করোনায় বড় দেশগুলো কি কিছু শিখবে?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ছবি: এএফপি ও রয়টার্স
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ছবি: এএফপি ও রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও রাশিয়া—বিশ্বের এই তিন ক্ষমতাধর রাষ্ট্র এখন নতুন করোনাভাইরাসে কাবু হয়ে পড়েছে। আক্রান্ত যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। কিন্তু আকারে ও ক্ষমতায় অনেক ছোট দেশ আবার খুব দক্ষতার সঙ্গে সামলাতে পারছে করোনা পরিস্থিতি। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, পাঠশালা খুলে ছোটদের কাছেই শিক্ষা নেওয়ার মতো পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বড়রা!

ট্রাম্পের দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা এরই মধ্যে ৯৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ১৬ লাখের বেশি মানুষ।

ওদিকে যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত আড়াই লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু ৩৬ হাজার ছাড়িয়েছে। এমনকি দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও করোনায় আক্রান্ত হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পৌঁছে গিয়েছিলেন।

আর রাশিয়ায় করোনার কারণে এই প্রথম সবচেয়ে মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দেশটিতে এক দিনে ১০ হাজারের বেশি মানুষের করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ঘটনাও ঘটতে দেখা গেছে। দেশটিতে করোনায় সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা এরই মধ্যে ৩ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মৃত্যুহার তুলনামূলক কম হলেও স্বাস্থ্য খাতের বেহাল দশা নিয়ে আলোচনায় আছে রাশিয়া।

অন্যদিকে প্রথম করোনা মহামারিতে আক্রান্ত হওয়া চীন বলছে, তাদের দেশে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮২ হাজারের কিছু বেশি মানুষ। মৃত্যু ৪ হাজার ৬০০-এর কিছু বেশি। তবে তথ্য লুকানোয় দেশটির ‘সুখ্যাতি’র কারণে এমন সংখ্যায় অবিশ্বাসী মানুষ নেহাত কম নয়।

বড় দেশগুলোর কথা তো অনেক হলো। এবার কিছু ছোট দেশের বিষয়ে জানা যাক। আকার, জনসম্পদ, অর্থ ও অন্যান্য সক্ষমতায় ওপরের দেশগুলোর তুলনায় অনেক পিছিয়ে থাকলেও, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এসব দেশই তুলনায় অনেক ভালো ফল করেছে। এসব দেশে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যাও অনেক কম।

আসুন , জেনে নেওয়া যাক করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এগিয়ে থাকা কিছু ছোট দেশের বৃত্তান্ত:

ছবিটি প্রতীকী। ছবি: রয়টার্স
ছবিটি প্রতীকী। ছবি: রয়টার্স

জর্জিয়া
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত ছিল এই দেশ। রাশিয়ার প্রতিবেশী জর্জিয়ায় নতুন করোনাভাইরাস সেইভাবে হানা দিতে পারেনি। দেশটির জনসংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ, আকারেও ছোট। এখন পর্যন্ত দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন মোটে ৭০০ মানুষ। মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের।

করোনা পরিস্থিতি সফলভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জর্জিয়ার অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছে। আকারে ছোট ও জনসংখ্যা কম থাকার সুবিধাটি শুরু থেকেই কাজে লাগিয়েছে দেশটির সরকার। গত জানুয়ারির শেষ থেকেই দেশটির বিমানবন্দরগুলোতে যাত্রীদের তাপমাত্রা মাপা এবং এ-সংক্রান্ত নানা স্বাস্থ্যগত বিধি-নিষেধ জারি করা হয়েছিল। এর পরপরই আন্তর্জাতিক পর্যটনেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক আগ থেকেই জর্জিয়া লকডাউনের মতো অভ্যন্তরীণ বিধিনিষেধ জারি করে দিয়েছিল।

এসব অগ্রিম ব্যবস্থার সুফলও হাতেনাতে পেয়েছে জর্জিয়া। তাই এখনই লকডাউন তুলে দিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরে আসার কার্যক্রম শুরু করতে পারছে দেশটি।

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত জর্জিয়ার রাষ্ট্রদূত ডেভিড বিকরাদজের মতে, শুরুতেই সাবধান হওয়ায় তাঁর দেশ করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে এগিয়ে থাকতে পেরেছে। জনগণও বুঝদার ছিল এবং সামাজিক নিয়ন্ত্রণমূলক নিয়মকানুনের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়েছে। এভাবেই করোনাকে ঠেকাতে পেরেছে জর্জিয়া।

ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ের রাজপথে এক ব্যক্তির তাপমাত্রা পরীক্ষা করছেন স্বাস্থ্যকর্মী। ছবি: রয়টার্স
ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ের রাজপথে এক ব্যক্তির তাপমাত্রা পরীক্ষা করছেন স্বাস্থ্যকর্মী। ছবি: রয়টার্স

