অযোধ্যায় রামমন্দিরের অনুষ্ঠান মোদিময়, ব্রাত্য আদভানি, যোশীরা

নরেন্দ্র মোদি
নরেন্দ্র মোদি

ভারতের অযোধ্যায় আগামীকাল বুধবার রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। হবে ভূমিপূজা। তবে রামমন্দির নিয়ে আন্দোলনের পুরোনো যোদ্ধাদের এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে খবর রটেছে। বলা হচ্ছে, বিজেপির প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আদভানি ও মুরলী মনোহর যোশী নাকি অনুষ্ঠানে যোগদানের আমন্ত্রণ পাননি। এ নিয়ে ভারতের রাজনীতিতে শুরু হয়েছে নতুন আলোচনা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী মোদি আগামীকাল অযোধ্যায় যাবেন। সেখানে প্রায় তিন ঘণ্টা থাকবেন তিনি। রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও ভূমিপুজায় অংশ নেবেন তিনি। ধারণা করা হয়েছিল, রামমন্দির স্থাপনের আন্দোলনের পুরোনো নেতা লালকৃষ্ণ আদভানি ও মুরলী মনোহর যোশীকেও এই অনুষ্ঠানে সশরীর উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে। কিন্তু ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, এখন পর্যন্ত নাকি এই দুই বর্ষীয়ান নেতার কেউই আমন্ত্রণ পাননি। বলা হচ্ছিল, সশরীর না হলেও অন্তত ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হলেও অনুষ্ঠানে থাকবেন দুই নেতা। কিন্তু এ দুই নেতার ঘনিষ্ঠরা বলছেন, সে ব্যাপারেও কোনো কিছু নিশ্চিত হয়নি। কারণ আমন্ত্রণই যে আসেনি!

সাংগঠনিক হিসাবে বিজেপির ‘গুরু’ রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)। ভারতবর্ষ ভাগের পর এই চরম সাম্প্রদায়িক সংগঠনটিই ‘জনসংঘ’ নামে জাতীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে পা রাখে। জনসংঘই কালের পরিক্রমায় হয়েছে বিজেপি।

১৯৮৪ সালের পর বিজেপির অন্যতম রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা আসলে ছিল অযোধ্যার বাবরি মসজিদের স্থানে রামমন্দির নির্মাণ। এই অ্যাজেন্ডা সামনে রেখেই ফের উত্থান হয় বিজেপির। এরপর ধর্ম ও বিভক্তিকে মূল সূত্র মেনেই ১৯৯১ সালের নির্বাচনে শতাধিক আসনে জিতেছিল লালকৃষ্ণ আদভানির বিজেপি। এরপরই ঘটে বাবরি মসজিদ ভাঙার ঘটনা।

রামমন্দিরকে ঘিরে তৈরি বিজেপির মূল অ্যাজেন্ডার প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন লালকৃষ্ণ আদভানি। ১৯৯০–এর দশকে রথযাত্রা বের করে মন্দির ইস্যুকে আলোচনার কেন্দ্রে এনেছিলেন আদভানি। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদের কাঠামো ধ্বংসের অনুষ্ঠানে প্রধান ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। এখনো তাঁর বিরুদ্ধে বাবরি মসজিদ ধ্বংসে মদদ দেওয়ার মামলা চলছে। চলছে মুরলী মনোহর যোশীর বিরুদ্ধেও।
অথচ সেই আদভানি ও যোশীকেই ভুলে গেল মোদির বিজেপি। নিন্দুকেরা বলছেন, বিজেপিসহ পুরো ভারতে মোদি হতে চান একমেবাদ্বিতীয়ম। প্রচারের আলো আর কারও ওপর থাকুক, তা তিনি চান না। আর তাই আদভানির মতো বর্ষীয়ান নেতাদেরও ভুলে থাকতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদি।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, দিল্লি থেকে বিশেষ ফ্লাইটে করে বুধবার সকালে অযোধ্যার উদ্দেশে রওনা দেবেন মোদি। অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চে মোদির সঙ্গে থাকবেন আরও চার ব্যক্তি। বলা হচ্ছে, রুপার তৈরি একটি ৪০ কেজি ওজনের ইট পুঁতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। দেশজুড়ে নতুন করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যেই এমন জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।