পশ্চিমবঙ্গে করোনার মধ্যে বিজেপির নির্বাচনী ঢাক

কলকাতা করপোরেশনের মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
কলকাতা করপোরেশনের মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

করোনা সংক্রমণের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে বেজে উঠেছে ২০২১ সালের রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের ঢাক। এই ঢাক বাজাতে শুরু করেছে রাজ্য বিজেপি। তবে তৃণমূল ঘোষণা দিয়েছে, বিজেপি যতই বাজাক নির্বাচনী ঢাক, তাতে ফল পাবে না। ঢাক ফেটে যাবে।

পশ্চিমবঙ্গে এখন দ্বিতীয় শক্তিশালী দল বিজেপি। তারা তৃণমূলকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে দিতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

তৃণমূল বলছে, বিজেপি যত যা-ই করুক না কেন, তারা (তৃণমূল) তৃতীয়বারের মতো রাজ্যে ক্ষমতায় আসবে। ২০২১ সালের এপ্রিলে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভার ২৯৪টি আসনে নির্বাচন হওয়ার কথা। করোনা আবহের মধ্যে বিজেপি যেভাবে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছে, এতে খুশি নয় রাজ্যের অনেক মানুষ। তারা বলেছে, আগে করোনা থেকে মুক্তি আসুক। তারপর নাহয় বাজুক নির্বাচনী ঢাক।

কিন্তু এমন কথা শুনছে না রাজ্য বিজেপির নেতৃত্ব। তারা নানা ইস্যু নিয়ে রাজনৈতিক ময়দানে নেমে পড়েছে। লক্ষ্য একটাই—তৃণমূলকে ঘায়েল করে একুশের নির্বাচনে জয়ী হওয়া। বিজেপির ইস্যু করোনার চিকিৎসা অব্যবস্থাপনা, চিকিৎসা-বঞ্চনা, তথ্য গোপন ইত্যাদি। সঙ্গে আছে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, ত্রাণ ও রেশনে দুর্নীতি।

গত বুধবার দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়ার মহাশ্মশানঘাটে ১৪টি মৃতদেহ সৎকার নিয়ে অমানবিক আচরণের অভিযোগ ওঠে। বিজেপি বলেছে, ওই ১৪টি মৃতদেহ করোনা রোগীর। তথ্য গোপন করতে মৃতদেহগুলো অ্যাসিডে পুড়িয়ে আনা হয়েছিল, যাতে কেউ তা শনাক্ত করতে না পারে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, রাজ্য সরকার ও কলকাতা করপোরেশন বলে, মৃতদেহগুলো করোনা রোগীর নয়। সেগুলো বেওয়ারিশ মৃতদেহ।

এই ঘটনার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রতিবাদমুখর হন রাজ্যের রাজ্যপাল জগদীপ ধনথড়ও। এরপর এই ইস্যুতে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার জন্য বিজেপি মাঠে নেমে পড়ে। তারা ঘটনার তদন্ত দাবি করে। মৃত ১৪ জনের পরিচয় প্রকাশ করার দাবি তোলে। গতকাল বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা এই ঘটনায় কলকাতা করপোরেশনের মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমের ইস্তফা দাবি করেছেন। পাশাপাশি তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই ঘটনার জন্য রাজ্যবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে বলেছেন।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, ওই মৃতদেহগুলো করোনায় মৃত ব্যক্তিদের। তৃণমূল অন্যায়, অবিচার, দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে। এখন রাজ্যবাসী বিকল্প হিসেবে দেখছে বিজেপিকে। তৃণমূলের পায়ের মাটি সরে যাচ্ছে। 

এসব ঘটনায় তৃণমূলও ছেড়ে দেয়নি বিজেপিকে। পৌরমন্ত্রী ও কলকাতা করপোরেশনের মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘আমরা মানুষকে নিয়ে কাজ করছি। তাদের সুখ-দুঃখে জড়িয়ে আছি। মানুষই আমাদের দেখবে। তারা এর কড়া জবাব বিজেপিকে দেবে।’