বৈরুতের বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা শতাধিক

মঙ্গলবার বৈরুতের বন্দর এলাকায় প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটে। ছবি: এএফপি
মঙ্গলবার বৈরুতের বন্দর এলাকায় প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটে। ছবি: এএফপি

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ব্যক্তির সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেছে। আহত চার সহস্রাধিক। আজ বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

গতকাল মঙ্গলবার বৈরুতের বন্দর এলাকায় প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের শব্দতরঙ্গের আঘাতে পুরো বৈরুত কেঁপে ওঠে। রাজধানীর বড় একটি অংশের বিভিন্ন ভবনের জানালা-দরজার কাচ ভেঙে যায়। অনেক ভবনের ব্যালকনি ধসে পড়ে।

সকালে রেডক্রসের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিস্ফোরণে ১০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। নিহত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিস্ফোরণে হতাহত ব্যক্তিদের খোঁজে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা।

আহত ব্যক্তিতে বৈরুতের হাসপাতালগুলো এখন ঠাসা। সেখানে সৃষ্টি হয়েছে হৃদয়বিদারক দৃশ্য। আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

বিস্ফোরণে হতাহত হওয়ার ঘটনায় লেবানন আজ থেকে তিন দিনের জাতীয় শোক পালন করছে।

বিস্ফোরক–জাতীয় রাসায়নিক পদার্থের গুদামে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানাচ্ছেন দেশটির কর্মকর্তারা।

লেবাননের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এনএনএ বলছে, বৈরুতের বন্দর এলাকার যেখানে বিস্ফোরণ ঘটেছে, সেখানে বিস্ফোরক পদার্থ সংরক্ষণের অনেক গুদাম রয়েছে।

লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন বলেন, ছয় বছর ধরে একটি গুদামে ২ হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট অনিরাপদভাবে মজুত রাখা হয়েছিল। এটা অগ্রহণযোগ্য।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আজ দেশটির মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকেছেন প্রেসিডেন্ট মিশেল। তিনি জানিয়েছেন, দেশে দুই সপ্তাহের জরুরি অবস্থা জারি করা হবে। জরুরি অর্থ সহায়তাও ঘোষণা করেছে সরকার।

দেশটির কর্মকর্তারা গতকালই জানিয়েছেন, ঠিক কী কারণে বিস্ফোরণ ঘটল, তা খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে।

লেবাননের সুপ্রিম ডিফেন্স কাউন্সিল বলেছে, যিনি বা যাঁরা এই বিস্ফোরণের জন্য দায়ী হবেন, তাঁরা সর্বোচ্চ শাস্তি পাবেন।

এক প্রত্যক্ষদর্শী রয়টার্সকে বলেন, ‘বৈরুতের ওপর আমি একটি আগুনের গোলা আর ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে পেলাম। এরপর রক্তাক্ত মানুষকে চিৎকার করতে করতে ছুটতে দেখলাম।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণস্থল ও তার আশপাশের এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এমন দৃশ্য তাঁরা আগে দেখেননি।