ভিয়েতনাম
দক্ষিণ কোরিয়ার মতো সমৃদ্ধিশালী গণতন্ত্র ভিয়েতনামে নেই। আবার চীনের মতো ব্যাপক সামরিক ক্ষমতাও নেই একনায়কশাসিত দেশটির। কিন্তু করোনাভাইরাস ঠেকাতে দুর্দান্ত সফল ভিয়েতনাম।

দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে মাত্র ৩১৮ জন। ৫০ জন বাদে বাকিরা সবাই সুস্থও হয়ে গেছে। মৃত্যুর কোনো ঘটনা ঘটেনি।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের হ্যানয়ভিত্তিক কর্মকর্তা ম্যাথু মুরে মনে করেন, পর্যাপ্ত টেস্ট ও কন্টাক্ট ট্রেসিংয়ের মাধ্যমেই করোনাকে ঠেকাতে পেরেছে ভিয়েতনাম। সরকারের সব কর্মসূচিতে সাধারণ জনগণেরও সমর্থন ছিল। তাই সরকার ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় করোনাকে দূরে রাখতে পেরেছে ভিয়েতনাম।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্ব বাণিজ্যেও সুবিধাজনক অবস্থানে আছে ভিয়েতনাম। অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউটের বিশ্লেষক হুং লে থু বলছেন, করোনাভাইরাস ঠেকাতে সফল হওয়ায় বিশ্বমঞ্চে ভিয়েতনামের সুনাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে দেশের ভেতরেও সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, করোনা মোকাবিলায় ঘানার নিজস্ব কিছু কৌশল ভালো কাজ দিয়েছে। ছবি: রয়টার্স
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, করোনা মোকাবিলায় ঘানার নিজস্ব কিছু কৌশল ভালো কাজ দিয়েছে। ছবি: রয়টার্স

ঘানা
নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মহামারি ঘোষণা করার পর থেকেই অনেক বিশেষজ্ঞ আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন এই বলে, আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে এই মহামারি প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। কিন্তু অন্তত ঘানা সেই আশঙ্কাকে ভুল প্রমাণ করে দিয়েছে।

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ ঘানায় প্রায় তিন কোটি মানুষের বাস। আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার পর সবচেয়ে বেশি হারে করোনা টেস্ট হয়েছে ঘানায়। সরকারিভাবে এরই মধ্যে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষের করোনা টেস্ট হয়েছে দেশটিতে।

ঘানায় করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৬০০ মানুষের। মারা গেছে ২৮ জন। তবে দেশটির সরকার প্রচুর টেস্ট করার কারণে মহামারির বিস্তার নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশটির স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা অত্যন্ত কার্যকরভাবে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ঘানার নিজস্ব কিছু কৌশল ভালো কাজে দিয়েছে। এর মধ্যে একটি ছিল ‘পুল টেস্টিং’। এই পদ্ধতিতে রক্তের অনেকগুলো স্যাম্পল নিয়ে একসঙ্গে পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। যদি কোনো স্যাম্পলে করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়, শুধু সেই ক্ষেত্রেই সব স্যাম্পল আলাদাভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হয়।

লন্ডনভিত্তিক চিন্তন প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউসের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য কর্মসূচির পরিচালক ওসমান দার মনে করেন, জনমিতিগত দিক থেকে সুবিধা পেয়েছে ঘানা। দেশটির মোট জনসংখ্যার অধিকাংশই বয়সে তরুণ, মোটে ৩ শতাংশ মানুষের বয়স ৬৫ বছরের বেশি। তবে দেশটির সরকার শুরু থেকেই করোনা মোকাবিলায় অত্যন্ত আন্তরিক ছিল। করোনা মহামারি মোকাবিলার জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর নির্ভর না করে, জাতীয় বাজেট থেকেই অর্থ ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এই অপেক্ষাকৃত দরিদ্র দেশটির সরকার। ফলে অর্থের অভাবে কাজ থেমে থাকেনি।

লেবাননের বৈরুতে একটি ব্যাংকের সামনে চালানো হচ্ছে জীবাণুমুক্তকরণ কার্যক্রম। ছবি: এএফপি
লেবাননের বৈরুতে একটি ব্যাংকের সামনে চালানো হচ্ছে জীবাণুমুক্তকরণ কার্যক্রম। ছবি: এএফপি

কোস্টারিকা
গত ৬ মার্চ লাতিন আমেরিকার প্রথম দেশ হিসেবে কোস্টারিকায় করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত হয়েছিল। এর দুই মাস পরই ৫০ লাখ জনসংখ্যার দেশটি লকডাউনের মতো কঠোর পদক্ষেপ থেকে বের হতে শুরু করে দিয়েছে। দেশটিতে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত হয়েছে সাড়ে ৮০০রও কম। মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে করোনা প্রতিরোধে কোস্টারিকা অন্যতম উজ্জ্বল মডেল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

