খাসোগির খুনিদের ক্ষমা করলেন ছেলেরা, কারণটা কী

সৌদির সাংবাদিক জামাল খাসোগি। ছবি: এএফপি
সৌদির সাংবাদিক জামাল খাসোগি। ছবি: এএফপি

সৌদি আরবের সাংবাদিক জামাল খাসোগির ছেলেরা বলেছেন, তাঁরা তাঁদের বাবার খুনিদের ক্ষমা করে দিয়েছেন।আজ শুক্রবার জামাল খাসোগির ছেলেদের কাছ থেকে এমন ঘোষণা আসে। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।কানাঘুষা রয়েছে, বাবার খুনিদের এই ক্ষমা করে দেওয়ার পেছন মোটা অঙ্কের আর্থিক লেনদেন জড়িত।

জামাল খাসোগির ছেলে সালাহ খাসোগি টুইটারে লিখেছেন, 'আমরা শহীদ জামাল খাসোগির ছেলেরা ঘোষণা করছি, যাঁরা আমাদের বাবাকে হত্যা করেছেন, তাঁদের আমরা ক্ষমা করে দিয়েছি।'

সালাহ সৌদি আরবেই থাকেন। তাঁর কাছ থেকে আসা ক্ষমার এই ঘোষণার আইনগত পরিণতি কী হবে, তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়।

সাংবাদিক জামাল খাসোগি একসময় সৌদির রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। পরে তিনি সৌদির রাজপরিবারের কড়া সমালোচক হয়ে ওঠেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার কলামিস্ট জামাল খাসোগিকে ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদির কনস্যুলেটের ভেতরে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। হত্যার পর তাঁর লাশ কেটে টুকরো টুকরো করে গায়েব করে দেওয়া হয়।

জামাল খাসোগির হত্যাকাণ্ড বিশ্বজুড়ে প্রচণ্ড আলোড়ন সৃষ্টি করে। এই হত্যাকাণ্ডের জেরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে সৌদির রাজপরিবার, বিশেষ করে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এই হত্যাকাণ্ড তাঁর নির্দেশেই সংঘটিত হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারাও তেমন ইঙ্গিত দেন।

তুরস্ক জানায়, সৌদি আরব থেকে পাঠানো দেশটির ১৫ জন এজেন্ট এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত। প্রবল চাপের মুখে সৌদি আরব জামাল খাসোগি হত্যার বিচার শুরু করার ঘোষণা দেয়। হত্যার অভিযোগে তারা ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে।

গত বছরের ডিসেম্বরে দেশটির সরকারি আইনজীবী জানান, ১১ আসামির মধ্যে ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। তিনজনকে দেওয়া হয়েছে ২৪ বছরের কারাদণ্ড। আর বাকিরা খালাস পেয়েছেন। জামাল খাসোগি হত্যায় সৌদির বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে শুরু থেকেই বর্হিবিশ্বে সন্দেহ সৃষ্টি হয়।

তবে জামাল খাসোগির ছেলে সালাহ তখন বলেন, সৌদির বিচারব্যবস্থার ওপর তাঁর পূর্ণ আস্থা আছে। যাঁরা এ নিয়ে কথা বলছেন, তাঁদের সমালোচনা করেন তিনি।

গত এপ্রিলে ওয়াশিংটন পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানায়, সালাহসহ জামাল খাসোগির অন্য সন্তানেরা সৌদি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লাখ লাখ ডলার মূল্যের বাড়ি পেয়েছেন। এ ছাড়া তাঁরা মাসে মাসে হাজারো ডলার পাচ্ছেন।

তবে ওয়াশিংটন পোস্টের এই প্রতিবেদন নাকচ করেন সালাহ। একই সঙ্গে আর্থিক সুবিধা পাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।