জার্মানিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ আবারও বাড়ছে

প্রতীকী ছবি। ছবি: রয়টার্স
প্রতীকী ছবি। ছবি: রয়টার্স

জার্মানিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার নিম্নমুখী হলেও পুনরায় তা বাড়ছে। তবে এই বৃদ্ধির হার পুরো জার্মানিতে নয়। যেসব এলাকার মানুষ অসেচতন ও অসাবধান সেসব এলাকায় সংক্রমণের হার বেড়েছে।জার্মানির ১৬টি প্রদেশে জুনের প্রথম থেকে ক্রমান্বয়ে লকডাউন তুলে নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু নতুন করে সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় নর্থ রাইন ভেস্ট ফ্যালেন, নিদার সাক্সেন ও বার্লিনে এলাকাভিত্তিক লকডাউন বলবৎ করা হয়েছে।

জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ইতিপূর্বে দেশজুড়ে লকডাউন এত দ্রুত শিথিল করার পক্ষে ছিলেন না।

কিন্তু কিছু রাজ্য সরকার তা না মেনে, দ্রুত লকডাউন তুলে নেওয়ার পক্ষে ছিলেন। দ্রুত লকডাউন তুলে নেওয়ার পক্ষে থাকাদের মধ্যে নর্থ রাইন ভেস্ট ফ্যালেন রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রী আরমিন ল্যাশেট অন্যতম। এখন এই রাজ্যের গুটারসলু অঞ্চলে একটি মাংসজাত দ্রব্যাদি তৈরির প্রতিষ্ঠানে ১ হাজার ৫৫০ জন কর্মচারী ও শহরটিতে বসবাসকারী আরও ২৪ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। টোনিয়াস নামের একটি মাংসজাত দ্রব্যাদি তৈরির প্রতিষ্ঠানে, করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সাবধানতা ও বিধি অগ্রাহ্য করা হয়েছিল। এই প্রতিষ্ঠানে সর্বমোট সাত হাজার মানুষ কর্মরত। গুটারসলু অঞ্চলে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত পুরোপুরি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। ৩ লাখ ৬৫ হাজার মানুষ অধ্যুষিত এই অঞ্চলে লকডাউন পুরোপুরিভাবে মানা হচ্ছে কি না তা নিয়ন্ত্রণ করতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ টহল দিচ্ছে।

নতুন করে লকডাউন ঘোষণা দেওয়ায় আগের বিধিনিষেধগুলো বলবৎ রয়েছে। রাস্তাঘাটে দোকানপাটে সর্বত্র মানুষজনকে দূরত্ব বজায় রেখে চলতে বলা হয়েছে। সুপারমার্কেট, ওষুধের দোকান, স্যানেটারীজ, পেট্রোল পাম্প, ব্যাংক, ডাকঘর ইত্যাদি ছাড়া সব দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়েছে। হোটেল ও রেস্তোঁরাসহ সকল ধর্মের ধর্মীয় উপসনালয়গুলোও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া সমস্ত বার, ক্লাব, থিয়েটার, চিড়িয়াখানা, পাবলিক সুইমিং পুল, শিশুদের খেলার স্থান, খেলার মাঠ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সবাইকে মাস্ক পরতে বলা হয়েছে।

গুটারসলু অঞ্চল ছাড়াও মাগডেবূর্গ, গ্যায়েটিঙ্গেন ও বার্লিনের নয়ে কোলন এলাকায় করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। গ্যায়েটিঙ্গেন শহরে একটি বহুতল ভবনে গত সপ্তাহ থেকে লকডাউন করা হয়েছে। গতকাল ওই ভবনে করোনা আক্রান্ত হয়ে একজন মারা গেছেন।বা্র্লিনের ফ্রীডিশহাইম এলাকার কিছু ভবনে ৪৪ জন ব্যক্তি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে।

জার্মানির সংক্রমণ রোগ বিষয়ের গবেষণা কেন্দ্র রবার্ট কক ইনস্টিটিউটের সভাপতি লোথার ভীলার জার্মানির জনগণকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, সবাইকে করোনাভইরাস সংক্রান্ত আচরণ বিধি মেনে চলতে হবে, তা না হলে দ্বিতীয় দফায় আসা করোনাভাইরাসের সঙ্কট আবারও বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে চলে যেতে পারে। জার্মানিতে এই পর্যন্ত করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৯২ হাজার আর মারা গেছেন ৮ হাজার ৯১৪ জন।