পুরোনো চেহারায় কলকাতা

কলকাতা পুরোনো চেহারায় ফিরেছে। লকডাউনের কারণে এত দিন কলকাতার চিত্র অন্য রকম ছিল। কিন্তু ৮ জুন কলকাতার অফিস, আদালত, হোটেল, রেস্তোরাঁ, শপিং মল, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান খুলে যায়। সেই সঙ্গে রাস্তায় বাস-মিনিবাস, ট্যাক্সি, উবার বেড়ে যাওয়ায় কলকাতা গতকাল আগের রূপে ফিরে আসে।

কলকাতা আগের রূপে ফিরলেও করোনার ছোবল থেকে মুক্ত হয়নি। কলকাতাসহ গোটা পশ্চিমবঙ্গে করোনার সংক্রমণ অব্যাহত আছে। প্রতিদিনই বেড়ে চলছে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা।

গতকাল কলকাতাসহ রাজ্যের অতি সংক্রমিত এলাকা বা কনটেনমেন্ট জোন ছাড়া খুলে যায় সবকিছু। রাস্তাঘাটে ফিরে আসে আগের চিত্র। শুরু হয় যানজট।

রাজ্য পরিবহন দপ্তর থেকে বলা হয়, গতকাল কলকাতায় সরকারি বাস চলেছে ১ হাজার ১০০টি, বেসরকারি বাস-মিনিবাস ২ হাজার ৭০০টি, বিভিন্ন ফেরিঘাটে জলযান ২৯টি, সিএনজি বা অটোরিকশা ৮ হাজার ১৫০টি ও ক্যাবসহ অন্যান্য ট্যাক্সি ৫ হাজার ২৬০টি। এ ছাড়া চলেছে কলকাতার উপকণ্ঠে ব্যাটারিচালিত যান।

গতকাল বিকেলে রাজ্য সচিবালয় নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা জানিয়ে দেন, পশ্চিমবঙ্গের কনটেনমেন্ট জোনের লকডাউন ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।

গত ৩১ মে ভারতে চতুর্থ দফার লকডাউন শেষ হয়। তারপর ভারত সরকার দেশের কনটেনমেন্ট জোনে লকডাউনের মেয়াদ ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়। তবে ওই সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ঘোষণা দেন, রাজ্যে ওই লকডাউনের মেয়াদ বহাল থাকবে আপাতত ১৫ জুন পর্যন্ত। সেই মেয়াদই গতকাল মমতা ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত বহাল থাকবে একধরনের কারফিউ। ওই সময় কেউ কনটেনমেন্ট জোনে ঘর থেকে বের হতে পারবে না।

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন, ধর্মীয় স্থানে একসঙ্গে ২৫ জনের বেশি ঢুকতে পারবে না। এ ছাড়া সেখানে ঢুকতে হবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে, হাত স্যানিটাইজ করে। মুখে পরতে হবে মাস্ক। আর শেষকৃত্যস্থলে একসঙ্গে ২৫ জনের বেশি মানুষকে ঢুকতে দেওয়া হবে না।

গতকাল কলকাতার বিভিন্ন পরিবহনে যাত্রীদের সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে দেখা যায়নি। যাত্রীদের হুড়োহুড়ি করে বাসে উঠতে দেখা গেছে। অনেকে বাসে গাদাগাদি করে চলেছে। ট্যাক্সি ও সিএনজিতে ৫ জন করে যাত্রী চলতে দেখা গেছে।

গতকাল রাজ্য দপ্তর থেকে প্রকাশিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে বলা হয়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৪২৬ জন। মারা গেছেন ৯ জন।

এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৬১৩ জন। মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪০৫ জন।