভর্নর জানিয়েছেন, এ নিয়ে মেডিকেল কমিউনিটি কাজ করছেন। নিউইয়র্কে এমন সংক্রমণে এর মধ্যে দুজন শিশুর মৃত্যু ঘটেছে।