ভারতে করোনা শনাক্ত রোগী ২০ লাখ ছাড়াল, মৃত সাড়ে ৪১ হাজার

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের সংখ্যা ২০ লাখ পেরিয়ে গেল। চব্বিশ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হলেন ৬২ হাজারের বেশি মানুষ। এক দিনে এত শনাক্তের ঘটনা আগে ঘটেনি। দেশটিতে করোনায় এ পর্যন্ত মারা গেছেন মোট ৪১ হাজার ৫৮৫ জন। শেষ ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৮৮৬ জনের।

গত কয়েক দিন সংক্রমণের হার কিছুটা কম ছিল। কিন্তু শুক্রবার এক ধাক্কায় সংক্রমিত হন ৬২ হাজার ৫৩২ জন। এর ফলে মোট সংক্রমণের সংখ্যা দাঁড়াল ২০ লাখ ২৭ হাজার ৭৪। গত জুলাই মাসের ১৬ তারিখে সংক্রমণের সংখ্যা ১০ লাখ ছুঁয়েছিল। কুড়ি দিনের মাথায় তা দ্বিগুণ হয়ে গেল। ফলে সরকারের স্বস্তি উধাও। বাড়িয়েছে দুশ্চিন্তা।

সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ১৭ জুলাই টুইট করেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। মোট সংক্রমণ ১০ লাখ পেরিয়ে যাওয়ায় তিনি বলেছিলেন, এই হারে চললে ১০ আগস্টের মধ্যেই সংক্রমণের সংখ্যা ২০ লাখ হয়ে যাবে। তিন দিন আগেই সেই সংখ্যা ছুঁয়ে ফেলায় শুক্রবার রাহুল টুইট করে বলেন, ২০ লাখ পার, কোথায় মোদি সরকার?

এই হারে বৃদ্ধি ঘটতে থাকলে ব্রাজিলকে হারিয়ে সংক্রমণের ক্ষেত্রে ভারতের দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসতে বেশি দেরি হবে না। ব্রাজিলে মোট আক্রান্ত ২৯ লাখ ১২ হাজার। এক নম্বর স্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, আক্রান্ত ৪৮ লাখ ৮২ হাজার।

স্বস্তি কেড়েছে সংক্রমণের হারও, ইংরেজিতে যা ‘পজিটিভিটি রেট’। মোট নমুনা পরীক্ষা ও আক্রান্তের সংখ্যার হিসেবেই ‘পজিটিভিটি রেট’। গত কিছুদিন ধরে এই হার দশ শতাংশের কম ছিল। কিন্তু শুক্রবার তা দাঁড়ায় ১০ দশমিক ৮৮ শতাংশ। গত চব্বিশ ঘণ্টায় সারা দেশে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে পৌনে ৬ লাখ। গত তিন দিনের তুলনায় যা কম। অথচ সংক্রমণ বেড়ে গেল। অবশ্য স্বস্তির কথা সেরে ওঠা মানুষের হিসেবে। এখনো পর্যন্ত ১৩ লাখ ৭৮ হাজার ১০৫ জন করোনাক্রান্ত সুস্থ হয়েছেন। সুস্থতার হারও বাড়ছে। শতকরা সুস্থ হচ্ছেন ৬৮ শতাংশ।

ভারতে সংক্রমণের শীর্ষে শুরু থেকেই রয়েছে মহারাষ্ট্র। সেখানে এখনো পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৭৭৯ জন। দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে তামিলনাড়ু (২ লাখ ৭৯ হাজার ১৪৬)। তৃতীয় অন্ধ্র প্রদেশ (১ লাখ ৯৬ হাজার ৭৮৯)। চতুর্থ কর্ণাটক (১ লাখ ৫৮ হাজার ২৫৪)। জুলাই মাসের গোড়ার দিকে দিল্লিতে সংক্রমণ লাগামছাড়া হয়ে গিয়েছিল। মহারাষ্ট্রের পরেই ছিল রাজধানী-রাজ্যের স্থান। গত দুই সপ্তাহে দিল্লির সংক্রমণ কমেছে উল্লেখযোগ্যভাবে। এই রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৪১ হাজার ৫৩১ জন।

দক্ষিণের রাজ্যগুলোর মধ্যে কেরলে সংক্রমণ অনেক কম। তুলনায় লাগামছাড়া তামিলনাড়ু, অন্ধ্র প্রদেশ ও কর্ণাটক। পশ্চিমবঙ্গ নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে। আর বাড়ছে উত্তর প্রদেশ নিয়ে। মৃত্যুর হারও সবচেয়ে বেশি মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, অন্ধ্র প্রদেশ ও উত্তর প্রদেশে। সর্বশেষ দেওয়া তথ্যমতে, গত চব্বিশ ঘণ্টায় দেশে যে ৮৮৬ জন মারা যান, তাঁদের মধ্যে এই পাঁচ রাজ্যেই মারা গেছেন ৬৫২ জন।