দেশের অধিকাংশ এলাকা থেকে জরুরি অবস্থা তুলে নিল জাপান

শিনজো আবে। ছবি: রয়টার্স
শিনজো আবে। ছবি: রয়টার্স

জাপান সরকার দেশের অধিকাংশ এলাকা থেকে জরুরি অবস্থা তুলে নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের এ সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন। আজ থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে সাতটি জেলায় জরুরি অবস্থা জারি করে জাপান সরকার। পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতির অবনতি হয়ে চলার মুখে জরুরি অবস্থা সারা দেশে সম্প্রসারিত করে নেওয়া হয় এবং চলতি মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত তা বলবৎ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়।

তবে করোনাভাইরাস সামাল দেওয়ার প্রচেষ্টায় বিগত কয়েক সপ্তাহের অগ্রগতির মুখে সরকার এখন দেশের ৪৭টি জেলার মধ্যে ৩৯টি জেলায় জরুরি অবস্থা তুলে নিয়েছে। এর আগে সরকারের একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে জাপানের ৩৯টি জেলায় জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার সুপারিশ করেছিল।

আজকের সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী আবে উল্লেখ করেন, এই জেলাগুলোতে করোনাভাইরাসের বিস্তার সামাল দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত প্রতিরোধব্যবস্থা কার্যকর করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, সংক্রমণের সাম্প্রতিক সংখ্যা এবং স্থানীয় পর্যায়ের চিকিৎসা–সুবিধা ও পরীক্ষাব্যবস্থা বিবেচনা করে বিশেষজ্ঞ ও সরকারি কর্মকর্তারা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। তবে জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়া সত্ত্বেও সতর্কতা বজায় রাখার আহ্বান সেই সব এলাকার জনগণের প্রতি তিনি জানিয়েছেন। টোকিও, ওসাকাসহ অন্য যে আটটি জেলায় জরুরি অবস্থা এখনো বহাল আছে, সেই সব এলাকায়ও পরিস্থিতির অগ্রগতি বিবেচনা করে আগামী সপ্তাহে জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার ইঙ্গিত তিনি দিয়েছেন।

করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আনায় জাপানের এ সাফল্যের পেছনে জনগণের অবদানের উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে লোকজন ঘরে অবস্থান করায় এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ মেনে চলায় নতুন সংক্রমণের সংখ্যা হ্রাস পাওয়া লক্ষ করা গেছে। তবে জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়া হলেও এসব পদক্ষেপ বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তার কথা নাগরিকদের তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। একই সঙ্গে করোনাভাইরাসের আরেকটি ঢেউ আঘাত হানার আশঙ্কাও তিনি নাকচ করে দেননি। তিনি বলেছেন, সে রকম অবস্থা দেখা দিলে সরকার আবারও জরুরি অবস্থা ঘোষণা করবে।

জাপানজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৬ হাজার অতিক্রম করে যাওয়ার মুখে এ পদক্ষেপ সরকার গ্রহণ করল। জাপানে এ পর্যন্ত ৭০০–এর বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। তবে দিন দশেক ধরে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যার হিসাবে লাগাম টেনে ধরা—উভয় ক্ষেত্রেই আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি লক্ষ করা যায়। টোকিওতে যেমন আজ ৩০টি নতুন সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে পরপর ১২ দিন ধরে নতুন সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার সংখ্যা এক শর নিচে সীমাবদ্ধ আছে।