অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে না যেতে চীনের সতর্কবার্তা

ভ্রমণ সতর্কবার্তার রেশ কাটতে না কাটতেই চীন আবার তার দেশের শিক্ষার্থীদের অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে না আসার সতর্কতা জারি করল। মঙ্গলবার চীনের শিক্ষা ব্যুরোর এক বার্তায় এ খবর প্রকাশিত হয়। এতে অস্ট্রেলিয়ার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী বড় শিল্পটি ধাক্কা খেল বেশ জোরেশোরে।

চীনের শিক্ষা ব্যুরোর দাবি , অস্ট্রেলিয়ায় করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব চলাকালীন ‘বর্ণবাদী ঘটনার’ কারণে এই বিরল পদক্ষেপ নিল চীন। অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষার এই খাতটি চীনে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়। অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের এক নম্বর উৎস চীন। এই খাত থেকে বছরে প্রায় ১ হাজার ৯০০ কোটি ডলার আয় করে অস্ট্রেলিয়া। চীন সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই বিবৃতি প্রকাশের পর পর অস্ট্রেলিয়ান ডলারের দর এক শতাংশেরও বেশি কমে যায়। আগামী জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বিশেষ ব্যবস্থায় ফিরিয়ে আনতে যখন প্রস্তুতি নিচ্ছিল অস্ট্রেলিয়া তখন-ই এই ঘোষণা দিল চীন। পুনরায় প্রায় পনেরো লাখ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জুলাই মাসে ক্যাম্পাসে ফিরে আসবে বলে আশা করছে অস্ট্রেলিয়া।

অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষামন্ত্রী ড্যান তেহান বলেন, অস্ট্রেলিয়া বর্ণ, ধর্ম, জাতি, লিঙ্গ নির্বিশেষে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সম্মান করে। অস্ট্রেলিয়া করোনাভাইরাস সফল দেশ। এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করার জন্য বিশ্বের অন্যতম নিরাপদ দেশ এটি।

এর আগে গত শুক্রবার চীনের সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয় অস্ট্রেলিয়ায় ভ্রমণ না করতে এক সতর্কবার্তা জারি করে বলে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকে অস্ট্রেলিয়ায় বর্ণবাদ ক্রমবর্ধমান রয়েছে। চীনা ও এশীয় জনগণ অস্ট্রেলিয়ায় আর নিরাপদ নয়। তাঁদের ওপর বর্ণবাদী আক্রমণ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এ নিয়ে রোববার বাণিজ্যমন্ত্রী সাইমন বার্মিংহাম চীনের দাবিটিকে ‘বাস্তব ভিত্তিক নয়’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বের সর্বাধিক সাংস্কৃতিক ও অভিবাসী সমাজ বিদ্যমান রয়েছে।’

অস্ট্রেলিয়া চীনের কাছে করোনাভাইরাসের উৎস সম্পর্কে স্বাধীন নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করার পর থেকে চীন গত এপ্রিল মাস থেকে একধরনের বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করেছে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে।

এর আগে সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া থেকে রপ্তানি করা বার্লির ওপর ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কর বসিয়েছে চীন। তারপর স্থগিত করেছে অস্ট্রেলিয়া থেকে মাংস আমদানি। গত শুক্রবার চীনা পর্যটকদের অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণ না করতে সতর্কতা জারি করে।