পশ্চিমবঙ্গে করোনায় সংক্রমণ বাড়ছে, মৃত্যুর রেকর্ড

দুটি সরকারি হাসপাতাল, ছয়টি বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরেও ৩৬ বছরের নারী জোগাড় করতে পারেননি করোনা চিকিৎসার এটি শয্যা। রাত আটটা থেকে শুরু হয় ওই নারীর করোনা হাসপাতালে একটি শয্যার জন্য অভিযান। অবশেষে ভোররাত চারটার দিকে অ্যাম্বুলেন্সেই চিরদিনের মতো ঘুমিয়ে পড়েন ওই নারী। এ চিত্র এখন কলকাতাসহ রাজ্যের বহু স্থানে। কোভিড হাসপাতালে শয্যা নেই।

এ বছরের ১৭ মার্চ প্রথম করোনা ধরা পড়ে কলকাতায়। সেই থেকে করোনার বিরুদ্ধে একটানা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ, চিকিৎসক, নার্স এবং রাজ্য সরকার। কিন্তু কিছুতেই বাগিয়ে আনতে পারছে না করোনাকে।

গত সোমবার এই রাজ্যে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৩৯, মঙ্গলবার ৩৮ জন, বুধবার ৪১ জন আর গতকাল বৃহস্পতিবার সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৬। একই সঙ্গে সোমবার এই রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ১১২, মঙ্গলবার ২ হাজার ১৩৪, বুধবার ২ হাজার ২৯৪ আর গতকাল সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৪৩৪। সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হলেও এই রাজ্যে এখন সুস্থতার হারও ঊর্ধ্বমুখী।

গতকাল রাজ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তরফে বলা হয়েছে, এই রাজ্যে গতকাল সুস্থতার হার ছিল ৬৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। গতকাল সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ১৪০ জন। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত এই রাজ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪৬ হাজার ২৫৬ জন।

এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে গত সাড়ে চার মাসে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৫৩৬ জনের। আক্রান্ত হয়েছে ৬৭ হাজার ৬৯২ জন। কলকাতায় গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছে ৭৫০ জন, মারা গেছে ১৬ জন। কলকাতার পাশের উত্তর ২৪ পরগনায় আক্রান্ত হয়েছে ৫৭০ জন, মারা গেছে ১৩ জন। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আক্রান্ত হয়েছে ১৩৭ জন। মারা গেছে অবশ্য ২ জন। হাওড়ায় আক্রান্ত হয়েছে ২৬০ জন। মারা গেছে ৯ জন।

৬টি শহরের সঙ্গে কলকাতার বিমান পরিষেবা ফের বন্ধ
এদিকে কাল ১ আগস্ট থেকে ভারতব্যাপী শুরু হচ্ছে করোনা প্রতিরোধে আনলক-৩। আনলক-২–তেই কলকাতার সঙ্গে ভারতের করোনা সংক্রমিত ছয়টি শহরের সঙ্গে বিমান পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তার মেয়াদ আজ ৩১ জুলাই শেষ হচ্ছে। তাই রাজ্য সরকার আবেদনে ফের আগামী ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ভারতের ছয়টি শহরের সঙ্গে কলকাতার বিমান পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই ছয়টি শহর হলো: দিল্লি, মুম্বাই, পুনে, চেন্নাই, নাগপুর ও আহমেদাবাদ।

র‍্যাপিড টেস্টে ৫০ জনের মধ্যে ১০ জনের করোনা পজিটিভ
এদিকে গতকাল থেকে শুরু হওয়া করোনার র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের প্রথম দিনে দক্ষিণ কলকাতার চেতলা কেন্দ্রে যোগ দেওয়া ৫০ জনের নমুনা পরীক্ষার মধ্যে ১০ জনের পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া গেছে। কলকাতায় এই র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট কর্মসূচির উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের পৌরমন্ত্রী এবং কলকাতার সাবেক মেয়র ও বর্তমান মুখ্য পৌর প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। এই টেস্টে ৩০ মিনিটের মধ্যে ফল পাওয়া যাচ্ছে। একসঙ্গে একটি স্ট্রিপে ১০ জনের পরীক্ষা হচ্ছে। রিপোর্টও আসছে আলাদাভাবে ১০ জনের।