করোনা আক্রান্তে চীনকে টপকে গেল ভারত

করোনাভাইরাস। ছবি: রয়টার্স
করোনাভাইরাস। ছবি: রয়টার্স

যে দেশে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি, সংক্রমণের সংখ্যার দিক থেকে সেই চীনকে ছাড়িয়ে গেল ভারত। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৪ হাজার নতুন সংক্রমণের ফলে ভারতে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৬ হাজারের সামান্য কম। তবে চীনের তুলনায় ভারতে মৃত্যুর হার অনেকটাই কম।

এক সপ্তাহ ধরে ভারতে প্রতিদিন সংক্রমিত হচ্ছেন সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষ। তাঁদের অধিকাংশই মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, গুজরাট, দিল্লি ও পশ্চিমবঙ্গে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৯৭০ নতুন সংক্রমিত হওয়ায় শনিবার দেশে মোট করোনাক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৫ হাজার ৯৪০। চীনে মোট সংক্রমিত হয়েছিলেন ৮৪ হাজার ৩০৮ জন। সম্প্রতি ওই দেশে নতুন করে কয়েকজনের শরীরে করোনাভাইরাস দেখা গেলেও ভারতের চেয়ে সংখ্যা এখনো কম। চীনকে টপকে করোনা সংক্রমণের বৈশ্বিক তালিকায় ভারত উঠে এল একাদশ স্থানে।

তবে চীনের তুলনায় ভারতে মৃত্যুর হার অনেকটাই কম। চীনে যেখানে মৃত্যুর হার ৫ দশমিক ৫ শতাংশ, ভারতের হার সেখানে ৩ দশমিক ২ শতাংশ। ভারতে ইতিমধ্যেই ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

ভারতের সবচেয়ে খারাপ হাল মহারাষ্ট্রের। শুধু এই রাজ্যেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৯ হাজারের বেশি, যা কিনা দেশের মোট আক্রান্তের এক-তৃতীয়াংশ। দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২ হাজার ৭৫২। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গেছেন ১ হাজারের বেশি। মৃত্যুর দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে গুজরাট (৬০৬) হলেও সংক্রমণের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তামিলনাড়ু (১০ হাজার)। দিল্লির হাল এখনো খারাপই। এখানে মোট সংক্রমিত ৮ হাজার ৮৯৫। মারা গেছেন ১২৩ জন। পশ্চিমবঙ্গকে নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের টানাপোড়েন অব্যাহত। কেন্দ্রীয় হিসাবে মৃতের সংখ্যা ২২৫, রাজ্যের হিসাবে ১৫৩।

শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে জানান, করোনা মোকাবিলায় তিনি ভারতের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে চান। ভারতকে ভেন্টিলেটর দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘করোনার ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রেও আমরা একে অন্যের পাশে দাঁড়াব।’ এর পরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এই সংকটে একে অপরের পাশে দাঁড়িয়ে সুস্থ পৃথিবী গড়ার লক্ষ্যে কাজ করা প্রয়োজন।

করোনা ভারতের অর্থনীতিকেও বিপন্ন করে তুলেছে। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী মোদি ২০ লাখ কোটি রুপির আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। এই প্যাকেজ নিয়ে অবশ্য বিরোধীরা সমালোচনায় মুখর। তাঁদের দাবি, অধিকাংশ প্রকল্পই পুরোনো ও চলমান। বাজেটে ঘোষিত। নতুনভাবে তা উপস্থাপিত। মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, সাবেক অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরমসহ কংগ্রেসের অন্য নেতারা প্রতিদিন নতুন করে প্রণোদনা প্যাকেজের ‘অসারত্ব’ দাবি করছেন। এই অবস্থায় রাহুল শনিবার সরকারকে নতুন করে মনে করিয়ে দেন, গরিবদের হাতে সরাসরি টাকা দেওয়া না গেলে করোনা সংকট দেশে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনবে। যে সমস্যা দেখা দেবে, তা সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না। রাহুল শনিবার বলেন, গরিব কৃষক, শ্রমিকদের এখন টাকার প্রয়োজন। তাঁদের ব্যাংক খাতে সরাসরি টাকা ফেলুন। তাঁরা ঋণ চান না। ঋণ দিয়ে অবস্থা ফেরানো যাবে না।