পশ্চিমবঙ্গে দ্বিতীয় দিনের লকডাউন চলছে

আজ সকালে লকডাউনে কলকাতার হাওড়া সেতু। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
আজ সকালে লকডাউনে কলকাতার হাওড়া সেতু। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

পশ্চিমবঙ্গজুড়ে আজ শনিবার সাপ্তাহিক লকডাউনের দ্বিতীয় দিন শুরু হয়েছে। সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া লকডাউন রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে। এ সময় বন্ধ থাকছে যানবাহন, হাটবাজার, অফিস–আদালত, ব্যাংক ও বিমান পরিষেবা। আজ কলকাতা বিমানবন্দর থেকে চলছে না কোনো উড়োজাহাজ। আর যাত্রীবাহী সাধারণ ট্রেন ও মেট্রোরেল দীর্ঘদিন ধরেই বন্ধ রয়েছে। তবে ছাড় দেওয়া হয়েছে অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবায়।

পশ্চিমবঙ্গে করোনার লম্বা দৌড় এখনো থামাতে না পেরে পশ্চিমবঙ্গ সরকার আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে এই রাজ্যে দুদিন করে পুরো লকডাউন করার ঘোষণা দিয়েছে। এ লক্ষ্যে এ সপ্তাহের প্রথম দিনের লকডাউন করা হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। আজ হচ্ছে এ সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনের কড়া লকডাউন। পরবর্তী সপ্তাহের লকডাউন চলবে বুধবার এবং অন্য দিনের তারিখ রাজ্য সরকার ঘোষণা করবে আগামী সোমবার।

বৃহস্পতিবার সপ্তাহের প্রথম দিনের লকডাউনে পুলিশ রাস্তায় নেমে কড়া হাতে সফল করেছিল। ওই দিনের মতো আজ কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় লকডাউনের ওপর নজর রাখছে ড্রোন উড়িয়ে।

বৃহস্পতিবার লকডাউনের সময় মাস্ক না পরার জন্য পুলিশ ৬৬৫ জনকে ধরেছিল কলকাতায়। আবার ১২৮ জনকে থুতু ফেলার জন্য গ্রেপ্তার করেছিল। ১ হাজার ২৭৩টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছিল পুলিশ। ওই দিন লকডাউন অমান্য করার জন্য ২৮৭ জনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছিল। ৪০টি গাড়ি জব্দ করেছিল পুলিশ।

করোনার সংক্রমণের আতঙ্কে কলকাতাসহ রাজ্যের মানুষ এখনো আতঙ্কিত। থামছে না সংক্রমণ।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে করোনায় সংক্রমিত হয়েছে ২ হাজার ২১৬ জন। মারা গেছেন ৩৫ জন। এই নিয়ে এ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে করোনায় সংক্রমিত হলেন ৫৩ হাজার ৯৭৬ জন। মারা গেলেন ১ হাজার ২৯০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় এই রাজ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ হাজার ৮৭৩ জন। সব মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৩৩ হাজার ৫২৯ জন। এখন সুস্থতার হার ৬২ দশমিক ১২ শতাংশ।

একেবারে জনশূন্য কলকাতার মা উড়াল সেতু। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি।
একেবারে জনশূন্য কলকাতার মা উড়াল সেতু। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি।

লকডাউন সফল করতে শুক্রবার থেকেই রাজ্যের সর্বত্র পুলিশ মাইক নিয়ে প্রতিটি বাজার ও আবাসিক এলাকায় ঢুকে লকডাউন পালনের আহ্বান জানিয়েছে। আজও বলা হয়েছে, লকডাউন অমান্য করলে যথাযথ শাস্তি দেওয়া হবে।

কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গড়া হয়েছে করোনার প্লাজমা ব্যাংক। রাজ্য সরকার করোনা থেকে মুক্ত ব্যক্তিদের এই প্লাজমা ব্যাংকে প্লাজমা দান করার আহ্বান জানিয়েছে। বলা হয়েছে, যেসব ব্যক্তি করোনা জয় করে কম করে ২৮ দিন ধরে সুস্থ রয়েছেন এবং যাঁদের বয়স ১৮ থেকে ৫৫ বছর ও ওজন কম করে ৫৫ কেজি, সেসব ব্যক্তি অন্যদের চিকিৎসার জন্য দান করতে পারবেন তাঁদের প্লাজমা।

একইভাবে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের নিয়ে রাজ্য সরকার প্রতিটি জেলায় গড়েছে ‘কোভিডযোদ্ধা ক্লাব’।

ইতিমধ্যে মুর্শিদাবাদের কোভিডযোদ্ধা ক্লাবের সদস্যরা কলকাতায় করোনা প্রতিরোধ যুদ্ধে যোগ দিয়েছেন। এই যোদ্ধাদের প্রতিদিন ৫০০ রুপি করে মাসে ১৫ হাজার রুপি সম্মানী দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।