জাপানের আরও তিন জেলা জরুরি অবস্থা মুক্ত

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। ছবি: রয়টার্স
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। ছবি: রয়টার্স

সারা দেশে করোনা পরিস্থিতির অব্যাহত অগ্রগতির মুখে জাপান সরকার গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের পশ্চিমাঞ্চলের আরও তিনটি জেলা থেকে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে গতকাল সন্ধ্যায় প্রচারিত এক ঘোষণায় সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। গত মাসে সারা দেশ জুড়ে আরোপিত জরুরি অবস্থা এর আগে ৩৯টি জেলা থেকে তুলে নেওয়া হয়। জরুরি অবস্থার আওতাধীন অবশিষ্ট পাঁচটি জেলা এখন হচ্ছে টোকিও ও রাজধানীর তিন প্রতিবেশী এবং উত্তরের হোক্কাইদো। এই কটি জেলা জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার শর্তাবলি এখনো পর্যন্ত পূরণ করতে না পারলেও পরিস্থিতির সার্বিক অগ্রগতি সেখানেও লক্ষণীয় হয়ে উঠেছে। ফলে আগামী সপ্তাহে সারা দেশ জরুরি অবস্থা মুক্ত হতে পারবে বলে জাপানে অনেকেই এখন আশা করছেন।

করোনাভাইরাস সামাল দেওয়ায় জাপানের এই সাফল্যকে অনেকেই চমকপ্রদ হিসেবে দেখছেন। তবে অন্যদিকে আবার করোনা পরবর্তী সময়ে দেশের অর্থনীতি কোনো পথে যাবে তা নিয়ে উদ্বেগ ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। জাপানের স্বাস্থ্য, শ্রম ও কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের গতকাল প্রকাশিত উপাত্তে দেখানো হয়েছে যে করোনাভাইরাসের ফলে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দার কারণে দেশে এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। বিশেষ করে এপ্রিল মাসে জরুরি অবস্থা জারি হওয়ার পর লোকজনকে ঘরবন্দী থাকতে হওয়ায় ছোট ও মাঝারি আকারের অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে চাকরি হারানো মানুষের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে। সরকারের ঘোষিত প্রণোদনা সহায়তা সত্ত্বেও এ রকম অনেক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হচ্ছে না এবং ভবিষ্যতে দেউলিয়া হয়ে পড়া কোম্পানির সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থনীতির বিশেষজ্ঞরা।

এদের এ রকম আশঙ্কার হতাশা জাগানো ছবি ফুটে উঠেছে মধ্য জাপানের নাগোইয়া শহর-ভিত্তিক চুবু সামাজিক ও অর্থনৈতিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের করা এক হিসাবে। এতে বলা হয়েছে, এপ্রিল মাস থেকে শুরু করে আগামী বছর মার্চ মাস পর্যন্ত এক বছর সময়ে জাপানে ৩০ লাখের বেশি চাকরির সুযোগ হারিয়ে যেতে পারে। ফলে করোনার বিপদ কেটে যেতে শুরু করলেও আসন্ন নতুন বিপদ নিয়ে জাপানের নীতি নির্ধারকদের এখন ভাবতে হচ্ছে।