যুক্তরাজ্যে করোনায় মৃত্যুঝুঁকি বেশি দক্ষিণ এশীয়দের

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যেসব ব্যক্তি যুক্তরাজ্যের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে মৃত্যুঝুঁকি সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ এশীয়দের। এই ঝুঁকির ‘অন্যতম কারণ’ ডায়াবেটিস। নতুন একটি গবেষণায় এমন তথ্যই উঠে এসেছে।

গবেষণায় বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের ২৬০টি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৩০ হাজার ৬৯৩ জন করোনা রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়। এতে দেখা গেছে, শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে দক্ষিণ এশিয়া থেকে আসা লোকদের করোনায় মৃত্যুঝুঁকি ১৯ শতাংশ বেশি। গবেষণায় যুক্ত বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত দক্ষিণ এশীয় রোগীদের ৪০ শতাংশ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন, যা তাঁদের মৃত্যুঝুঁকি বৃদ্ধির জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর’ হিসেবে কাজ করে।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মে পর্যন্ত ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও ওয়েলসের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হওয়া রোগীদের তথ্য এবং পরবর্তী সময়ে ২২ মে তাঁদের ফলোআপ তথ্য সংগ্রহ করে এই গবেষণা করা হয়। গবেষণাটির কোনো পিয়ার রিভিউ করা হয়নি। চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকীতেও প্রকাশিত হয়নি। গবেষণায় মোট রোগীদের মধ্যে ১ হাজার ৩৮৮ জন (৫ শতাংশ) দক্ষিণ এশীয়, ২৬৬ জন (১ শতাংশ) পূর্ব এশীয়, ১ হাজার ৪ জন (৪ শতাংশ) কৃষ্ণাঙ্গ, ২ হাজার ৩৯৮ জন (৮ শতাংশ) অন্যান্য ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সদস্য এবং ২৫ হাজার ৫৪৭ (৮৩ শতাংশ) জন শ্বেতাঙ্গ ছিলেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে ২৮ শতাংশ বেশি নিবিড় চিকিৎসাসেবা দিতে হয়েছে দক্ষিণ এশীয় লোকদের। শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে দক্ষিণ এশীয়দের মৃত্যুঝুঁকি ১৯ শতাংশ, কৃষ্ণাঙ্গদের ৫ শতাংশ বেশি ছিল। স্কটল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরার গবেষকেরা এই গবেষণা পরিচালনা করেন।

>

গবেষণায় বলা হয়েছে, শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে দক্ষিণ এশীয়দের করোনায় মৃত্যুঝুঁকি ১৯ শতাংশ বেশি

ওয়ার্ল্ডোমিটারসের তথ্যমতে, বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দিক দিয়ে যুক্তরাজ্যের অবস্থান পঞ্চম। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ছাড়িয়ে যায়। আর মৃত্যুর সংখ্যা ৪২ হাজার ২০০র মতো। মৃত্যুর দিক দিয়ে বিশ্ব তালিকায় দেশটির অবস্থান তিনে। তবে গত বেশ কিছুদিন ধরেই দেশটিতে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। এই অবস্থায় গতকাল শুক্রবার যুক্তরাজ্যের সরকার করোনাভাইরাসসংক্রান্ত সতর্কাবস্থার মাত্রা কমিয়ে চার থেকে তিন করেছে। এই মাত্রার অর্থ হলো, নিষেধাজ্ঞা ধারাবাহিকভাবে প্রত্যাহার করে নেওয়া যেতে পারে। তবে ভাইরাসটির সাধারণ মাত্রায় সংক্রমণ অব্যাহত থাকবে। ফলে এখনই বলা যাবে না, ভাইরাস চলে গেছে।

সংক্রমণের সতর্কাবস্থার মাত্রা চার থেকে তিনে নামাকে দেশের জন্য বড় অগ্রগতি হিসেবে অভিহিত করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক। তিনি বলেছেন, করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে এটা ভালো লক্ষণ।