সৌরভের রাজনীতিতে আসার ইঙ্গিত দিলেন স্ত্রী ডোনা?

সৌরভ গাঙ্গুলী ও ডোনা গাঙ্গুলী। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
সৌরভ গাঙ্গুলী ও ডোনা গাঙ্গুলী। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

সৌরভ গাঙ্গুলীর রাজনীতিতে যোগদান নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে জল্পনা বাড়ছে। এই জল্পনাকে গতকাল বুধবার উসকে দিয়েছেন সৌরভের সহধর্মিণী ডোনা গাঙ্গুলী।

গতকাল ছিল সৌরভের ৪৮ তম জন্মদিন। এদিনই ডোনা সংবাদমাধ্যমকে বললেন, 'এখনো জানি না সৌরভ রাজনীতিতে যোগদান করবেন কি না। তবে এটুকু বলতে পারি, সৌরভ রাজনীতিতে যোগ দিলে টপেই থাকবেন।'

ডোনার এই মন্তব্যের পর সৌরভের রাজনীতিতে যোগদান নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়। পশ্চিমবঙ্গের সবারই প্রশ্ন, তবে কি সত্যি সত্যি সৌরভ এবার রাজনীতির আঙিনায় পা রাখতে চলেছেন?

সৌরভ যদি রাজনীতিতে নাম লেখান, তবে তিনি কোন দলে যোগ দেবেন, সে প্রশ্নটি এখন ঘুরপাক খাচ্ছে।

তবে সৌরভ রাজনীতিতে যোগদান নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেননি। কিন্তু তাঁর হাবভাব আভাস দিচ্ছে, তিনি হয়তো রাজনীতিতে পা রাখতে চলছেন।

আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য বিধানসভার ২৯৪ আসনের নির্বাচন হওয়ার কথা। এই নির্বাচনে শাসক দল তৃণমূলের সঙ্গে প্রধান বিরোধী দল বিজেপির জোর লড়াই হবে। তৃণমূল সেই নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রীর পদে তৃতীয়বারের জন্য মুখ করবে মমতাকেই। তবে বিজেপি এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি তাঁদের মুখ্যমন্ত্রী পদের কে মুখ হবেন নির্বাচনী প্রচারে? 

বিজেপি কি সৌরভকে মুখ্যমন্ত্রীর প্রচারের মুখ করবে? সেই প্রশ্নটিই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে। তার অন্যতম কারণ বিজেপির সঙ্গে সৌরভের সখ্য।
সৌরভের মধুর সম্পর্ক রয়েছে মমতার সঙ্গেও। কদিন আগে মমতার সঙ্গে সৌরভ দেখাও করেছিলেন। ওই সাক্ষাতের পর অনেকেই মনে করেছিলেন, সৌরভ কি তবে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন? সৌরভ অবশ্য এই সাক্ষাতের পর জানিয়েছিলেন, সেই সাক্ষাৎ ছিল নেহাত সৌজন্যমূলক।
সৌরভ সত্যিই রাজনীতিতে নামবেন কি না, নামলে বিজেপি না তৃণমূলে যোগ দেবেন, সেটি এখনো তিনি স্পষ্ট করেননি। তবে তাঁর স্ত্রী ডোনার কথায় মনে হচ্ছে, তিনি রাজনীতি করলে এমন দলে যোগ দেবেন, যেখানে থাকবেন টপে।
ক্রিকেটের ময়দানে অধিনায়ক হিসেবে টপে ছিলেন সৌরভ। ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল বা সিএবির সভাপতি হিসেবেও টপে ছিলেন। এখন তিনি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বা বিসিসিআইয়ের সভাপতি হিসেবে রয়েছেন টপে। তাই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন, যা মনে যাচ্ছে, তাতে সৌরভের বিজেপিতে যোগদানের পাল্লাই ভারী।
২০১৪ সালে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকেই সৌরভের রাজনীতিতে যোগদান নিয়ে জল্পনা চলছে। ওই সময় বিজেপি সৌরভকে প্রস্তাব দিয়েছিল তাঁকে গুজরাটের একটি আসন থেকে জিতিয়ে এনে ভারতের কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী করবে। এ নিয়ে বিজেপি নেতা বরুণ গান্ধীর সঙ্গে কথাও হয়েছিল সৌরভের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিজেপির প্রস্তাবে সায় দেননি সৌরভ।
এরপর সৌরভ সিএবির সভাপতি থেকে বিসিসিআইয়ের সভাপতির পদে বসেছেন। বিসিসিআইয়ের সভাপতির পদে বসার আগে থেকেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর পুত্র জয় শাহর সঙ্গে সৌরভের সুসম্পর্ক। সেই সুবাদে অমিত শাহর সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
তা ছাড়া ভারতের বর্তমান অর্থ প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের সঙ্গেও সৌরভের রয়েছে অত্যন্ত সুসম্পর্ক। রাজনৈতিক মহলের খবর, অনুরাগ ঠাকুর ও অমিত শাহের ইচ্ছাতেই সৌরভ হন বিসিসিআইয়ের সভাপতি। এই ঘটনার পর থেকে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়, সৌরভের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে। যদিও বারবার বিজেপিতে যোগদানের প্রশ্নটি এড়িয়ে যান সৌরভ।
সৌরভ এবার আম্পানের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সাহায্যের জন্য ত্রাণ নিয়ে এগিয়ে আসেন। রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলেন। সাক্ষাৎ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গেও। এসব ঘটনার পর রাজনীতিতে তাঁর যোগদানের বিষয়টি আরও জোরদার হয়। তবে তিনি রাজনীতিতে যোগদান করলে কোন দলের হয়ে ব্যাট করবেন, তা এখনো অস্পস্ট। তবে আপাতত একটা সংকেত মিলেছে তাঁর স্ত্রী ডোনা গাঙ্গুলীর কথায়।