পছন্দ না হলে আমাকে গুলি করুন, উসকানি দেবেন না: মমতা
ঘূর্ণিঝড় আম্পান নিয়ে বিরোধী দলের 'নেতিবাচক' ভূমিকায় ভীষণ চটেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। গতকাল শনিবার রাজ্য সচিবালয় নবান্নে তিনি অভিযোগ করেন, বিরোধীদের একাংশ মানুষকে উত্ত্যক্ত করছে, উসকানি দিচ্ছে। ক্ষুব্ধ মমতা বলেন, 'পছন্দ না হলে আমাকে গুলি করুন। নইলে আমার মাথা কেটে নিন। কিন্তু উসকানি দেবেন না।'
মমতা বলেন, 'আমি ও আমার দল তিন দিন ধরে সারা রাত জেগে কাজ করেছি। ঘুমাইনি। দিন–রাত জেগে কাজ করেছি। তাই সব দলকে বলব, কিছু দিনের জন্য ক্ষান্ত হন, কাজ করতে দিন। কিন্তু উসকানি দেবেন না। আর কেউ উসকানিতে কান দেবেন না। আমি ও আমার দল আপনাদের জন্য সর্বতো চেষ্টা করে যাচ্ছি। একটু সময় দিন।'
আম্পানের ধকল এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের ৬ জেলার বিধ্বস্ত এলাকা। বিশেষ করে এখনো কলকাতা মহানগর ও সুন্দরবন অঞ্চল বিছিন্ন হয়ে আছে। এসব এলাকায় শত শত গাছ উপড়ে পড়ে আছে। ভেঙে গেছে বিদ্যুতের খুঁটি ও মোবাইল টাওয়ার।এতে বন্ধ হয়ে গেছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে টেলিফোন ও ইন্টারনেট যোগাযোগ।
চার দিন পর এখনো স্বাভাবিক হয়নি কলকাতাসহ আম্পান বিধ্বস্ত এলাকা। রাজ্য সরকার কলকাতাসহ রাজ্যের ঘূর্ণিঝড়–বিধ্বস্ত এলাকায় স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে আনতে নিয়োগ করেছে জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা দল।
পানি ও বিদ্যুতের দাবিতে গতকাল কলকাতা শহরের অন্তত ৫০টি স্থানে বিক্ষোভ করে স্থানীয় লোকজন। তারা সড়কে গাছ ফেলে, বাঁশ দিয়ে অবরোধ করে। দাবি তোলে, 'অবিলম্বে বিদ্যুৎ চাই, পানি চাই।'
এ নিয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের সংঘর্ষও হয়। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকণালয় কলকাতায় স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে আনতে সেনাবাহিনীর সহায়তা চায়। গতকাল সন্ধ্যায় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড কলকাতাকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে ৫টি সেনা দল নামা। তারা সন্ধ্যার দিকে কলকাতার রাস্তাঘাট পরিষ্কারে অভিযান শুরু করে।
গতকাল সেনা সদস্যরা টালিগঞ্জ, বালিগঞ্জ, ডায়মন্ড হারবার, বেহালা, রাজারহাট, নিউটাউন পরিস্কার করার কাজ করেন। অন্যদিকে জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা দলও এই অভিযানে শামিল হয়।
মমতা এদিন কলকাতার বিদ্যুৎ সরবরাহ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সিইএসসির কর্নধার সঞ্জীব গোয়েংকার সঙ্গে কথা বলেন। অবিলম্বে কলকাতায় বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার অনুরোধ জানান তিনি।