নতুন বিশ্বব্যবস্থা গড়ছেন পুতিন ও সি চিন পিং

ভ্লাদিমির পুতিন ও সি চিন পিং
ভ্লাদিমির পুতিন ও সি চিন পিং

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট  সি চিন পিং সারা জীবনের জন্য ক্ষমতার পথ পাকাপোক্ত করেছেন। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চোখের সামনে তাঁরা আগামী বিশ্বব্যবস্থা কার্যকরভাবে পুনর্নির্মাণ করেছেন। এটা তাঁরা দুজন একসঙ্গে করেননি। ট্রাম্পের সৃষ্টি করা অনিশ্চয়তা আর অপরিণামদর্শিতা উভয়ই তাঁদের সেই কাজে সহায়তা করেছে। সিএনএনের বিশ্লেষণে এ কথা বলা হয়।

আগামী মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নতুন কেউ নির্বাচিত হলেও তিনি বিশ্বকে আগের অবস্থায় নিতে সক্ষম হবেন, এমন আশা এখন অনেকটাই ধোঁয়াশা। কারণ, পুতিন ও সি নিজেদের দেশের ক্ষমতা পুরোপুরিভাবে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিশ্বের বুকে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন। তাঁরা দৃঢ়তার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। অন্যদিকে ট্রাম্পের বিশ্বে অমোচনীয় কালি লেপে দিচ্ছেন, যা হয়তো মুছে যাওয়ার নয়। পুতিন ও সির ক্ষমতা কুক্ষিগত করা কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয়। এটা তাঁদের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন।

গত সপ্তাহে রাশিয়ার সংবিধান সংশোধনের ওপর তথাকথিত গণভোটের মাধ্যমে সারা জীবনের জন্য ক্ষমতায় থাকা নিশ্চিত হয় পুতিনের। একই সময়েই অমানবিক উপায়ে হংকংয়ের নিয়ন্ত্রণ নিতে নতুন নিরাপত্তা আইন কার্যকর করেন সি। রাশিয়া ও চীন উভয় দেশ যে প্রভাব-প্রতিপত্তি গড়ে তুলেছে, তাতে মনে হচ্ছে, এটা প্রতিহত করার দৃঢ়তা যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমানে নেই, আগামী দিনেও থাকবে না।

রাশিয়ায় পুতিনের ক্ষমতা নিয়ে চলতি সপ্তাহে ওয়াশিংটন পোস্ট-এ একটি নিবন্ধ লিখেছেন ডেভিড ইগনাটিয়াস। সেখানে তিনি লিখেছেন, পুতিন বিশ্বাস করেন, তাঁর সাবেক দেশ সোভিয়েত ইউনিয়নকে ধ্বংস করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সেই জন্য যুক্তরাষ্ট্রকেও তিনি ভোগাতে চান।

যদিও বিশ্বপরিমণ্ডলে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষায় ট্রাম্পকে বিশ্বসেরা আলোচক তকমা দিয়ে থাকে হোয়াইট হাউস। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, তাঁদের কাছে মনে হয়েছে, ট্রাম্প তাঁর পরিকল্পনা অন্য নেতাদের দিয়ে বাস্তবায়ন করার বিষয়েও তাঁর সক্ষমতা নিয়ে সন্দিহান। ফলে ট্রাম্পকে নিয়ে শুধু খেলেছেন পুতিন। কর্তৃত্ববাদী শাসক পুতিনের প্রতি ট্রাম্পের তোষামোদি আচরণ, তাঁর ইতিহাস-অজ্ঞতা ও প্রস্তুতির ঘাটতির কারণে যুক্তরাষ্ট্র শুধু ক্ষমতাই হারায়নি, জাতীয় নিরাপত্তাকেও ঝুঁকিতে ফেলেছে।

ট্রাম্পের সঙ্গে সির অভিজ্ঞতা আবার ভিন্ন। বাণিজ্য নিয়ে দুজনের বিরোধ। চীনা বাণিজ্য সীমিত করে বেইজিংকে কোণঠাসা করার চিন্তা ট্রাম্পের। এ জন্য তিনি নানা তৎপরতাও চালান। ট্রাম্প প্রশাসন চীনের প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের ফাইভ-জি প্রযুক্তি না নিতে মিত্রদেশগুলোকে বারণ করে। কিন্তু চীনের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেনি তারা। ফলে মিত্রদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে ফাটল ধরেছে। বিশ্বব্যবস্থায় চীনের প্রভাব যে বেড়েছে, তা আরেকবার প্রমাণিত হলো।