রাজ্যপালের বাসভবনের একাংশকে কোয়ারেন্টিন সেন্টার করার দাবি

কলকাতার রাজ্যপালের অফিস ও বাসভবন রাজভবন। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
কলকাতার রাজ্যপালের অফিস ও বাসভবন রাজভবন। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, অবিলম্বে কলকাতার রাজ্যপালের অফিস ও বাসভবন রাজভবনের একাংশকে কোয়ারেন্টিন সেন্টারে রূপ দেওয়া হোক।

১৪ মৃতদেহের সৎকার নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও রাজ্যপালের বিতর্কের মধ্যে গতকাল রোববার কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এই দাবি করেন।

প্রতিটি রাজ্যের রাজ্যপালের দপ্তর ও বাসভবনকে বলা হয় ‘রাজভবন’। কলকাতায় ব্রিটিশ আমলে গড়া রাজভবন বিশাল এলাকাজুড়ে অবস্থিত।

বিশিষ্ট আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘রাজ্যপাল নিজেকে মানবিক বলে দাবি করছেন। তিনি যদি এতটাই মানবিক হয়ে থাকেন, তবে তাঁর তো অত বড় রাজভবনের প্রয়োজন নেই। রাজভবনের অর্ধেকটা করোনা চিকিৎসার জন্য ছেড়ে দিয়ে তাঁর মানবিকতার মুখটা দেখাক।’

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেছেন, ‘উনি (রাজ্যপাল) তো অধর্মের প্রতীক। কী করে ধর্মযুদ্ধে নামবেন? উনি তো ভারতবর্ষের সংবিধানবিরোধী কাজ করছেন?’

রাজ্যপালের হয়ে পাল্টা জবাব দিয়েছেন বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেছেন, ‘রাজ্যপাল কোন কথাটা সংবিধানের বাইরে বলেছেন, সেটা দেখানো হোক।’

গত বুধবার কলকাতা করপোরেশন বিশেষ গাড়িতে ১৪টি মৃতদেহ সৎকারের জন্য নিয়ে যায় দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়ার বোড়াল মহাশ্মশানঘাটে। গাড়ি থেকে মৃতদেহগুলো নামানো হয় অমানবিকভাবে। এতগুলো মৃতদেহ আনায় স্থানীয় লোকজন সন্দেহ করে। করোনায় আক্রান্ত মৃতদেহ সন্দেহ তারা শ্মশানে সৎকার করতে আপত্তি তোলে। পরে মৃতদেহগুলো গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার এনআরএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে।

শনিবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এক টুইটবার্তায় বলেন, ১৪টি মৃতদেহের সৎকার নিয়ে যে ঘটনা ঘটেছে, তা অমানবিক, হৃদয়হীন ঘটনা। সমাজের প্রথা অনুযায়ী শ্রদ্ধা ও সম্মানের সঙ্গে মৃতদেহের সৎকার করা উচিত। কিন্তু তা হয়নি। এই ঘটনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমাজের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

পরে রাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্র দপ্তর জানায়, ওই মৃতদেহগুলোর সঙ্গে করোনার কোনো যোগ নেই। ওগুলো বেওয়ারিশ।

এদিকে গতকাল কলকাতার নীলরতন সরকার হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, হাসপাতালে ভর্তি কোনো সন্দেহভাজন করোনা রোগীর মৃত্যু হলে তার লালারস পরীক্ষা করা হবে না। ফলে সৎকারের জন্য মৃত রোগীর লালারসের নমুনা পরীক্ষা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না। এ ক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির সৎকার করা হবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন মেনে, সরকারি নিয়ন্ত্রণে।