আম্পানের পর এবার চোখ রাঙাচ্ছে নিসর্গ

ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ হানা দিতে পারে মহারাষ্ট্র ও গুজরাট উপকূলে। মুম্বাইয়ের জুহু সৈকতের দৃশ্য। ছবি: রয়টার্স
ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ হানা দিতে পারে মহারাষ্ট্র ও গুজরাট উপকূলে। মুম্বাইয়ের জুহু সৈকতের দৃশ্য। ছবি: রয়টার্স

আম্পানে ভারতে সংক্রমণের সংখ্যা দুই লাখ পেরোনোর মুহূর্তে করোনার দোসর হতে চলেছে ‘নিসর্গ’। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের কাছে বিধ্বংসী আম্পান যে চ্যালেঞ্জ খাড়া দিয়েছিল, মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের কাছে ঠিক সেই চ্যালেঞ্জ খাড়া করেছে আরব সাগরের ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ। আগামীকাল বুধবার দুপুর নাগাদ মহারাষ্ট্র, গুজরাট, গোয়া, কেরল ও লাক্ষা দ্বীপের বিস্তীর্ণ উপকূলবর্তী এলাকায় নিসর্গ আছড়ে পড়বে। ঝড়ের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটারের মতো।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মঙ্গলবার ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। জনগণকে সব ধরনের সাবধানতামূলক ব্যবস্থা নিতে তিনি অনুরোধ করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কথা বলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৩১টি দলকে দুই রাজ্যে মোতায়েন করা হয়েছে। প্রতি দলে ৪৫ জন করে সদস্য রয়েছেন। সমুদ্র ইতিমধ্যেই উত্তাল। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যেতে সতর্ক করা হয়েছে। সবাইকে সজাগ করে বলা হয়েছে, মুম্বাইয়ে সমুদ্রের ঢেউ দেড় মিটারের বেশি উঁচু হবে।

আম্পানের নামকরণ করেছিল থাইল্যান্ড, নিসর্গ নাম বাংলাদেশের দেওয়া। আম্পান পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশকে বিপর্যস্ত করে তোলার দুই সপ্তাহের মধ্যেই নিসর্গ চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে সেই দুই রাজ্য মহারাষ্ট্র ও গুজরাটকে, এই মুহূর্তে যারা করোনার মোকাবিলায় বিপর্যস্ত।

জার্মানি ও ফ্রান্সকে টপকে গত সোমবারেই বিশ্ব পর্যায়ে ভারত উঠে এসেছিল সপ্তম স্থানে। মঙ্গলবারও সেই ধারা অব্যাহত আছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ১৭১ জন। ফলে মোট সংক্রমণের সংখ্যা হলো ১ লাখ ৯৮ হাজার ৭০৬। মঙ্গলবারই আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখে পৌঁছে যাবে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ধারণা। মৃত্যু হয়েছে ৫ হাজার ২৭৩ জনের।

রাজ্যগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সঙিন অবস্থা মহারাষ্ট্রের। ইতিমধ্যেই সেখানে সংক্রমণের সংখ্যা ৭০ হাজার পেরিয়ে গেছে। দ্বিতীয় স্থানে তামিলনাড়ু (সাড়ে ২৩ হাজার), দিল্লির অবস্থান তৃতীয় স্থানে। ২০ হাজার ৮৩৪ জন রাজধানী-রাজ্যে আক্রান্ত। গুজরাট রয়েছে চতুর্থ স্থানে (১৭ হাজার ২০০)। সোমবার থেকে সারা দেশে জনজীবন প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। আগামী দুই সপ্তাহ তাই যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। সংক্রমণের আশঙ্কার মাঝে স্বস্তির ছোঁয়াও যে নেই, তা নয়। করোনায় আক্রান্ত হয়েও সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ছুঁতে চলেছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৯৫ হাজার ৫২৭ জন।