ইউনিভার্সিটি অব কোস্টারিকার শিক্ষক ইউলিয়ানো মার্টিনেজ-ফ্রানজোনি মনে করেন, মূলত দুটি কারণে কোস্টারিকা সফল হয়েছে। একটি হলো, দেশটির স্বাস্থ্য খাত অত্যন্ত শক্তিশালী। অন্যটি হলো, এই শক্তিশালী স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে পাশে ছিল দেশটির সরকার। এই দুই মিলেই করোনা পরিস্থিতি সফলভাবে সামলানো গেছে।

ইউলিয়ানো মার্টিনেজ-ফ্রানজোনির মতে, দেশটির সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা আছে। রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রতি জনসাধারণের আস্থা থাকায়, তারা সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতি একাত্ম থেকেছে এবং প্রতিটি পদক্ষেপ মেনে চলেছে। এর ফলে লাতিন আমেরিকার একমাত্র দেশ হিসেবে সবচেয়ে সুশৃঙ্খলভাবে করোনাভাইরাস ঠেকানোর কাজ করতে পেরেছে কোস্টারিকা।

একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, দক্ষিণ আমেরিকার অন্য দেশের চেয়ে বেশ কিছু বিষয়ে আলাদা কোস্টারিকা। এই দেশে সবার জন্য অর্থাৎ সর্বজনীন একটি স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা আছে। এ ছাড়া দেশটিতে পানি ও বিদ্যুতের সেবা প্রদানের বিষয়টি কখনোই বেসরকারীকরণ হয়নি। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এমন কিছু জনবান্ধব ব্যবস্থার কারণেই নতুন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে হারতে হয়নি কোস্টারিকাকে।

লেবানন
মহামারির শুরুতে লেবানন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটে ডুবে ছিল। এর মধ্যেও প্রায় ৭০ লাখ জনসংখ্যার দেশটির সরকার শুরু করে দেয় মহামারি প্রতিরোধের কর্মকাণ্ড। দেশটিতে কঠোর শাটডাউন বাস্তবায়ন করা হয়। ফেব্রুয়ারিতে প্রথম আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার প্রায় এক সপ্তাহ পর শাটডাউন কার্যকর করা হয়। বর্তমানে দেশটিতে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত হয়েছে ৯০০ জনের কিছু বেশি মানুষ। আর মৃত্যু হয়েছে মাত্র ২৬ জনের।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, করোনা মহামারি আসার আগে থেকেই সংকটে ছিল লেবাননের মানুষ। তাই নতুন সংকট সামাল দেওয়ার মানসিক প্রস্তুতি নিতে তাদের বেগ পেতে হয়নি। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল সরকারের নেওয়া ত্বরিত পদক্ষেপ। এ কারণে করোনা সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েনি।

তবে এই পরিস্থিতিতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লেবাননের অর্থনীতি। এই পরিস্থিতি থেকে উঠে আসার জন্য চলতি মাসের মাঝামাঝি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করেছিল লেবানন। তবে ঠিক ওই সময়েই করোনায় সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। ফলে ফের কয়েক দিনের কঠোর লকডাউন আরোপ করেছে লেবাননের সরকার।

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন। ছবি: রয়টার্স
নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন। ছবি: রয়টার্স

নিউজিল্যান্ড
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় নিউজিল্যান্ডের সফলতার গল্প এরই মধ্যে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। গত মার্চের শেষের দিকে দেশটিতে লেভেল ফোর লকডাউন বা সবচেয়ে কঠোর বিধিনিষেধের লকডাউন আরোপ করা হয়েছিল। তখন দেশটিতে করোনায় সংক্রমিত ছিল মাত্র ১০২ জন।

এর ঠিক ছয় সপ্তাহ পর নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন দেশটিতে আরোপ করা কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করা শুরু করেন। ৫০ লাখ জনসংখ্যার দেশটিতে করোনায় সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা এখন প্রায় দেড় হাজার। আর মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, সঠিক সময়ে ত্বরিত পদক্ষেপ নেওয়াতেই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা নিউজিল্যান্ডে এত কম রয়েছে।

এদিকে চলতি বছরের শেষদিকে দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কয়েক মাস আগের জরিপেও আভাস দেওয়া হয়েছিল, জেসিন্ডা আরডার্ন কঠোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। তবে করোনা পরিস্থিতি সফলভাবে সামাল দেওয়ায় এখন জেসিন্ডার প্রতি জনমানুষের সমর্থন বেড়ে গেছে অনেকখানি। প্রায় ৬৫ শতাংশ মানুষ এখন জেসিন্ডার প্রতি আস্থা রাখেন। সব মিলিয়ে বলাই যায়, করোনার সঙ্গে সঙ্গে ভোটের রেসেও এগিয়ে গেলেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী।

তথ্যসূত্র: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, রয়টার্স, ওয়াশিংটন পোস্ট, অ্যাজেন্ডা ডট জিই, কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্স, ব্লুমবার্গ, নিউইয়র্কার ও দ্য গার্ডিয়ান