উপসর্গহীন রোগীদের মাধ্যমে করোনা ছড়ানোর ঘটনা বেশ কম: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

করোনাভাইরাস ছড়ানোর ক্ষেত্রে উপসর্গহীন রোগীরা বড় ধরনের উদ্বেগ সৃষ্টি করেছেন। যেহেতু এই রোগীদের মধ্যে উপসর্গ দেখা দেয় না, ফলে সঠিক প্রক্রিয়ায় আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিন বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়ে—এতদিন এমনটাই বলছিলেন গবেষকেরা। এখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, উপসর্গহীন রোগীদের মাধ্যমে করোনা ছড়ানোর ঘটনা বেশ কম। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এই চিত্র দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা মারিয়া ভ্যান কেরখোভে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিডিসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মোট কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত রোগীদের ৩৫ শতাংশের ক্ষেত্রে কোনো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে না। তবে গতকাল সোমবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মারিয়া ভ্যান কেরখোভে বলেছেন, এই উপসর্গহীন রোগীদের মাধ্যমে অন্য ব্যক্তিদের মধ্যে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা ‘বেশ দুর্লভ’।

মারিয়া বলেন, যেসব দেশে কঠোরভাবে কন্টাক্ট ট্রেসিং করা হয়েছে, সেসব দেশ থেকে তথ্য-উপাত্ত পাঠানো হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায়। সেগুলো বিশ্লেষণ করেই এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া গেছে। তবে এ বিষয়ে আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য অধিকতর তথ্যের বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। এর জন্য আরও বেশি দেশ থেকে তথ্য পাওয়া দরকার। এখনো পর্যন্ত পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এমন ধরন দেখা যাচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে সর্বসম্মত ও নিশ্চিত সিদ্ধান্ত নিতে হলে আরও গবেষণা প্রয়োজন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এখন বিভিন্ন দেশের উচিত উপসর্গযুক্ত ব্যক্তিদের করোনা পরীক্ষা করা এবং টেস্টে পজিটিভ হলে তাদের সঠিক প্রক্রিয়ায় আইসোলেশনে নেওয়া। বিশেষ করে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে কারা ছিলেন, তার খোঁজ বের করা অত্যন্ত জরুরি।

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার একপর্যায়ে উপসর্গহীন রোগীদের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানা যায়। সাধারণত বয়সে নবীন ও শারীরিকভাবে সুস্থ বেশ কিছু মানুষের দেহে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেলেও, কোভিড-১৯ রোগের কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি।

এদিকে সোমবার করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিংয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ড. তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস সাংবাদিকদের বলেন, ইউরোপে করোনাভাইরাস মহামারি অবস্থার উন্নতির দিকে। তবে সার্বিকভাবে বৈশ্বিক পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। গত ১০ দিনের ৯ দিনে বিশ্বজুড়ে ১ লাখের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে।

আমেরিকার জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যমতে বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত করোনায় শনাক্ত রোগী ৭০ লাখ ৬৫ হাজার ৫৯৭ জন। আর সোমবার রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৪ লাখ ৪ হাজার ২১ জন।