চীনে আবার করোনার ঢেউ

ফাইল ছবি। ছবি: রয়টার্স
ফাইল ছবি। ছবি: রয়টার্স

চীনে আবার দেখা দিয়েছে করোনার সংক্রমণ। আজ সোমবার সে দেশে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে নতুন করে ১৭ জন সংক্রমিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্র উহান শহরে ৫ জন সংক্রমিত হয়েছেন।

আজ বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, চীনে এ নিয়ে দ্বিতীয় দফায় করোনার নতুন সংক্রমণ দুই অঙ্কে পৌঁছাল। এখানে উদ্বেগের বিষয় হলো যে চীনের উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় জিলিন প্রদেশের শুলান নগরে গুচ্ছাকারে করোনার সংক্রমণ ঘটছে।

করোনায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ফ্রান্স ও স্পেনের মতো ইউরোপীয় দেশগুলো যখন লকডাউন শিথিল করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবছে, এ সময় চীনে নতুন করে করোনার প্রাদুর্ভাব ঘটল।

বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, চীনের উহান ছিল বিশ্বজুড়ে ভাইরাস ছড়ানোর কেন্দ্র। তবে গত মাসে সেখানে নতুন করে সংক্রমণের ঘটনা ঘটেনি। সেখানে গত দুই দিন ধরে আবার সংক্রমণের ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে। এ ঘটনাকে করোনার সংক্রমণের আরেকটি তরঙ্গ বলে সতর্ক করা হচ্ছে।

এর আগে ভাইরাস ছড়ানো ঠেকাতে উহানে কঠোর লকডাউন জারি করা হয়। সম্প্রতি সেখানে লকডাউন শিথিল হতে শুরু করে। সেখানকার একজন কর্মকর্তা বলেন, রোগটি নিয়ন্ত্রণে ছিল। শিশুরা স্কুলে যাওয়া শুরু করেছিল এবং শহর থেকে বাইরে যাতায়াতের বাধা তুলে নেওয়া হয়েছিল।

উহানের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নতুন করে যাঁদের মধ্যে সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে, তাঁরা একই আবাসিক এলাকার বাসিন্দা। বেশির ভাগই বয়স্ক মানুষ। উপসর্গহীন কিছু রোগীও পাওয়া গেছে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, স্বাভাবিক জীবনে ফেরার জন্য তাড়াহুড়ো করতে গেলে রোগের দ্বিতীয় তরঙ্গ আঘাত হানতে পারে। ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত লকডাউন মেনে চলতে হবে।

সোমবার চীনের উত্তরপূর্ব অঞ্চলে আরও ৫ জনের সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। গত সপ্তাহে সেখানে ১১ জন লন্ড্রির কর্মীর সংক্রমণের খবর পাওয়া যায়। শুলান নামের শহরটি দ্রুত লকডাউন করে ফেলেছে কর্তৃপক্ষ। সেখানে প্রায় ৬৭ লাখ মানুষ বাস করে।

এএফপি জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শিকার হওয়া মানুষের সংখ্যা ৪০ লাখ পার হয়ে গেছে এবং ২ লাখ ৮০ হাজার মানুষ মারা গেছেন। বৈশ্বিক অর্থনীতি নড়বড়ে হয়ে গেছে। চীনে সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা প্রায় ৮৩ হাজার। সেখানে ৪ হাজার ৬০০ মানুষ মারা গেছেন। দেশটিতে প্রায় এক মাসের মতো সময়ে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর ঘটনা নেই। সেখানে ধীরে ধীরে সবকিছু স্বাভাবিক হচ্ছে।

চীনে ভাইরাসটিতে প্রথমবারের মতো আবির্ভূত হওয়ার পর ভাইরাসটি কমিয়ে আনার এবং প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে তথ্য গোপন করার জন্য দেশে এবং বিদেশে সমালোচনার মুখে পড়েছে দেশটি। সেখানে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।

বেইজিং জোর দিয়ে বলেছে, তারা সবসময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অন্যান্য দেশকে সময় মতো তথ্য দিয়েছে।