যুক্তরাষ্ট্র-চীন উত্তেজনা কেন

গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে হিউস্টনে চীনের একটি কনস্যুলেট বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে চীনও চেংদুতে একটি মার্কিন কনস্যুলেট বন্ধ করেছে। কিছুদিন ধরে ক্রমাগতভাবে নিম্নমুখী হওয়া সম্পর্কে সবশেষ আঘাত দুই দেশের এই পাল্টাপাল্টি কনস্যুলেট বন্ধের ঘটনা। বিশ্বের দুই শীর্ষ অর্থনীতির দেশের মধ্যে এই বৈরিতার উদ্দেশ্য ও সম্ভাব্য পরিণতি খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন বিবিসির বারবারা প্লেট উশার।

বিদেশি মিশন বন্ধ করা অপ্রত্যাশিত কোনো ঘটনা নয়। তবে এটা বিরল ও নাটকীয় পদক্ষেপ, যা থেকে ফিরে আসা কঠিন। কয়েক মাস ধরে পাল্টাপাল্টি ভিসা নিষেধাজ্ঞা, কূটনীতিকদের ভ্রমণে নতুন নিয়ম, বিদেশি সংবাদদাতা বহিষ্কারের কারণে দুই দেশের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে ধারাবাহিক বিবাদে সর্বশেষ কঠিন পদক্ষেপ নিতে দেখা গেল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনকে।

বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে এই কঠোর ও জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার আভাস পাওয়া যায় চলতি মাসের প্রথম দিকে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোর (এফবিআই) পরিচালক ক্রিস্টোফার ওরেইয়ের বক্তব্যে। তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের জন্য হুমকি চীন এক দশক ধরে গোয়েন্দা তৎপরতা ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে। এটা রুখতে তাঁরাও তদন্তের গতি বাড়িয়েছে, যদিও চীন এটাকে ‘বিদ্বেষপ্রসূত অপবাদ’ হিসেবে নাকচ করে দেয়।

>

আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিততে রাজনীতিতে বিভেদ সৃষ্টি করতে ট্রাম্পের কৌশল হতে পারে
চীনের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে চান না ট্রাম্প
বেইজিংও চায় না যুদ্ধ

চীনের বিরুদ্ধে হঠাৎ ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের বিষয়ে অনেক বিশেষজ্ঞ সংশয় প্রকাশ করেছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পূর্বসূরি বারাক ওবামার সরকারের পররাষ্ট্র দপ্তরের এশিয়াবিষয়ক শীর্ষ কূটনীতিক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ড্যানি রাসেলের মতে, নভেম্বরে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে মার্কিন রাজনীতিতে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যের অংশ হিসেবে এটা করা হতে পারে।

তবে রাসেলের বক্তব্যে ‘হ্যাঁ’ ও ‘না’—দুই ধরনের উত্তর আসতে পারে। হ্যাঁ আসতে পারে, কারণ, ভোটারদের নিজের পক্ষে ভেড়াতে ট্রাম্প সম্প্রতি চীনবিরোধী কৌশলগত অবস্থান নিয়েছেন। ২০১৬ সালের নির্বাচনে চীন যুক্তরাষ্ট্রকে ক্ষতি করছে, এমন তথ্য প্রচার করেন ট্রাম্প। এবারের নির্বাচনেও সেই কৌশল প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় রয়েছেন তিনি। এ ছাড়া নিজ দেশে করোনা মহামারি ঠেকাতে একেবারে ব্যর্থ ট্রাম্প ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার জন্য দোষ চীনের ঘাড়ে চাপাতে চাইছেন। তবে বড় কোনো সংঘাত বা সামরিক পদক্ষেপ জড়াতে চান না ট্রাম্প। চীনও চায় না কোনো যুদ্ধ।