সীমান্ত খুলছে ইইউ, তালিকায় নেই যুক্তরাষ্ট্র

ইউরোপের বাইরের ১৫টি দেশের জন্য নিজেদের সীমান্ত খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। আগামীকাল বুধবার এ সীমান্ত খুলে দেওয়া হতে পারে। তবে এই ১৫ দেশের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র নেই বলে জানিয়েছেন ইইউর দুই কূটনীতিক।

কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সব দেশই সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করে। জোট হিসেবে ইইউও একই কাজ করে। গত মার্চে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার জ্যামিতিক হারে বাড়তে শুরু করলে ইইউ তার সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। তবে এখন অঞ্চলটিতে পরিস্থিতি তুলনামূলক নিয়ন্ত্রণে থাকায় ধীরে ধীরে সীমান্ত খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে জোটটি।

বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ইইউর দুই কূটনীতিকের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ইউরোপের বাইরের ১৫টি দেশের জন্য সীমানা উন্মুক্ত করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি এখনো। জোটভুক্ত ২৭টি দেশ এ বিষয়ে একমত হলেই শুধু এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

প্রাথমিকভাবে যে ১৫টি দেশের জন্য সীমান্ত খুলে দেওয়ার কথা ভাবছে ইইউ, তার মধ্যে রয়েছে চীন। তালিকায় এ ছাড়া রয়েছে আলজেরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জর্জিয়া, জাপান, মন্টেনেগ্রো, মরক্কো, নিউজিল্যান্ড, রুয়ান্ডা, সার্বিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, তিউনিসিয়া ও উরুগুয়ে। করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের জন্য সীমান্ত উন্মুক্ত করার কথা ভাবলেও যুক্তরাষ্ট্রকে প্রাথমিক এ তালিকায় রাখেনি ইইউ। তবে চীনের জন্য ইইউ দরজা খুলতে তখনই সম্মত হবে, যদি চীনও অনুরূপভাবে ইইউভুক্ত দেশগুলোর জন্য দরজা খুলে দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রে এখনো করোনাভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে আসেনি। উপরন্তু দেশটির কিছু কিছু এলাকায় নতুন করে এর বিস্তার বেড়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সীমান্ত খোলার কথা নয় ইইউর। তবে এ ক্ষেত্রে অনেকে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ইউরোপের সঙ্গে একতরফাভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত বন্ধের ঘটনাকেও মিলিয়ে দেখছেন।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইইউ সীমান্ত খোলার ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। যেসব দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার ইইউভুক্ত দেশগুলোর সমান বা তার চেয়ে কম, সেসব দেশের জন্যই আপাতত সীমানা খুলতে চাইছে জোটটি। সীমান্ত-বিষয়ক সিদ্ধান্ত প্রতিটি দেশের নিজস্ব বিষয় হলেও এ ক্ষেত্রে ইইউ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেবে। আর এ ক্ষেত্রে অন্তত ১৫টি দেশকে সীমান্ত খোলার বিষয়ে সম্মত হতে হবে।

বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ইইউর দুই কূটনীতিক জানান, সীমান্ত খোলার বিষয়ে ইইউর এই কাঠামো খুব দ্রুতই বদলাবে, এমন কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে প্রতি দু সপ্তাহ পর পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে তালিকা অদল-বদল করা হবে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত হতে হলে দেশটিতে সংক্রমণ হারে ব্যাপক অবনমন হতে হবে।

অবশ্য এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তাকে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচনা করা হবে বলে ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিল ওয়াশিংটন। এ বিষয়ে ইইউর এক কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিএনএনকে বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক কোনো প্রভাব কাজ করছে না। পুরো বিষয়টিই বিজ্ঞানের ভিত্তিতে নেওয়া হচ্ছে, যাতে অঞ্চলটির অধিবাসীরা নিরাপদ থাকে। এটি পুরোপুরি স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যাপার।’